ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ১১ মে ২০২৪, ২৭ বৈশাখ ১৪৩১

রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুত কেন্দ্র নির্মাণে উপদেষ্টা হিসেবে কাজ করবে ভারত

প্রকাশিত: ০৪:২০, ১ ডিসেম্বর ২০১৬

রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুত কেন্দ্র নির্মাণে উপদেষ্টা হিসেবে কাজ করবে ভারত

অর্থনৈতিক রিপোর্টার ॥ রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুত কেন্দ্র প্রকল্পে ভারত তৃতীয় পক্ষ হবে না। এ প্রকল্পে ভারত উপদেষ্টা হিসেবে সহযোগিতা দেবে। এ বিষয়টি নিয়ে ভারতের সঙ্গে বাংলাদেশ ও রাশিয়ার আলোচনা চলছে বলে জানা গেছে। এদিকে রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুত কেন্দ্রের স্পেন্ট ফুয়েল বা বর্জ্য রাশিয়ার নিয়ে যাওয়ার বিষয়টি এ প্রকল্প সংক্রান্ত বাংলাদেশ ও রাশিয়ার মধ্যে সম্পাদিত মূল চুক্তিতেই রয়েছে বলে জানা গেছে। তবে এই বর্জ্য কিভাবে রাশিয়া নেবে, কত দিন পর পর নেবে দুই সরকারের (রাশিয়া-বাংলাদেশ) মধ্যে সে সংক্রান্ত আরেকটি চুক্তি (আইজিএ-ইন্টার গবর্নমেন্ট এগ্রিমেন্ট) হবে। বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের একাধিক সূত্র জানায়, রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুত কেন্দ্রের মূল চুক্তিতে রয়েছে- দুই দেশ মনে করলে তৃতীয় কোন দেশের সহযোগিতা নেয়া যেতে পারে। যেহেতু ভারতের পারমাণবিক বিদ্যুত প্রকল্পের দীর্ঘ অভিজ্ঞতা রয়েছে। ভারতে বর্তমানে দুটি পারমাণবিক বিদ্যুত কেন্দ্রে উৎপাদন চলছে। আরও তিনটি প্রকল্প বাস্তবায়নাধীন আছে। রাশিয়ার সার্বিক সহযোগিতায় এসব প্রকল্প বাস্তবায়ন করছে ভারত। আর এ ব্যাপারে রাশিয়াই আগ্রহ দেখিয়েছে। সূত্রগুলো আরও জানায়, বাংলাদেশের পূর্ব অভিজ্ঞতা না থাকায় পারমাণবিক বিদ্যুত প্রকল্পের এমন অনেক বিষয় আছে যেগুলো রাশিয়ার এক্সপার্টদের কাছ থেকে বাংলাদেশের এক্সপার্টদের বুঝতে অসুবিধা হয়। আবার বাংলাদেশের এক্সপার্টরা রাশিয়ার এক্সপার্টদের বোঝাতে গেলেও অসুবিধা হয়। এ অসুবিধা দূর করার জন্য ভারতীয় এক্সপার্টরা সহযোগিতা করবে। এ বিষয়ে একটি চুক্তির খসড়া নিয়ে প্রাথমিক আলোচনা চলছে। এ প্রকল্পের পক্ষ দুটিই থাকবে- বাংলাদেশ এবং রাশিয়া। ভারত এখানে তৃতীয় পক্ষ হবে না। এ প্রকল্পে ভারতীয়রা উপদেষ্টার মতো থাকবে। রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুত কেন্দ্র প্রকল্পের চুক্তি হয়েছে বাংলাদেশ ও রাশিয়া সরকারের মধ্যে। এই দুই পক্ষই কেবল প্রকল্প বাস্তবায়ন করবে। এই প্রকল্পে কারও সাহায্য নেয়া কোন তৃতীয় পক্ষ দাঁড় করানোর মতো বিষয় না। যেহেতু ভারতে এ ধরনের প্রকল্প চালু রয়েছে তাই ভারতের কাছ থেকে সহযোগিতা নেয়ার বিষয়টি চিন্তাভাবনা করা হচ্ছে। এ বিষয়ে বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিমন্ত্রী স্থপতি ইয়াফেস ওসমান বলেন, এটা একটা বিশাল প্রকল্প। এর শুরু ও শেষ এক করে দেখা যায় না। এ প্রকল্পের চুক্তি হয়েছে দুই সরকারের (বাংলাদেশ-রাশিয়া) মধ্যে। এখানে প্রাইভেট বা কোন কোম্পানি বা বেসরকারী কোন সংস্থার সঙ্গে কোন চুক্তি হয়নি। চুক্তি হয়েছে বাংলাদেশ ও রাশিয়ার সরকারের মধ্যে। ভারত এখানে কোন তৃতীয় পক্ষ না। ভারত উপদেষ্টা হিসেবে সহযোগিতা দেবে। মূল চুক্তিতেই আছে প্রয়োজনে অন্য কোন দেশের সহযোগিতা নেয়া যেতে পারে। যেহেতু এ বিষয়ে ভারতের দীর্ঘ দিনের অভিজ্ঞতা রয়েছে তাই ভারতের সঙ্গে আলোচনা চলছে। এদিকে বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রণালয় সূত্র জানায়, রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুত কেন্দ্রে উৎপাদন শুরু হলে যে বর্জ্য তৈরি হবে সেটাই স্পেন্ট ফুয়েল। এ স্পেন্ট ফুয়েল রাশিয়া নিয়ে যাবে বলে আইজিএতে লিখিতভাবে উল্লেখ করা আছে। যত দিন এ প্রকল্পে উৎপাদন চলবে ততদিন রাশিয়া বর্জ্য নেয়া অব্যাহত রাখবে। তবে রাশিয়া কিভাবে এই বর্জ্য নিয়ে যাবে এবং কত দিন পর পর সেটা নেবে- সেগুলো আলোচনা করে নির্দিষ্ট করা হবে। এ ব্যাপারে দুই সরকারের মধ্যে আরেকটি আইজিএ হবে। বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিমন্ত্রী স্থপতি ইয়াফেস ওসমানের কাছে এ বিষয়ে জানতে চাওয়া হলে বলেন, না বুঝে কেউ কেউ এটা নিয়ে কথা বলছেন। আসলে স্পেন্ট ফুয়েলই বর্জ্য। স্পেন্ট ফুয়েল আর বর্জ্য আলাদা কোন কিছু না। আইজিএতে পরিষ্কার লেখা আছে বর্জ্য রাশিয়া নিয়ে যাবে। এই বর্জ্য কিভাবে নেবে, কত দিন পর পর নেবে সেটা আলোচনা করে নির্দিষ্ট করা হবে। এ বিষয়ে আরেকটি আইজিএ হবে। আমরা এই বিদ্যুত কেন্দ্রের নিরাপত্তার জন্য সেনাবাহিনী, বিজিবি, পুলিশের সমন্বয়ে টিম গঠন করেছি।
×