স্টাফ রিপোর্টার ॥ সিলেট মহানগরীর প্রাণকেন্দ্র হিসেবে বিবেচিত বন্দরবাজার, জিন্দাবাজার ও চৌহাট্টাকে কেন্দ্র করে ‘বিশেষ পরিকল্পনা’ বাস্তবায়ন করতে যাচ্ছে সিলেট সিটি কর্পোরেশন। এই পরিকল্পনার আওতায় আছে পূর্ব জিন্দাবাজার থেকে মির্জাজাঙ্গাল এবং চৌহাট্টা পয়েন্ট থেকে মধুবন পয়েন্ট পর্যন্ত সড়ক। পরিকল্পনা মোতাবেক এ সড়কজুড়ে ভাসমান ব্যবসা বন্ধ করা হবে।
শুধু তাই নয়, এ সড়কজুড়ে কোন অবৈধ স্থাপনা থাকবে না, যত্রতত্র আবর্জনা না ফেলা, রাস্তায় নির্মাণ সামগ্রী না রাখা এবং রাস্তায় পার্কিংয়ের ক্ষেত্রেও নিষেধাজ্ঞা জারি করা হবে। এ পরিকল্পনা কঠোরভাবে বাস্তবায়নে সরেজমিন কাজ করবে সিলেট সিটি কর্পোরেশনের ‘বিশেষ টিম’।
ময়লা আবর্জনা যাতে যত্রতত্র না ফেলা হয় সেজন্য এই সড়কজুড়ে সিলেট সিটি কর্পোরেশনের উদ্যোগে বিশেষ ধরনের অর্ধশতাধিক ‘বিন’ রাখা হবে। পথচারীরা ও বিভিন্ন ব্যবসায়ীরা এ ‘বিন’এ প্যাকেটজাত, বোতলজাত, অপ্রয়োজনীয় কাগজপত্রসহ সকল প্রকার দুর্গন্ধবিহীন ময়লা ফেলতে পারবেন। এছাড়াও পুরো সড়কজুড়ে স্ট্যান্ড সাইনের মাধ্যমে সিটি কর্পোরেশনের সচেতনতামূলক নির্দেশনা প্রচার করা হবে।
সিলেট সিটি কর্পোরেশনের প্রকৌশল শাখা জানায়, জেলরোড পয়েন্ট থেকে জিন্দাবাজার পয়েন্ট হয়ে মির্জাজাঙ্গাল পর্যন্ত এবং চৌহাট্টা পয়েন্ট থেকে জিন্দাবাজার পয়েন্ট হয়ে বন্দরবাজার মধুবন পয়েন্ট পর্যন্ত যেসব পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করা হবে তার ভিত্তিকে একটি খসড়া নকশা ইতোমধ্যেই প্রণয়ন করা হয়েছে। এ সপ্তাহেই তা চূড়ান্ত করা হবে।
সিটি কর্পোরেশনের চীফ কনজারভেন্সি অফিসার হানিফুর রহমান জানান, কনজারভেন্সি সেকশন বিগত দিনে কয়েকটি চ্যালেঞ্জিং কাজ গ্রহণ করে সফল হয়েছে। তাদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য হচ্ছে রাতের মধ্যেই সকল বর্জ্য অপসারণ, মহানগীর গুরুত্বপূর্ণ সড়ক ঝাড়– দেয়া, কোরবানি বর্জ্য ২৪ ঘণ্টার মধ্যে অপসারণ ইত্যাদি।
হানিফুর রহমান জানান, এই পরিকল্পনা বাস্তবায়নও একটি চ্যালেঞ্জিং বিষয় হলেও তা বাস্তবায়ন করতে আমরা বদ্ধপরিকর। এই সড়কজুড়ে গৃহীত পরিকল্পনা বাস্তবায়নের জন্য ‘বিশেষ টিম’ থাকবে। এই টিম দিনরাত ২৪ ঘণ্টা নিয়োজিত থাকবে। কোন ব্যবসা প্রতিষ্ঠান যেন তার নিজের প্রতিষ্ঠানের সামনে বা আশপাশের জায়গায় ময়লা আবর্জনা ফেলে পরিবেশকে নোংরা না করে সেই ব্যাপারেও এই টিম কড়া নজরদারি রাখবে।
এই পরিকল্পনা সম্পর্কে সিলেট সিটি কর্পোরেশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা এনামুল হাবীব সংশ্লিষ্ট সকল মহলের সহযোগিতা প্রত্যাশা করে বলেন, আমাদের পরিকল্পনা বাস্তবায়ন হলে মহানগরীর প্রাণকেন্দ্র হিসেবে বিবেচিত বন্দরবাজার, জিন্দাবাজার ও চৌহাট্টা এলাকার চেহারা বদলে যাবে। রাস্তায় থাকবে না কোন আবর্জনা, প্রশস্ত ফুটপাথ দিয়ে স্বচ্ছন্দে হেঁটে যাবেন নগরবাসী। যত্রতত্র পার্কিং না করার কারণে যানজট থেকেও কিছুটা স্বস্তি পাবেন নাগরিকরা।
এনামুল হাবীব বলেন, নাগরিক সচেতনতা এবং কার্যকর উদ্যোগ গ্রহণের কারণে এশিয়ার অনেক নগরীর রাস্তাঘাট আজ অনেক উন্নত হয়েছে, যা দেখলে চোখ জুড়িয়ে যায়। আমরাও একটু আন্তরিক হলেই সিলেটকে পরিচ্ছন্ন নগরী হিসেবে গড়ে তুলতে পারি।