ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

বরিশাল নগরীর অধিকাংশ সড়ক চলাচলের অনুপযোগী

প্রকাশিত: ০৪:১৯, ২৩ জুলাই ২০১৬

বরিশাল নগরীর অধিকাংশ সড়ক  চলাচলের অনুপযোগী

খোকন আহম্মেদ হীরা, বরিশাল ॥ নগরীর সিএ্যান্ডবি সড়ক থেকে কালু খাঁ সড়কের সিকদারপাড়া পর্যন্ত প্রায় এক কিলোমিটার সড়কে খানাখন্দ রয়েছে ১০৯টি। ওই সড়কের বাসিন্দা ইসমাইল হোসেন এই তথ্য জানিয়ে বলেন, বর্ষা মৌসুমে খানাখন্দে বৃষ্টির পানি জমে থাকায় ওই সড়ক দিয়ে যানবাহন চলাচল ঝুঁকিপূর্ণ হওয়ার পাশাপাশি পথচারীদের চরম দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। এ সমস্যা সমাধানের জন্য সিটি কর্পোরেশনের কাছে এলাকাবাসী একাধিকবার ধর্ণা দিয়েও কোন সুফল পায়নি। এমনকি নগরীর প্রাণকেন্দ্র সদর রোড দিয়ে হাঁটা বা যানবাহন চলানো কষ্টকর হয়ে পড়েছে। যাত্রীদের নাকাল হতে হয় খানাখন্দে পড়ে গাড়ির ছিটানো পানিতে আর গাড়িগুলোকে নাজেহাল হতে হয় খানাখন্দের জন্য। সূত্রমতে, ৪৫ বর্গকিলোমিটার আয়তনের নগরীর সব সড়কের অবস্থাই সিকদারপাড়া বা সদর রোডের মতো। খানাখন্দ সৃষ্টি হয়ে সড়কগুলো যানবাহন চলাচলের অনুপযোগী হয়েছে অনেক আগে। চলতি বর্ষা মৌসুমে বৃষ্টির পানি জমে পথচারীদের চলাচলও দায় হয়ে গেছে নগরীর সড়কপথে। একই অবস্থা নগরীর মধ্যে থাকা সড়ক ও জনপথ বিভাগের ৫ কিলোমিটার সড়কেরও। নগরীর প্রাণকেন্দ্র সদর রোড। গত তিন বছরে সড়কটি সংস্কার করা হয়নি। জেলা স্কুল মোড় থেকে নাজিরেরপুল পর্যন্ত প্রায় দেড় কিলোমিটারের এই সড়কে কতশত খানাখন্দ রয়েছে তার কোন ইয়ত্তা নেই। এ সড়কটির মতোই অবস্থা নগরীর অন্যতম ব্যস্ততম সড়ক লঞ্চঘাট, ফজলুল হক এ্যাভিনিউ, পোর্ট রোড, হাটখোলা, কালিবাড়ি সড়ক, বাজার রোড, মল্লিক রোড, উত্তর মল্লিক রোডসহ অন্যান্য সড়ক। সিটি কর্পোরেশনের বিদায়ী প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা রণজিৎ কুমার দাস বলেন, বর্ষা মৌসুমের জন্য নগরীর সড়কের স্থায়ী সংস্কার করা যাচ্ছে না। তবে সাময়িক সংস্কার করার নির্দেশ দেয়া হয়েছে। নগরীর মুদি ও মনোহারির প্রধান পাইকারি বাজার হচ্ছে বাজার রোড ও হাটখোলা। ড্রেনেজ ব্যবস্থার দুর্বলতার জন্য বৃষ্টির পানি জমে হাটখোলার মধ্যখানে জলাশয়ের সৃষ্টি হয়েছে। সেখানকার ব্যবসায়ীরা সড়ক এবং ড্রেনেজ সমস্যার প্রতিকার চেয়ে গত রবিবার সিটি মেয়র আহসান হাবীব কামালের সাথে সাক্ষাত করেছেন। হাটখোলা ব্যবসায়ী সমিতির সাধারণ সম্পাদক হুমায়ুন হাওলাদার বলেন, ড্রেনেজ সমস্যার জন্য হাটখোলায় বর্ষায় জলাবদ্ধতা হচ্ছে। এর প্রতিকারের জন্য তারা মেয়রের সঙ্গে সাক্ষাত করেছেন। মেয়র ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের আশ্বাস দিয়েছেন। নগরীর প্রবেশদ্বার গড়িয়ারপাড় মোড় থেকে নথুল্লাবাদ কেন্দ্রীয় বাস টার্মিনাল, সিএ্যান্ডবি রোড, সাগরদী বাজার, রূপাতলী কেন্দ্রীয় বাস টার্মিনাল হয়ে কলিজিরা সেতু পর্যন্ত সড়ক হলো সওজের আওতাধীন। এরমধ্যে সাগরদী বাজার থেকে রূপাতলী বাস টার্মিনাল পর্যন্ত সড়কটি যানবহন চলাচলের অনুপযোগী হয়ে পড়েছে। অথচ বরিশাল থেকে পর্যটনকেন্দ্র কুয়াকাটাসহ খুলনা, বাগেরহাট, পিরোজপুর, ঝালকাঠী, বরগুনা ও পটুয়াখালী জেলায় আসা-যাওয়া করতে হলে এই সড়কটিই ব্যবহার করতে হয়। নগরীর স্কুল শিক্ষিকা সাদিয়া আফরিন জানান, সাগরদী বাজার ও রূপাতলী বাস টার্মিনালের দূরত্ব আধাকিলোমিটার। খানাখন্দের কারণে এই সড়কে যানজট এখন নিত্যদিনের ঘটনা। রিকশায় সাগরদী থেকে আধাকিলোমিটার পথ অতিক্রম করতে আধাঘণ্টা সময় ব্যয় হয়। এ ব্যাপারে সওজের নির্বাহী প্রকৌশলী মোঃ খালেদ সাহেদ বলেন, নগরীর মধ্যে থাকা সওজের সড়ক সংস্কারের উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছে। খুব শীগ্রই এ কাজ শুরু করা হবে।
×