ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

বড়পুকুরিয়ায় বিদ্যুৎ ইউনিটের নির্মাণ কাজ দ্রুতগতিতে

প্রকাশিত: ১৯:৩৬, ২৪ জুলাই ২০১৬

বড়পুকুরিয়ায় বিদ্যুৎ ইউনিটের নির্মাণ কাজ দ্রুতগতিতে

নিজস্ব সংবাদদাতা ,পার্বতীপুর ॥ বড়পুকুরিয়া তাপ বিদ্যুৎ কেন্দ্রে ২৭৫ মেগাওয়াট উৎপাদন ক্ষমতার ৩ নম্বর ইউনিট স্থাপন কাজ দ্রুত গতিতে এগিয়ে চলছে। ২০১৮ সালের জুলাই মাসের মধ্যে ইউনিটটি উৎপাদনে যাওয়ার কথা। ইতোমধ্যেই নতুন ইউনিটটির ৪০ শতাংশ কাজ শেষ হয়েছে। প্রকল্প বাস্তবায়ন শেষে উৎপাদনে গেলে বড়পুকুরিয়া ২৫০ মেগাওয়াট কয়লাভিত্তিক তাপ বিদ্যুৎ কেন্দ্রের উৎপাদন ক্ষমতা ৫২৫ মেগাওয়াটে উন্নীত হবে। এটি বিদ্যুৎ সেক্টরে সাফল্যের আরেক ধাপ অগ্রগতি। এরফলে দেশের উত্তর-পশ্চিম জোনের বিদ্যুতের চাহিদা পুরন সহ লোভোল্টেজ জনিত সমস্যা কমে আসবে। পার্বতীপুরে বড়পুকুরিয়া কয়লা খনি থেকে উৎপাদিত কয়লা জ¦ালানি হিসেবে ব্যবহার করে খনিমুখে ২৫০ মেগাওয়াট ক্ষমতার একটি বিদ্যুৎ কেন্দ্র রয়েছে । এখানে রয়েছে ১২৫ মেগাওয়াট ক্ষমতার দুটি বিদ্যুত ইউনিট । এই চত্বরেই ২৭৫ মেগাওয়াট ক্ষমতাসম্পন্ন ৩ নম্বর ইউনিট স্থাপিত হচ্ছে। সুত্রমতে, ২৭৫ মেগাওয়াট ক্ষমতার ৩ নম্বর ইউনিটটি বাস্তবায়ন করছেন চীনের ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান জয়েন্ট ভেঞ্চার অব হারবিন ইলেকট্রিক ইন্টারন্যাশনাল ও সিসিসি ইঞ্জিনিয়ারিং কোম্পানী লিমিটেড। ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান গত বছরের জুলাই মাস থেকে প্রকল্প বাস্তবায়ন কাজ শুরু করে। সরেজমিন প্রকল্প এলাকায় গিয়ে দেখা যায়, বড়পুকুরিয়া তাপ বিদ্যুৎ কেন্দ্রের মুল ভবন (বয়লার ও মেশিন হাউজ) সংলগ্ন উত্তর পাশে ৩ নম্বর ইউনিটের বয়লার, টারবাইন, চিমনি নির্মাণের পাইলিং সহ সিভিল ওয়ার্ক প্রায় শেষ পর্যায়ে। মেইন ভবন ও বয়লার হাউজের স্টীল স্টাকচার, ২২০ মিটার চিমনি নির্মাণ সহ অন্যান্য কাজ পুরোদমে চলছে। বৃষ্টির মধ্যে ভিজে চীনা প্রকৌশলী, বিউবোর কর্মকর্তা-কর্মচারী ও দেশী শ্রমিকরা কাজে ব্যস্ত। এখানে কথা হয় ৩ নম্বর ইউনিট বাস্তবায়ন প্রকল্পের প্রকল্প পরিচালক (পিডি) চৌধুরী নুরুজ্জামানের সাথে। তিনি জনকন্ঠকে জানান চলতি জুলাই মাসের মধ্যে ৩০ শতাংশ কাজের টার্গেটের বিপরীতে ৪০ শতাংশ কাজ সম্পন্ন হয়েছে। প্রায় ১ হাজার দেশী শ্রমিক, প্রায় ২৫০ জন চীনা প্রকৌশলী ও বিউবোর কর্মকর্তা-কর্মচারীরা দিনরাত কাজ করায় তা সম্ভব হয়েছে। বিদেশ থেকে আমদানীকৃত ৯০ শতাংশ যন্ত্রপাতিও প্রকল্প এলাকায় চলে এসেছে। অবশিষ্ট ১০ শতাংশ যন্ত্রপাতি আগামী মাসে প্রকল্প এলাকায় চলে আসবে। ২০১৮ সালের জুন মাসের মধ্যে ইউনিটটি উৎপাদনে যাওয়ার কথা থাকলেও যে গতিতে কাজ চলছে তাতে করে নির্ধারিত সময়ের কমপক্ষে ৪ মাস আগেই প্রকল্প বাস্তবায়ন শেষে ইউনিটটি উৎপাদনে যাবে বলে তিনি আশা করছেন। এতে করে উৎপাদিত বিদ্যুৎ জাতীয় গ্রীডে যোগ হয়ে ট্রান্সমিশন লস কমাবে। ৩ নম্বর ইউনিটটি চালু রাখতে প্রতিদিন গড়ে প্রায় ২ হাজার টন হিসেবে বছরে প্রায় ৭ লাখ টন কয়লার প্রয়োজন হবে। এতে করে বড়পুকুরিয়া খনির কয়লার সর্বোত্তম ব্যবহার নিশ্চিত করা যাবে বলে তিনি মনে করেন। প্রকল্প ব্যয় ধরা হয়েছে ২ হাজার ৬৮৭ কোটি টাকা। এরমধ্যে ১ হাজার ৮৩৫ কোটি টাকা বৈদেশীক মুদ্রা ও ৮৫২ কোটি টাকা দেশীয় মুদ্রা রয়েছে। এতে প্রতি কিলোওয়াট স্থাপন ব্যয় হবে প্রায় ১ হাজার ২০০ মার্কিন ডলার। ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানের সাথে পিডিবি’র চুক্তি স্বাক্ষর হয় ২০১৩ সালের ৪ জুলাই। চুক্তি কার্যকর হয় ২০১৫ সালের ১৫ জুলাই এবং চুক্তি কার্যকরের পর পরই প্রকল্প বাস্তবায়ন কাজ শুরু হয়। চুক্তি কার্যকরের দিন থেকে প্রকল্প বাস্তবায়নের মেয়াদ ৩ বছর ধরা হয়েছে।
×