ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ১১ মে ২০২৪, ২৭ বৈশাখ ১৪৩১

নারীর ফিটোপেলভিক ডিসপ্রপোরশন প্রবণতা বাড়ছে

সিজারিয়ান পদ্ধতি নিয়ে চিকিৎসকদের উদ্বেগ

প্রকাশিত: ০৩:৫৮, ৭ ডিসেম্বর ২০১৬

সিজারিয়ান পদ্ধতি নিয়ে চিকিৎসকদের উদ্বেগ

নারীর সিজারিয়ান পদ্ধতিতে সন্তান জন্মদানের ফলে মানব বিকাশ ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে বলে বিজ্ঞানীরা মত প্রকাশ করেছেন। সম্প্রতি প্রকাশিত এক সমীক্ষায় দেখা গেছে, সিজারিয়ানের মাধ্যমে সন্তান দিতে দিতে মেয়েদের কটিদেশ এখন স্বাভাবিকের চেয়ে সরু হয়ে যাচ্ছে। সিজারিয়ান পদ্ধতির ব্যাপক প্রচলনের ফলে নারীর জরায়ুমুখ প্রয়োজন অনুপাতে সঙ্কীর্ণ হয়ে চলেছে। ইউনিভার্সিটি অব ভিয়েনার তত্ত্বীয় জীববিজ্ঞান বিভাগের ড. ফিলিপ মেটেরোয়েকারের করা একটি সমীক্ষায় দেখা গেছে, ১৯৬০’র দশকে যেখানে জরায়ুমুখ সঙ্কীর্ণ হওয়ার জন্য স্বাভাবিক প্রসবে অক্ষম নারীর সংখ্যা প্রতি হাজারে ৩০ জন ছিল তা এখন বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৩৬-এ। এসব ক্ষেত্রে প্রসূতি ও গর্ভস্থশিশু উভয়েরই মৃত্যু ঘটে। ত্রুটিপূর্ণ জিন এক প্রজন্ম থেকে আরেক প্রজন্মে স্থানান্তরিত হয় না বললেই চলে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ত্রুটিপূর্ণ জিন এক প্রজন্ম থেকে আরেক প্রজন্মে স্থানান্তরিত না হলেও যেহেতু অস্ত্রোপচারবিহীন স্বাভাবিক জন্মদান এখন প্রায় উঠে গেছে তাই প্রবণতাটি (সঙ্কীর্ণ জরায়ুমুখ) বাড়ছে বলে পর্যবেক্ষণে ধরা পড়েছে। বিষয়টি চিকিৎসাবিজ্ঞানীদের কাছে ফিটোপেলভিক ডিসপ্রপোরশন নামে পরিচিত। কেন এই প্রবণতা বাড়ছে। এটি এখন এক বড় প্রশ্ন। বিজ্ঞানীরা মনে করেন, সরাসরি জিনগতভাবে এই প্রবণতাটি এক প্রজন্ম থেকে আরেক প্রজন্মে না এলেও বহু নারীর দীর্ঘদিনের আচরণজনিত অভ্যাসের ধারাটি প্রজন্ম থেকে প্রজন্মান্তরে অব্যাহত থাকছে। ড. মেটেরোয়েকার বলছেন, এক শ’ বছর আগেও সরু কটিদেশ নারীরা জন্মদানের সময় মৃত্যু ঘটত কিন্তু এখন এটি স্বাভাবিক নিয়মে পরিণত হয়েছে। কটিদেশের (পেলভিস) প্রসার যেন আর হচ্ছে না। এই ধারা মানুষের টিকে থাকার জন্য প্রশ্ন হয়ে দেখা দিতে পারে। গবেষণার কাজে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থাসহ সন্তান জন্মদান বিষয়ে বিভিন্ন সময়ে পরিচালিত বড় বড় সমীক্ষার তথ্য ব্যবহার করা হয়েছে। তিনি বলছেন, চিকিৎসা ব্যবস্থায় হস্তক্ষেপ করা আমাদের উদ্দেশ্য নয়। বরং মানব প্রজন্মের ওপর এর কি প্রভাব পড়তে পারে সেটি পর্যবেক্ষণ করা ছিল এ সমীক্ষার উদ্দেশ্য। সাধারণত গর্ভস্থ মানব শিশুর মাথা অন্যান্য প্রাণীর মাথার চেয়ে আকারে কিছুটা বড় থাকে। এ কারণে অন্যান্য প্রাণী মানুষের চেয়ে সহজে সন্তান প্রসব করতে পারে। এখন অস্ত্রোপচারের মাধ্যমে জন্মদান প্রক্রিয়া অব্যাহত থাকায় নবজাতকের আকৃতিগত দিক স্বাভাবিকের চেয়ে কিছুটা বড় হচ্ছে। অন্যদিকে নারীর কটিদেশের আকার সরু হচ্ছে। বর্তমানে সিজারিয়ান পদ্ধতির প্রচলন এত বেড়েছে যে, ড. মেটেরোয়েকার মনে করেন, এমন এক সময় আসবে যখন এর মধ্য দিয়ে পুরো প্রজন্মে জন্ম হবে। -বিবিসি
×