ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

মার্কিন বাজারে ওষুধ রফতানি শুরু

প্রকাশিত: ০৪:১৫, ৫ আগস্ট ২০১৬

মার্কিন বাজারে ওষুধ রফতানি শুরু

অর্থনৈতিক রিপোর্টার ॥ হাইপারটেনশনের ওষুধ কার্ভোডিলল যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে রফতানি শুরু করেছে ওষুধ খাতের কোম্পানি বেক্সিমকো ফার্মাসিউটিক্যালস লিমিটেড। এর আগে ২০১৫ সালের নবেম্বরে ইউএস ফুড এ্যান্ড ড্রাগ এ্যাডমিনিস্ট্রেশনের (ইউএসএফডিএ) কাছ থেকে পণ্যের অনুমোদন লাভ করে কোম্পানিটি। আনুুষ্ঠানিকভাবে ওষুধ রফতানির আগে মার্কিন রাষ্ট্রদূত মার্শিয়া স্টিফেন্স ব্লুম বার্নিকাট টঙ্গীর বেক্সিমকো ফার্মার ওষুধ কারখানা পরিদর্শন করে। বৃহস্পতিবার রাজধানীর একটি হোটেলে যুক্তরাষ্ট্রে ওষুধ রফতানির আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করা হয়। এ সময় অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত, স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণমন্ত্রী মোহাম্মদ নাসিম এবং বাংলাদেশে নিযুক্ত মার্কিন রাষ্ট্রদূত মার্শিয়া স্টিফেন্স ব্লুম বার্নিকাট উপস্থিত ছিলেন। এ অনুষ্ঠানে কোম্পানিটির চেয়ারম্যান সোহেল এফ রহমান আনুষ্ঠানিকভাবে পণ্যটি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রদূতের হাতে তুলে দেন। প্রধান অতিথির বক্তব্যে অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত বলেছেন, দেশের ওষুধশিল্পের কারখানা স্থাপনে আরও সতর্ক হতে হবে, যাতে গুণগতমান ঠিক রেখে ওষুধ রফতানি করা যায়। কারণ খাতটি অনেক গুরুত্বপূর্ণ। অর্থমন্ত্রী বলেন, যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে ওষুধ রফতানির সুযোগ পাওয়া অত্যন্ত কঠিন। এ কঠিন কাজটি করতে পেরেছে বেক্সিমকো ফার্মা। আমি তাদের স্বাগত জানাই। বাংলাদেশের ওষুধশিল্পের অবস্থান শক্তিশালী হচ্ছে উল্লেখ করে অর্থমন্ত্রী বলেন, শিল্পোদ্যোক্তাদের আরও সতর্কভাবে মানসম্মত কারখানা স্থাপন করতে হবে। গুণগতমান সমুন্নত রেখে ওষুধ উৎপাদন করতে হবে। আমি মনে করি বেক্সিমকো ফার্মা সে অবস্থানে রয়েছে। বাংলাদেশ এখন প্রায় ১৭০ দেশে ওষুধ রফতানি করে থাকে। তবে এর পরিমাণ ব্যাপক নয়। এটা বাড়ানোর সুযোগ রয়েছে। স্বাস্থ্যমন্ত্রী মোহাম্মদ নাসিম বলেন, আজ কোন নেতিবাচক সংবাদ নিয়ে কথা নয়, বেক্সিমকো প্রথমবারের মতো যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে ওষুধ রফতানি করছে। আগামীতে হয়ত অন্যান্য কোম্পানি রফতানি করবে। এছাড়া আমাদের তরুণ অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আব্দুল মুহিতের নেতৃত্বে দেশের অর্থনীতি আরও এগিয়ে যাবে বলেও মনে করেন তিনি। বিশেষ অতিথির বক্তব্যে মার্কিন রাষ্ট্রদূত মার্শিয়া স্টিফেন্স ব্লুম বার্নিকাট বলেছেন, সাম্প্রতিক সময়ের জঙ্গী হামলার পরিপ্রেক্ষিতে বিদেশী বিনিয়োগকারীদের পুনরায় আশ্বস্ত করতে বাংলাদেশ সরকারকে আরও কাজ করতে হবে। এখানে বিদেশী বিনিয়োগ বাড়াতে নিরাপদ বাংলাদেশ গড়া অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। মার্কিন রাষ্ট্রদূত আরও বলেন, যে কোন হামলার পর সরকারের কাছ থেকে স্বচ্ছ, নির্ভরযোগ্য বার্তা প্রেরণ করা উচিত, যা জনগণকে পুনরায় আশ্বস্ত করবে। একই সঙ্গে বাংলাদেশে উত্থান হওয়া নতুন ধরনের এ সন্ত্রাসবাদ মোকাবেলায় সরকারের স্পষ্ট ও সম্পূর্ণ মনোযোগ দিতে হবে। তিনি আরও বলেন, বাংলাদেশকে মধ্যম আয়ের দেশে পরিণত করতে অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি অব্যাহত রাখতে হবে। এখানে বিদেশী বিনিয়োগ আরও বাড়াতে একটি নিরাপদ ও স্থিতিশীল বাংলাদেশ অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। বার্নিকাট বলেন, অবকাঠামোগত উন্নয়নের মাধ্যমে সরকার ওষুধশিল্প খাতকে সহযোগিতা করছে। সফল অর্থনীতির জন্য প্রাইভেট খাতকে সঙ্গে নিয়ে কাজ করছে বাংলাদেশ সরকার। যুক্তরাষ্ট্র এ অগ্রগতির সঙ্গে রয়েছে। কোম্পানির ভাইস চেয়ারম্যান সালমান এফ রহমান বলেন, যুক্তরাষ্ট্রে ওষুধ রফতানি করার মাধ্যমে এ শিল্পে একটি নতুন যুগের সূচনা হলো, যা কোম্পানির জন্য বড় অর্জন। আশা করি বেক্সিমকো তার অবস্থান ধরে রাখবে। বেক্সিমকো ফার্মাসিউটিক্যালস লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক নাজমুল হাসান এমপি বলেন, বাংলাদেশ থেকে আমরাই প্রথম যুক্তরাষ্ট্রে ওষুধ রফতানি শুরু করেছি। যুক্তরাষ্ট্র ওষুধের জন্য একটি বড় বাজার। সেখানে ওষুধ রফতানির জন্য সুযোগ তৈরি করতে পেরেছি আমরা। এটা শুধু আমাদের জন্য নয়, দেশের জন্যও গুরুত্বপূর্ণ। আমাদের বিশ্বাস, শীঘ্রই যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে আমাদের ওষুধের শক্তিশালী বাজার তৈরি করতে পারব। উল্লেখ্য, ১৯৭৬ সালে প্রতিষ্ঠিত বেক্সিমকো ফার্মাসিউটিক্যালস লিমিটেড এখন ৫০টিরও বেশি দেশে ওষুধ রফতানি করছে। কোম্পানিটি লন্ডন, ঢাকা ও চট্টগ্রাম স্টক একচেঞ্জে তালিকাভুক্ত।
×