ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ১১ মে ২০২৪, ২৮ বৈশাখ ১৪৩১

‘পালকী’তে চড়ে স্নিগ্ধা মোমিন

প্রকাশিত: ০৬:৪৮, ১৪ আগস্ট ২০১৬

‘পালকী’তে চড়ে স্নিগ্ধা মোমিন

সাজু আহমেদ ॥ স্নিগ্ধা মোমিন না ‘পালকী’ কোন নামে বেশি পরিচিত। নির্দ্বিধায় বলে দেন পরিবার এবং কাছের মানুষের কাছে স্নিগ্ধা মোমিন। মিডিয়ায় ‘পালকী’ নামেই পরিচিত তিনি। সবাই এ নামেই চেনে। বলছি এ সময়ের জনপ্রিয় অভিনেত্রী, দীপ্ত টিভির মেঘা ধারাবহিক ‘পালকী’ নাটকের প্রধান চরিত্রে রূপদানকারী অভিনেত্রী স্নিগ্ধা মোমিনের কথা। এ নাটকের মাধ্যমে সম্প্রতি বেশ পরিচিত হলেও সংস্কৃতি অঙ্গনে স্নিগ্ধার অভিজ্ঞতা এবং কাজের পরিধিও কম নয়। তবে নিজ মেধার কারণেই এগিয়ে চলছেন মিডিয়ার কক্ষপথে। ধৈর্য আর কাজের প্রতি নিষ্ঠার সাফল্যও আসছে। এখন তিনি পুরোদস্তুর অভিনেত্রী। অভিনয়ই তার ধ্যান-জ্ঞান। কুড়িগ্রামের মেয়ে স্নিগ্ধার জন্ম ও বেড়ে ওঠা রাজধানী ঢাকাতে। বাবা আব্দুল মোমিন সরকার ঢাকা ওয়াসার অবসরপ্রাপ্ত প্রকৌশলী। মা-বাবার একমাত্র সন্তান স্নিগ্ধা তাদের অুনপ্রেরণাতেই শৈশব থেকে শোবিজে কাজের জন্য স্বপ্ন দেখেন। মিডিয়ার কাজের প্রতি আগ্রহ এবং প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে গান এবং নাচের চর্চা করেছেন। শৈশবেই বুলবুল ললিতকলা একাডেমিতে সোহেল রহমানের তত্ত্বাবধানে নৃত্য বিষয়ক পাঁচ বছরের কোর্স করেছেন। মিডিয়াতে প্রতিষ্ঠিত হওয়ার স্বপ্ন মূলত এখান থেকেই শুরু। এর পর নিজেকে তৈরি করেছেন দেখে দেখে, অভিজ্ঞতার আলোকে। সেই অভিজ্ঞতাকে পুঁজি করে স্বপ্নের পথে হাঁটেন ২০০৮ সালে ‘লাক্স চ্যানেল আই সুপারস্টার’ প্রতিযোগিতায় অংশ নেয়ার মাধমে। তবে সেরা হতে না পারলেও এ প্রতিযোগিতা থেকে শেখা অনেক কিছুই পরবর্তীতে কাজে লেগেছে তার। এ প্রসঙ্গে স্নিগ্ধা বলেন, লাক্স চ্যানেল আই সুপারস্টার প্রতিযোগিতায় সেরা না হতে পারলেও অনেক অভিজ্ঞতা হয়েছে। এর পর নিজের চেষ্টায় এগিয়েছি। লেখাপড়ার পাশাপাশি ২০১০ সালে উপস্থাপনা শুরু করি। পরে কিছু ধারাবাহিকেও কাজ করেছি। এর মধ্যে রেদওয়ান রনির ‘রেডিও চকোলেট’, মাসুদ সেজানের ‘চলিতেছে সার্কাস’ অন্যতম। বেশি কাজ না করলেও দীপ্তর ‘পালকী’ প্রচারের