ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

বড় দুই দলেই গৃহবিবাদ

প্রকাশিত: ০৫:৫১, ২৫ অক্টোবর ২০১৬

বড় দুই দলেই গৃহবিবাদ

মাজহার মান্না, কিশোরগঞ্জ ॥ পাকুন্দিয়া পৌরসভা নির্বাচনকে ঘিরে রাজনীতির মাঠ সরগরম হয়ে উঠেছে। প্রার্থীরা পৌরবাসীকে ভোটদানে আগ্রহী করতে প্রচার চালিয়ে যাচ্ছে। ফেসবুক থেকে চায়ের কাপ পর্যন্ত উত্তাপ ছড়িয়ে দিয়েছে প্রার্থীর কর্মী-সমর্থক। মেয়র প্রার্থীদের পাশাপাশি মার্কা নিয়ে বিভিন্ন ওয়ার্ডের সাধারণ কাউন্সিলর প্রার্থী পিছিয়ে নেই। পোস্টার, ইন্টারনেট, মাইকিং ও পথসভা থেকে শুরু করে ভোটারদের দ্বারে দ্বারে ঘুরছে প্রার্থীরা। এ সময় দিচ্ছে নানামুখী উন্নয়নের প্রতিশ্রুতি। এখানে মেয়র পদে তিন সাধারণ কাউন্সিলর পদে ৪২ ও সংরক্ষিত নারী কাউন্সিলর পদে ১১ জন প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছে। আগামী ৩১ অক্টোবর এ পৌরসভায় ভোটগ্রহণ হবে। নির্বাচনে মেয়র পদে আওয়ামী লীগের একক প্রার্থী উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদ কমান্ডার মেছবা উদ্দিন (নৌকা), বিএনপির বর্তমান পৌর মেয়র উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক এ্যাডভোকেট মোঃ জালাল উদ্দিন (ধানের শীষ) এবং সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান ও উপজেলা বিএনপির যুগ্ম-আহ্বায়ক আক্তারুজ্জামান খোকন (নারিকেল গাছ) প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। এখানে বিএনপির বিদ্রোহী আক্তারুজ্জামান খোকন শক্তিশালী প্রার্থী হওয়ায় জটিল হয়ে পড়েছে ভোটের হিসাব-নিকাশ। এ নিয়ে রাজনৈতিক মহলসহ সর্বত্রই চলছে নানা জল্পনা-কল্পনা। জানা গেছে, উপজেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম-আহ্বায়ক মোতাহার হোসেন স্বপন মেয়র পদে তৃণমূলের ভোটে নির্বাচিত হওয়ার পরও দলীয় মনোনয়ন পাননি। এক্ষেত্রে মনোনয়নের দৌড়ে পিছিয়ে থেকেও কেন্দ্রীয়ভাবে দলীয় মনোনয়ন পান উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার মেছবা উদ্দিন। এ অবস্থায় মোতাহার হোসেন স্বপনের সমর্থকরা দলীয় মনোনয়ন মেনে না নিয়ে প্রার্থী বদলের দাবিতে দু’দিনের হরতাল কর্মসূচীও পালন করেছে। এছাড়া দলীয় মনোনয়ন পরিবর্তন হতে পারে এমন প্রত্যাশা থেকে দলের প্রত্যয়নপত্র ছাড়াই নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতার জন্য ‘দলীয় প্রার্থী’ পরিচয়ে মনোনয়নপত্র দাখিল করেন মোতাহার হোসেন স্বপন। কিন্তু শেষমেশ কাক্সিক্ষত সেই প্রত্যয়নপত্র না পাওয়ায় বাছাইয়ে প্রার্থিতা বাতিল হয়ে যায়। ফলে মেছবা উদ্দিনই দলের একক প্রার্থী হিসেবে নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। এদিকে মনোনয়ন পেলেও দলের সব অংশের নেতাকর্মীদের সমর্থন পাচ্ছেন না মেছবা উদ্দিন। আর তাই তিনি অনেকটা কোণঠাসা থেকে নির্বাচনী প্রচার চালিয়ে যাচ্ছেন। দলের বিভিন্ন পর্যায়ের নেতাকর্মী তার পক্ষে মাঠে না নামায় কাক্সিক্ষত ফল নিয়ে উদ্বিগ্ন আওয়ামী লীগের তৃণমূলের নেতাকর্মীরা। তবে মেছবা সমর্থকরা বলছে, দলের আর কোন বিকল্প প্রার্থী না থাকায় শেষ পর্যন্ত নেতাকর্মীরা মান-অভিমান ভুলে সবাই একাট্টা হয়ে নৌকারই যাত্রী হবে। অপরদিকে বর্তমান মেয়র ও উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক এ্যাডভোকেট জালাল উদ্দিনকে দলীয় মনোনয়ন দেয়া হয়েছে। দলীয় প্রার্থী হিসেবে তার মনোনয়ন ছিল প্রত্যাশিত। পাকুন্দিয়া পৌরসভার প্রথম মেয়র হিসেবে নির্বাচিত হওয়ায় দলীয় নেতাকর্মী ছাড়াও সাধারণ মানুষের কাছেও রয়েছে তার গ্রহণযোগ্যতা। তবে এখানে শক্তিশালী প্রার্থী হিসেবে আবির্ভূত হয়েছেন দলটির বিদ্রোহী প্রার্থী আক্তারুজ্জামান খোকন। সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান এবং বিগত উপজেলা নির্বাচনে বিএনপির চেয়ারম্যান প্রার্থী হিসেবে এলাকায় তার রয়েছে ব্যাপক পরিচিতি। আর তাই বর্তমান মেয়র জালাল উদ্দিন রয়েছেন অস্বস্তিতে। দলীয় মনোনয়ন নিয়ে প্রকাশ্যে বিরোধিতা না থাকলেও রয়েছে গৃহবিবাদ। দলের এ বিবাদের কারণে এখানে বিএনপির প্রতিপক্ষ হয়ে দাঁড়িয়েছে বিএনপিই। অন্যদিকে দলীয় মনোনয়ন নিয়েও আওয়ামী লীগের কোন্দল ও বিভাজনের কারণে নির্বাচনের মাঠে দলটির প্রার্থী উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার মেছবা উদ্দিনও হয়েছেন কোণঠাসা। ফলে দলীয় দুই প্রার্থীর পাশাপাশি আলোচনায় রয়েছেন বিএনপির বিদ্রোহী প্রার্থীও।
×