ঢাকা, বাংলাদেশ   রোববার ০৫ মে ২০২৪, ২২ বৈশাখ ১৪৩১

আত্মবিশ্বাস এখন তুঙ্গে তামিমের

প্রকাশিত: ০৬:১৫, ৩ অক্টোবর ২০১৬

আত্মবিশ্বাস এখন তুঙ্গে তামিমের

স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ ক্রিকেটে তিন অঙ্কের রান করতে পারলেই সেটাকে ‘ম্যাজিক ফিগার’ হিসেবে গণ্য করা হয়। সেঞ্চুরি হাঁকানো খুব সহজ ব্যাপার নয়। তবে ইতোমধ্যেই ওয়ানডে ক্রিকেটে ৭ বার, টেস্টে ৭ বার এবং ক্ষুদ্রতম ফরমেটের টি২০ ক্রিকেটে ১ সেঞ্চুরি করে ফেলেছেন ২৭ বছর বয়সী ওপেনার তামিম ইকবাল। সবমিলিয়ে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে ১৫ শতক। সর্বশেষটি করলেন শনিবার আফগানিস্তানের বিরুদ্ধে তৃতীয় ওয়ানডেতে। ৭ সেঞ্চুরি করে টেস্ট ও টি২০ ক্রিকেটের পর ওয়ানডেতেও বাংলাদেশের পক্ষে সর্বাধিক সেঞ্চুরির মালিক হয়ে গেছেন তিনি। সেঞ্চুরিটা আফগানিস্তানের মতো দুর্বলতর দলের বিরুদ্ধে হলেও সেটাকে বিশেষ কিছুই মনে করেন তামিম। কারণ ম্যাচটি ছিল সিরিজ নির্ধারণী। এই শতকের পর আত্মবিশ্বাসটাও তার এবং দলের মধ্যে ফিরে আসছে বলে দাবি করেন এ বাঁহাতি ওপেনার। সেই সঙ্গে তিনি আশা প্রকাশ করেন আরও বড় স্কোর করতে সক্ষম হবেন তিনি। দারুণ এক সেঞ্চুরি হাঁকালেন, তবে সেটা ছিল যেন দ্বিতীয় ইনিংস। কারণ ব্যক্তিগত ১ রানের সময়ই তিনি জীবন পেয়েছিলেন আফগান অধিনায়ক আসগর স্ট্যানিকজাইকে সহজ ক্যাচ দিয়ে। এর আগে কখনও এভাবে জীবন ফিরে পেয়ে বড় কোন স্কোর করতে পারেননি তামিম। এ বিষয়ে তিনি বলেন, ‘সাধারণত আমি জীবন পাওয়ার পর ভাল কিছু করি না। আমার রেকর্ড তাই বলে। ওটা কল্পনাও করিনি যে ওই ক্যাচ ছেড়ে দেবে। চেষ্টা করছিলাম বোঝানোর জন্য যে দিনটা আমার হবে। আমি তখন ১ রানে ছিলাম। আরও অনেক লম্বা পথ যেতে হবে। কঠোর পরিশ্রম করতে হবে। ওটা ভুলে নতুন করে শুরু করে ক্রিকেটিং শট কিভাবে খেলা যায় সেটার চেষ্টা করছিলাম।’ তবে আফগানদের বিরুদ্ধে সেঞ্চুরিটি হয়েছে সেটা নিয়ে ভাবছেন না। কারণ সব সেঞ্চুরিই বিশেষ একটা অর্জন। তামিমের ক্যারিয়ার সমান দুই ভাগে বিভক্ত করলে তিনি গত ৫ বছরেই করেছেন ৫ সেঞ্চুরি, আর ক্যারিয়ারের প্রথম ৫ বছরে করতে পেরেছিলেন মাত্র দুটি। এর মধ্যে গত এক বছরেই করেছেন ৩ শতক। এ বিষয়ে তামিম বলেন, ‘আমার জন্য প্রতিটি সেঞ্চুরি স্পেশাল। কার বিপক্ষে করলাম এটা বড় কথা নয়। সেঞ্চুরি তো সেঞ্চুরিই। এটা আমার কাছে বিশেষ কিছু। আর এটা এমন একটা খেলা যেটা সিরিজ নির্ধারণী ম্যাচ। আমি কোন এক শ’কেই ছোট করে দেখি না।’ সময়ের সঙ্গে অনেক বেশি পরিণত হয়েছেন তামিম এটা থেকেই বোঝা যায়। ক্যারিয়ারের শুরুর দিকে খুব বেশি বড় বড় ইনিংস খেলতে পারেননি। কিন্তু এখন দেখেশুনে ভাল ভাল ইনিংস খেলতে সক্ষম হচ্ছেন তিনি। তামিম বলেন, ‘আমি বড় ইনিংস খেলতে চাচ্ছিলাম। যখন আমি একই জিনিস চেষ্টা করছিলাম যখন ৫০-৬০-এ ছিলাম তখন ব্যাটিং চালিয়ে যাওয়ার ইচ্ছা হয়েছে অন্তত ৩৫ ওভার পর্যন্ত। এটাই চেষ্টা করছিলাম এবং সফলতা পেয়েছি।’ তবে তিনি মনে করেন এই স্কোরটাকে আরও বড় করা সম্ভব। ১১৮ করেই সাজঘরে ফিরে গেছেন এদিন। এ বিষয়ে তামিম বলেন, ‘অবশ্যই আমাদের ১০০-১৫০-১৬০ করা উচিত। সত্যি কথা বলতে আমার কাছে আজ (শনিবার) সুযোগও ছিল। এটা কারও দোষ না, আমার নিজেরই দোষ। আমি নিজেই করতে পারিনি। সবসময় আমি বলি যখন আমার কাছে সর্বোচ্চ সময় থাকে তখন সর্বোচ্চ সুযোগ নেয়া উচিত। যখন আমরা এটা নিয়মিত করতে পারব সেটা অবশ্যই দলের জন্য ভাল হবে।’ আফগানিস্তানের বিরুদ্ধে প্রথম দুই ম্যাচে যেন ২০১৫ সালের বাংলাদেশ দলকে চেনা যায়নি। কাগজে-কলমে বাংলাদেশের চেয়ে ছোট দল হলেও দুই ম্যাচ বাংলাদেশ দলকে বেশ ভুগিয়েছে আফগানরা। কিন্তু তৃতীয় ম্যাচে আর সেটা পারেনি, পুরোপুরি বিধ্বস্ত করেছে তারা প্রতিপক্ষকে। এ বিষয়ে তামিম বলেন, ‘আমার কাছে মনে হয় আমাদের এভাবেই জেতা উচিত ছিল ওদের বিপক্ষে। প্রথম ম্যাচ বলেন কিংবা দ্বিতীয় ম্যাচ বলেন সন্দেহ নেই ওরা ভাল ক্রিকেট খেলেছে। তারা অবিশ্বাস্য ক্রিকেট খেলেছে। আজকে (শনিবার) আমরা অনেক ভাল ছিলাম। আরও কিছু কিছু জায়গায় উন্নতি করতে পারি। তারপরও এটা আমাদের জন্য ভাল হয়েছে। অবশ্যই জয় প্রয়োজন ছিল। সামনে এটা বড় সিরিজ আছে। আমি ছাড়াও বাকি সবার মধ্যেই একটু হলেও আত্মবিশ্বাস ফিরে এসেছে।’ তবে আফগান সিরিজে ভাল করতে পারেননি নির্ভরযোগ্য মিডলঅর্ডার মুশফিকুর রহীম। এ বিষয়ে তামিম বলেন, ‘এটা কোন চিন্তার বিষয় না। সাধারণত সাকিব-মুশফিক এ কাজটা খুব ভাল করে। সাথে রিয়াদ ভাই আছে। একটা দুটা ম্যাচ খারাপ যেতেই পারে। আমি বেশ আত্মবিশ্বাসী যে যখন তাদের দলের জন্য খুব দরকার হবে তারাই খুব ভাল কিছু করবে।’
×