পর থেকে জীবনটা বদলে গেল। ‘পালকী’র মাধ্যমে তো মিডিয়ার ক্যারিয়ারে সাফল্য এলো। এরপর? এ প্রসঙ্গে স্নিগ্ধা বলেন, সবে তো শুরু। তবে এ কথা বলতে পারি, দীপ্তর ‘পালকী’ নাটকে নাম ভূমিকায় অভিনয় করে প্রচুর রেসপন্স পেয়েছি। সবাই খুব প্রশংসা করছেন। এ নাটকের মাধ্যমে যে সাড়া পেয়েছি তাতে ব্যক্তি হিসেবে আমি সফল। আমার এ সাফল্যের জন্য বাবা-মার পাশাপাশি পরিচালক মোস্তফা মনন এবং ‘পালকী’ ইউনিটের সবার কাছে কৃতজ্ঞ। তেমনিভাবে কৃতজ্ঞ দীপ্ত টিভি এবং এ নাটকের দর্শকদের কাছে। বিশেষ করে দর্শকরা দেখেন বলেই আজ আমি তাদের কাছে পালকী। অভিনেত্রী স্নিগ্ধা মোমিনের সাধারণত ‘পালকী’ সিরিয়ালের বাইরে কাজের সুযোগ খুব একটা হয় না। তবে গত ঈদ উপলক্ষে নিজের দর্শক ও ভক্তদের জন্য বিশেষ উপহারস্বরূপ ‘ছেঁড়াটান’ নামে একটি টেলিফিল্মে অভিনয় করেন। শোবিজ নিয়ে তুমুল আগ্রহ থাকলেও পড়াশোনাতেও যতœশীল স্নিগ্ধা। সাফল্যের ধারাবাহিকতায় ভিকারুননিসা নূন স্কুল-কলেজের গ-ি পেরিয়ে, ইংরেজী সাহিত্যে অনার্স শেষে বর্তমানে ইস্টওয়েস্ট বিশ্ববিদ্যালয়ে ‘পপুলেশন রিপ্রোডাক্টিভ হেলথ এ্যান্ড জেন্ডার ডেভেলপমেন্ট (এমপিআরএইচজিডি) বিষয়ে মাস্টার্স করছেন। আগামীতে স্নিগ্ধার ধ্যান শুধুই মিডিয়াকে ঘিরে। সৃজনশীল কাজের মাধ্যমে সকলের নজরে আসতে চান তিনি। আরও ভাল ভাল নাটক, বিজ্ঞাপন ও চলচ্চিত্রে কাজ করতে চান। মনেপ্রাণে একজন শিল্পীসত্তা লালন করেন তিনি। এজন্য সাধনা করে যাবেন তিনি। স্নিগ্ধা মনে করেন, অভিনয় শেখা আসলে কখনও শেষ হয় না। নিজের সাফল্যের পেছনে পরিবারের ভূমিকার কথা স্বীকার করে তিনি বলেন, ছোটবেলা থেকেই পরিবার আমাকে পুরোপুরি সাপোর্ট দিয়ে যাচ্ছে। পরিবারের সদিচ্ছা না থাকলে হয়ত আমি আজ এতদূর আসতে পারতাম না। তিনি বলেন, ভবিষ্যতেও আমি একজন অভিনয়শিল্পী হিসেবেই ক্যারিয়ার গড়তে চাই। এ পেশায় থাকতে চাই। নাটক, টেলিফিল্ম, বিজ্ঞাপনের পাশাপাশি চলচ্চিত্রেও কাজ করতে চাই। এজন্য বরাবরের মতো সংশ্লিষ্ট সবার সহযোগিতা, দোয়া ও ভালবাসা চান স্নিগ্ধা মোমিন। নিজ মেধা, যোগ্যাতা এবং কাজের প্রতি নিষ্ঠার মাধ্যমে স্নিগ্ধা এগিয়ে যাবেন কাক্সিক্ষত লক্ষ্যে। সেটাই প্রত্যাশা সংশ্লিষ্টদের। তার জন্য শুভ কামনা।
×