ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১০ মে ২০২৪, ২৭ বৈশাখ ১৪৩১

সাব্বিরের কষ্ট!

প্রকাশিত: ০৫:৫৮, ২৫ অক্টোবর ২০১৬

সাব্বিরের কষ্ট!

স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ টি২০ স্পেশালিস্ট আর ওয়ানডেতে রান বাড়ানোর মোক্ষম অস্ত্র। সেই সাব্বির রহমানকেই টেস্ট দলে নেয়ার পর মৃদু গুঞ্জন উঠেছিল দীর্ঘ পরিসরের আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে তিনি কতখানি যোগ্য। তবে চট্টগ্রাম টেস্টের পর সেই তির্যক প্রশ্নগুলো ধুয়েমুছে নিজের যোগ্যতা ও সামর্থ্য প্রমাণ করেছেন। এমনকি দল এবং বাংলাদেশেরই অন্যতম ভরসার নাম হয়ে গিয়েছিলেন ঐতিহাসিক কিছু ঘটানোর প্রত্যাশায়। তবে সেটা পূরণ করতে পারেননি সঙ্গীদের ব্যর্থতায়। শেষদিনে জয়ের জন্য ৩৩ রানের প্রয়োজন ছিল। কিন্তু সাব্বিরের সহযোদ্ধারা একেবারেই দুর্বল! কারণ সঙ্গী হিসেবে ব্যাট হাতে ক্রিজে ছিলেন দুই স্পেশালিস্ট বোলার তাইজুল ইসলাম ও শফিউল ইসলাম। তারা বিদায় নিয়েছেন। ৬৪ রান করে অপরাজিত থাকলেও দলের পরাজয়ে মহানায়ক হতে পারেননি। নিজে না হেরেও সে কারণে পরাজিতই হয়েছেন। বাংলাদেশের পক্ষে চতুর্থ ইনিংসে সেরা হয়ে গিয়েছিলেন আগের দিনই অর্ধশতক হাঁকিয়ে। দলকে জেতানোর সুযোগটাও এসেছিল। কিন্তু অভিষেকেই নায়ক হওয়া হলো না এ ২৪ বছর বয়সী ডানহাতি ব্যাটসম্যানের। ২৮৬ রানের টার্গেটে খেলতে নেমে দ্বিতীয় ইনিংসে বাংলাদেশ ১৪০ রানেই ৫ উইকেট হারানোর পর সাব্বির ব্যাট হাতে নেমেছিলেন। প্রথম ইনিংসে সাবলীলভাবে খেলে ১৯ রান করেই ফিরে গিয়েছিলেন। তবে ছোট্ট সেই ইনিংসেই ইঙ্গিত দিয়েছিলেন তার ব্যাটের ওপরই নির্ভর করতে পারে বাংলাদেশ। সেটা প্রমাণ করে দিলেন। ষষ্ঠ উইকেটে অধিনায়ক মুশফিকুর রহীমের সঙ্গে ৮৭ রানের দারুণ জুটি গড়ে দলকে এগিয়ে নিয়েছেন জয়ের প্রত্যাশা পূরণের পথে। ইংল্যান্ডের বিরুদ্ধে এটি ষষ্ঠ উইকেটে বাংলাদেশের দ্বিতীয় সেরা জুটি। তবে মুশফিক দিনের শেষভাগে সাজঘরে ফিরে যান। তখনও বাংলাদেশ দল ৫৯ রান দূরে জয় থেকে। এরপর আরেক অভিষিক্ত তরুণ মেহেদী হাসান মিরাজ ও কামরুল ইসলাম রাব্বি উইকেটে এসে বেশিক্ষণ টিকতে পারেননি। মেহেদী ১ ও রাব্বি ০ রানে ফিরে গেলে ২৩৮ রানেই ৮ উইকেট হারিয়ে নিশ্চিত পরাজয়ের শঙ্কায় পড়ে বাংলাদেশ। কিন্তু তাইজুলকে নিয়ে চতুর্থ দিন শেষ করেন অবিচ্ছিন্ন ১৫ রান যোগ করে। তাইজুল দারুণ ব্যাট করে ভরসা ও আরও মানসিক শক্তি দিচ্ছিলেন সাব্বিরকে। যেটা মুশফিক ছাড়া বাকি দু’জন পারেননি। শুরু থেকেই একক লড়াই চালিয়েছেন সাব্বির টেস্ট মেজাজে ব্যাটিং করেই। পঞ্চম দিনে তাই দারুণ আত্মবিশ্বাস নিয়ে খেলেছেন সাব্বির। প্রথম তিনটা ওভার নির্বিঘেœই কাটিয়ে ১০ রান তুলে ফেলে জয়ের আরও কাছে চলে যায় বাংলাদেশ। কিন্তু দিনের চতুর্থ ওভারেই সর্বনাশটা ঘটে গেল। সাব্বির অপরপ্রান্তে দাঁড়িয়ে দেখলেন স্টোকসের ধ্বংসলীলায় তার দুই সহযোদ্ধা তাইজুল আর শফিউলের বিদায়। অভিষেকে চতুর্থ ইনিংসে ব্যাট করে দলকে জেতানোর ঘটনা ছিল মাত্র ১৫টি। একমাত্র সেঞ্চুরি আছে পাকিস্তানের ইয়াসির হামিদের। তিনি ১০৫ রান করেছিলেন ২০০৩ সালের আগস্টে করাচীতে বাংলাদেশের বিরুদ্ধে। এবার সাব্বিরের সেই সুযোগ থাকলেও হলো না। ১০২ বলে ৩ চার ও ২ ছক্কায় ৬৪ রানের দারুণ এক ইনিংস খেলে অপরাজিত থাকলেন। তবে আক্ষেপ নিয়ে প্রশ্নটা উঠলইÑ সাব্বির কেন দিনের তৃতীয় ওভারের শেষ বলে রান নিয়ে তাইজুলকে স্ট্রাইক দিয়েছেন? এ বিষয়ে অধিনায়ক মুশফিকুর রহীম ব্যাখ্যা দিলেন। তিনি বলেন, ‘৩৩ রান তো সাব্বির একাই করতে পারবে না। গতকাল (রবিবার) শেষ দিকে তাইজুল খুব ভাল খেলছিল, আজও শুরুটা খুব ভাল করেছিল। এজন্য সিদ্ধান্ত নেয়া যে, যদি রান হয় রানটা নিয়ে নেয়া।’
×