ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

* সাক্ষ্যপ্রমাণের অভাব ;###;* তদন্তে দীর্ঘসূত্রতা ;###;* রাজনৈতিক বিবেচনায় ;###; মামলা প্রত্যাহার

বরিশালের রাজনৈতিক হত্যাকা-ের বিচার হয়নি যে কারণে!

প্রকাশিত: ০৪:২০, ২৩ জুলাই ২০১৬

বরিশালের রাজনৈতিক হত্যাকা-ের বিচার হয়নি যে কারণে!

স্টাফ রিপোর্টার, বরিশাল ॥ স্বাধীনতার পর থেকে অদ্যাবধি বরিশালের অর্ধশতাধিক রাজনৈতিক হত্যাকা-ের কোনো বিচার হয়নি। সাক্ষ্যপ্রমাণের অভাব, তদন্তে দীর্ঘসূত্রতা ও রাজনৈতিক বিবেচনায় মামলা প্রত্যাহার হওয়ায় খুন হওয়া ব্যক্তির পরিবার-পরিজনেরা স্বজন হারানোর বিচার পাচ্ছেন না। ফলে খুনীরা বহাল তবিয়তে থেকে একের পর এক অপর্কমে জড়িয়ে পড়ছে। সূত্রমতে, ১৯৭৩ সালে বিএম কলেজ ক্যাম্পাসে সংঘটিত সদরুল-নজরুল ও সমরেশ হত্যাকা-ের মধ্য দিয়ে বরিশাল নগরীতে খুনের রাজনীতি শুরু হয়। ওই তিনটি হত্যাসহ গত ৪৩ বছরে অসংখ্য রাজনৈতিক নেতাকর্মী খুন হলেও অধিকাংশেরই বিচার হয়নি। বিএম কলেজের ওই তিন ছাত্রনেতা হত্যার পর ২০০২ সালের ২৪ জানুয়ারি হত্যা করা হয় বরিশাল কলেজের ভিপি ছাত্রলীগ নেতা সাইদুর রহমান ফারুককে। তৎকালীন ক্ষমতাসীন বিএনপির অভ্যন্তরীণ কোন্দলে খুন হয় দুর্ধর্ষ সন্ত্রাসী ট্যারা শাজাহান ও পুলিশ কামাল। ১৯৯৬ থেকে ২০০১ সাল পর্যন্ত বিএনপি বিরোধী দলে থাকলেও অভ্যন্তরীণ কোন্দল থেকে বের হতে পারেনি। তখন দলের চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়ার বরিশাল আগমনের পূর্বরাতে দলীয় কোন্দলে সার্কিট হাউজে দু’গ্রুপের বন্দুকযুদ্ধে নিহত হয় মুদী শাহীন। ১৯৭৮ সালে বরিশাল টেক্সটাইল মিলের শ্রমিক নেতা আব্দুস সালাম খুন হন। প্রকাশ্য দিবালোকে ওই খুনের ঘটনা নগরীর সবাই জানলেও পুলিশ ফাইনাল রিপোর্ট দিয়ে দেয়। ১৯৯৫ সালে খুন হয় ছাত্রলীগ নেতা সোহেল। এরপর আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসার পর ১৯৯৬ থেকে ২০০১ সাল পর্যন্ত খুন হয় বিএনপি কর্মী রাহাত, নগরীর কাউনিয়া এলাকার জহির। ২০০২ সালের ৭ মার্চ অজ্ঞাত পরিচয়ের ৭/৮ জন সন্ত্রাসীদের ছোড়া গুলিতে খুন হন কাউনিয়া ক্লাব রোড এলাকার ঠিকাদার আজাহার গাজী। একই বছর নগরীর পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটের অধ্যক্ষের পুত্র আদনান সামির গালিবকে প্রতিপক্ষের লোকজনে হত্যা করে। ২০০১ সালে বিএনপির চারদলীয় জোট সরকারের সময় নগরীর আমানতগঞ্জ এলাকার ছাত্রলীগ নেতা মাসুম সিকদার, আগৈলঝাড়ার বাশাইলের ইউপি সদস্য আলাউদ্দিন মোল্লা, সরকারী গৌরনদী কলেজ ছাত্রলীগের প্রচার সম্পাদক সফিকুল ইসলাম বুলেট রাজনৈতিক প্রতিপক্ষের হাতে নির্মমভাবে খুন হয়েছেন। ২০০৩ সালের ২২ জুন আলাউদ্দিনকে অপহরণ করে হত্যা, ২০০১ সালের ২২ নবেম্বর সফিকুল ইসলাম বুলেটকে গৌরনদী বন্দরে বসে প্রকাশ্য দিবালোকে পিটিয়ে হত্যা ও একইবছর ছাত্রলীগ নেতা মাসুম সিকদারকে কুপিয়ে হত্যা করা হলেও মামলায় পুলিশ ফাইনাল চার্জশীট দাখিল করায় আসামিরা সবাই খালাস পেয়ে যায়। হিজলার যুবদল নেতা দ্বীন ইসলাম হত্যার ঘটনায় মামলা দায়ের করা হলেও কোন বিচার হয়নি। উজিরপুরের জল্লা ইউনিয়নের চেয়ারম্যান অবনী বাড়ৈ, ওয়ার্কার্স পার্টির নেতা বাবু লাল শীল, বাবুগঞ্জের কাসেম সরদারসহ বেশ কয়েকটি রাজনৈতিক হত্যাকা-ের বিচার হয়নি। সূত্রমতে, আলোচিত রাজনৈতিক হত্যাকা-ের মধ্যে যেসব শীর্ষ নেতা প্রাণ হারিয়েছেন তারমধ্যে রয়েছেন জুলু, সাইফুল্লাহ, সালেহ আহমেদ, রতন চৌধুরী, মোতাহার মাস্টার, মির্জা মানিক এবং ওবায়দুল হক বাবুল।
×