ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

গৃহিণীরা অগ্নিশর্মা কথা বলার ওপর ট্যাক্স ॥ তরুণ মুঠোফোন ব্যবহারকারীরা বেজায় নাখোশ!

প্রকাশিত: ০৫:১৯, ৪ জুন ২০১৬

গৃহিণীরা অগ্নিশর্মা কথা বলার ওপর ট্যাক্স ॥ তরুণ  মুঠোফোন ব্যবহারকারীরা বেজায়  নাখোশ!

সমুদ্র হক ॥ যারা হৃদয়ের কথা বলিতে ব্যাকুল....অর্থমন্ত্রী এবারও তাদের তো কিছু শুধালেন না, তাদের দিকে তাকালেনও না। চকোলেট রঙের ব্রিফকেস থেকে যা বের করে আনলেন তাতে প্রণয়সহ সকল ধরনের ভালবাসার দামও বেড়ে গেল। সেলফোনের (মোবাইল ফোন) ভোক্তারা মন্ত্রীর ওপর বেজার হয়ে বলছেন ‘অর্থমন্ত্রী কি কাজটি ঠিক করেছেন।’ প্রণয়ের মানুষ রোমান্টিক কথা বলতে গিয়ে সম্পূরক চলতি করের সঙ্গে বাড়তি দুই পয়সার হোঁচট খেয়ে কথামালার খেয়ার তরীকে তীরে ভেড়াতে স্র্রোতের পাকে পড়তে হবে। আত্মীয়-স্বজন বন্ধুবান্ধবরা আলোকিত কথার লোডশেডিং শুরু করে দেবে। এতেও মন ভরবে না। বাবা-মা অভিভাবকরা তাদের সন্তানের খোঁজ খবর নিতে গিয়ে জীবনের অঙ্কের হিসাব কষবেন। এতকাল যা ছিল সরল অঙ্ক সেই যোগ বিয়োগ আর পূরণ ভাগের হিসাব মেলানো যে মোটেও সরল নয় তাও চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দিলেন অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত। বাজেট উপস্থাপনের দু’দিন আগেই টেলিযোগাযোগ প্রতিমন্ত্রী তারানা হালিমের বায়োমেট্রিক রিরেজিস্ট্রেশন পরীক্ষায় ১০ দশমিক ৮১ কোটিরও বেশি সেলফোনের সিম পাস করেছে। প্রায় ১১ কোটি সিম প্রতিদিন গড়ে দশবার করে প্রতিবার গড়ে ৫ মিনিট করে কথা বললে প্রতি মিনিটের সম্পূরক করের বাড়তি দুই পয়সা করে দিলে কত হয় হিসাব কষে নিন। বর্তমানে প্রতিটি প্রতি মিনিটের কলে ১৫ শতাংশ ভ্যালু এ্যাডেড ট্যাক্সের (ভ্যাট) সঙ্গে আরও দুটি ট্যাক্স যোগ করা আছে। তা হলো ৩ শতাংশ সম্পূরক শুল্ক ও এক শতাংশ সার চার্জ। এই সম্পূরক শুল্ক ৩ শতাংশ থেকে বাড়িয়ে ৫ শতাংশ করা হয়েছে। এই হিসাবে এক শ’ টাকায় আগে দিতে হতো ১শ’ ১৯ টাকা ৪৫ পয়সা। বাড়তি সম্পূরক কর যোগ হলে তা হবে ১শ’ ২১ টাকা ৭৫ পয়সা। অঙ্কটি সাধারণ চোখে হয়ত কম মনে হবে। তবে ১১ কোটি মোবাইল ফোনের (ফাইন দিয়ে আরও প্রায় ২ কোটি বায়োমেট্রিক রিরেজিস্ট্রেশনের অপেক্ষায়) গ্রাহকদের যোগফলটি কত হবে এবং কত বাড়তি খরচ হবে তাও হিসাব কষে দেখুন। এ ছাড়াও মোবাইল ইন্টারনেট প্রায় ৬ কোটি ও কম্পিউটার ইন্টারনেটের অন্তত ৩ কোটি গ্রাহক আছে। প্রতিবছর বাড়তি ট্যাক্স দেয়ার পরও ২ শতাংশ বাড়তি সম্পূরক কর বোঝার ওপর শাকের আঁটি হয়ে গেছে। মোবাইল ফোনের গ্রাহকেদের ক’জন বললেন, যন্ত্র যুগের মোবাইল যন্ত্রণায় এমনিতেই কথা বলা বেড়ে গেছে। তার ওপর নিত্যবছর করের বোঝা বাড়ছে এই কথা বলার ওপর। যে কোনভাবেই হোক প্রয়োজনেই কথা বলতে হয়। একে তো কলড্রপের যন্ত্রণা। এখন করের জ্বালা। ব্যালেন্স শেষ হতে আর সময় নেয় না। এদিকে এলপিজি সিলিন্ডারের দাম বাড়াতে গৃহিণীরা অগ্নিশর্মা। তারওপর যখন শুনেছে ওয়াশিং মেশিন ও এয়ারকুলারের দাম আমদানি করে এক শতাংশ থেকে বাড়িয়ে ২৫ শতাংশ প্রস্তাব করা হয়েছে তাতে আরও ক্ষেপে গেছে। মধ্যবিত্ত পরিবার যারা কষ্টে সৃষ্টে কাপড় ধোয়া থেকে কিছুটা রেহাই পেতে এবং তীব্র গরমের জ্বালা জুড়াতে এয়ারকুলারের কথা ভাবছিলেন তাদের মাথায় বাজ পড়ার অবস্থা।
×