ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ১১ মে ২০২৪, ২৭ বৈশাখ ১৪৩১

ক্যালের জঙ্গল ক্যাম্প পুড়ে ছাই

শরণার্থী এক শ’ শিশু ব্রিজের নিচে রাত কাটায়

প্রকাশিত: ০৪:০৫, ২৮ অক্টোবর ২০১৬

শরণার্থী এক শ’ শিশু ব্রিজের নিচে রাত কাটায়

ফ্রান্সের ক্যালে শহরের শরণার্থী শিবির জঙ্গল ক্যাম্প এখন সম্পূর্ণ খালি বলে ফরাসী কর্তৃপক্ষ ঘোষণা করলেও সেখানে কয়েক শ’ শরণার্থী রয়েছে। এদিকে আগুনে শিবিরের কুটিরগুলো পুড়ে ছাই হয়ে যাওয়ার পর প্রায় এক শ’ অভিভাবকহীন শিশুর রাতে ঘুমানোর কোন জায়গা ছিল না এবং ক্রমেই তারা বেপরোয়া হয়ে উঠছে। খবর বিবিসি ও গার্ডিয়ানের। ফরাসী সরকার বলেছে, শিবিরের প্রায় পাঁচ হাজার ৬০০ শরণার্থীকে সোমবার থেকে দেশের অন্যত্র অভ্যর্থনা কেন্দ্রগুলোতে সরিয়ে নেয়া হয়েছে। এদের মধ্যে প্রায় এক হাজার ৫০০ অভিভাবকহীন শিশুকে কনটেনার ঘরে আশ্রয় দেয়া হয়েছে। তবে মানবাধিকার কর্মীরা বলেছেন, এখন সেগুলোও পূর্ণ হয়ে গেছে। দাতব্য শিশু সংস্থা সেভ দ্য চিলড্রেন বলেছে, শিবির উচ্ছেদ হয়ে যাওয়ার পরও যেসব শিশুর নিবন্ধন হয়নি তাদের নিয়ে সংস্থাটি অত্যন্ত উদ্বিগ্ন। নিবন্ধন কেন্দ্রগুলো দ্রুত বন্ধ হয়ে যাওয়ার পরও লাইনে অন্তত এক শ’ শিশু দাঁড়িয়ে ছিল। শিশুদের জন্য তৈরি করা কনটেনার ঘরগুলো ভর্তি হয়ে যাওয়ার পর এখনও এক শ’ শিশুর যাওয়ার কোন জায়গা নেই। ক্যালে বন্দরের দিকে যাওয়ার প্রধান সড়কের পাশের জঙ্গলে গড়ে ওঠা শরণার্থী ক্যাম্পের কুটিরগুলোতে রাতভর আগুন জ্বলে এবং সেগুলো পুড়ে ছাই হয়ে গেছে। ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী বিবিসির প্রতিনিধি বলেছেন, শরণার্থীরা জঙ্গল ক্যাম্প ছেড়ে যেতে চাইছিল না। খুব সম্ভবত শেষ প্রতিবাদ হিসেবে তারা তাদের কুটিরগুলোতে আগুন ধরিয়ে দেয়। পাস-দ্যু-ক্যালের গবর্নর ফ্যাবিয়ান বুকচো বলেছেন, আমাদের অভিযান শেষ হয়েছে। শিবিরে আর কোন শরণার্থী নেই। আগুন দেয়া প্রসঙ্গে তিনি বলেন, অভিবাসী জনগোষ্ঠী ঐতিহ্যগতভাবেই কোন স্থান থেকে চলে যাওয়ার আগে সেখানকার সবকিছু ধ্বংস করে যায়। ক্যালে পুলিশ কমিশনার বলেছেন, বিক্ষোভকারীরা আগুন ধরিয়ে দিয়েছে বলে শরণার্থীরা আমাকে জানিয়েছে। এ ঘটনার পর সেখানে আরও পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। সেভ দ্য চিলড্রেনের প্রতিনিধি ডরথি সাং বলেছেন, গত রাতে ক্যাম্পজুড়ে যখন আগুন জ্বলছিল তখন এক শ’ শিশু সেতুর নিচে রাত কাটিয়েছে বলে আমরা জানতে পেরেছি। আমরা জানি শিশুদের অনেকে পালিয়ে গেছে। এটিই বাস্তবতা। এখানকার বর্তমান পরিস্থিতি শিশুদের জন্য সত্যিই খুব ভয়ঙ্কর। গত মাসে ক্যালে জঙ্গল ক্যাম্প বন্ধ করে দেয়ার ঘোষণা দেয় ফ্রান্স। সোমবার থেকে শরণার্থীদের সরিয়ে নেয়ার কার্যক্রম শুরু হয়। ব্রিটেনের সীমান্তবর্তী ফরাসী শহর ক্যালের এ শরণার্থী শিবিরটি জঙ্গল ক্যাম্প নামে পরিচিত। যেখানে গত কয়েক বছর ধরে বিশ্বের বিভিন্ন দেশ থেকে আসা শরণার্থীরা বাস করছে এবং যাদের বেশির ভাগেরই প্রধান উদ্দেশ্য সীমান্ত অতিক্রম করে ব্রিটেনে প্রবেশ করা। অনেকেই জোর করে বা গোপনে ট্রাকে করে ব্রিটেনে প্রবেশের চেষ্টা করে যাচ্ছে। এ কারণে এ ক্যাম্পটি নিয়ে ব্রিটেন ও ফ্রান্স সরকারের মধ্যে তিক্ততাও তৈরি হয়েছে।
×