ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ১১ মে ২০২৪, ২৮ বৈশাখ ১৪৩১

পাঁচ দশকে প্রথম বেসামরিক রাষ্ট্রপ্রধান

মিয়ানমারে নতুন প্রেসিডেন্ট

প্রকাশিত: ০৪:২৩, ১৬ মার্চ ২০১৬

মিয়ানমারে নতুন প্রেসিডেন্ট

মিয়ানমারের নতুন প্রেসিডেন্ট হলেন থিন কিয়াও (৬৯)। মঙ্গলবার পার্লামেন্ট সদস্যদর ভোটে তিনি নতুন প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হন। পার্লামেন্টে অনুষ্ঠিত প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে মোট প্রার্থী ছিলেন তিনজন। থিন কিয়াও হবেন ৫০ বছরের বেশি সময় সেনা শাসনাধীনে থাকা দেশটির প্রথম বেসামরিক প্রেসিডেন্ট। -এএফপি। মিয়ানমারের গণতন্ত্রপন্থী আন্দোলনের নেত্রী নোবেল বিজয়ী আউং সান সুচির ঘনিষ্ঠ থিন কিয়াওই দেশটির নতুন প্রেসিডেন্ট হচ্ছেন তা কয়েকদিন আগেই তার ধারণা পাওয়া যায়। আগামী মাসের ১ তারিখ থেকে নয়া প্রেসিডেন্টের কার্যকাল শুরু হবে। গত বছর ৮ নবেম্বরের সাধারণ নির্বাচনে সুচির নেতৃত্বাধীন ন্যাশনাল লীগ ফর ডেমোক্রেসি (এনএলডি) নিরঙ্কুশ সংখ্যাগোরিষ্ঠতা লাভ করে। সাংবিধানিক কারণে সুচির পক্ষে প্রেসিডেন্ট হওয়া সম্ভব নয়। কারণ জান্তা প্রণীত সংবিধান অনুযায়ী, কারও সন্তান বিদেশী নাগরিক হলে তিনি প্রেসিডেন্ট পদে নির্বাচন করতে পারবেন না। সুচির প্রয়াত স্বামী যুক্তরাজ্যের নাগরিক ছিলেন। তার দুই সন্তানও যুক্তরাজ্যের নাগরিক। মিয়ানমার ৫০ বছরের বেশি সময় সেনা শাসনাধীনে থাকার পর একজন বেসামরিক প্রেসিডেন্ট পেতে চলেছে। এ কারণে ঘটনাটি গণতন্ত্রে উত্তরণের পথে একটি বড় পদক্ষেপ হিসেবে দেখা হচ্ছে। পার্লামেন্টে ৬৫২টি ভোটের মধ্যে তিনি পেয়েছেন ৩৬০টি ভোট। তার অপর দুই প্রতিদ্বন্দ্বী অবসরপ্রাপ্ত জেনারেল মিন্ট সয়ে পেয়েছেন ২১৩ ভোট এবং পার্লামেন্ট সদস্য হেনরি ভান থিওয়াও পেয়েছেন ৭৯ ভোট। পার্লামেন্টের স্পিকার ম্যান উইন খিয়াং এরপর থিন কিয়াও প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হওয়ার ঘোষণাটি দেন। তিনি বিদায়ী প্রেসিডেন্ট থেইন সেইনের স্থলাভিষিক্ত হবেন। সুচির দল ক্ষমতায় এলেও মিয়ানমারের সেনাবাহিনীর প্রভাব ক্ষুণœ হচ্ছে না। পার্লামেন্টের এক চতুর্থাংশ আসন তাদের জন্য বরাদ্দ। থিন কিয়াওয়ের প্রেসিডেন্ট হওয়া নিয়েও সেনাবাহিনীর সঙ্গে সুচির কয়েক দফা আলোচনা হয়েছে। এরপর এনএলডির প্রেসিডেন্ট পদপ্রার্থী হিসেবে তার নাম ঘোষণা করা হয়েছিল। থিন কিয়াও আনুষ্ঠানিকভাবে প্রেসিডেন্ট হলেও অনানুষ্ঠানিকভাবে সুচির হাতেই থাকছে ক্ষমতা। মিয়ানমারের নির্বাচনী ব্যবস্থা অনুযায়ী, পার্লামেন্টের উভয়কক্ষ থেকে একজন করে প্রার্থী প্রেসিডেন্ট পদে নির্বাচনের জন্য দাঁড়াতে হয়। এছাড়া সেনাবাহিনীও তাদের পছন্দ মতো একজন প্রার্থীকে মনোনয়ন দেন। যিনি সবচেয়ে বেশি ভোট পান তিনি প্রেসিডেন্ট ও বাকি দুইজন ভাইস প্রেসিডেন্ট হয়ে থাকেন। নতুন প্রেসিডেন্টের সঙ্গে সুচির সম্পর্ক কি হবে বা তিনি কিভাবে নিজের ক্ষমতা প্রয়োগ করবেন তা এখনও স্পষ্ট নয়। নতুন মন্ত্রিসভার সদস্যদের নাম এ মাসের মধ্যেই ঘোষণা করা হবে। ধারণা করা হচ্ছে বিভিন্ন দলমতের সমম্বয়ে সুচি জাতীয় ঐক্যের পথে অগ্রসর হবেন। বিদ্যমান দারিদ্র্য, গৃহযুদ্ধ, সংখ্যালঘু রোহিঙ্গা জাতিগোষ্ঠী এবং ভেঙ্গে পড়া পুরনো অবকাঠামো নতুন সরকারের সামনে বড় চ্যালেঞ্জ হবে। সুচির ঘনিষ্ঠ হলেও থিন কিয়াওর পরিচিতি নেই। তিনি যুক্তরাজ্যে লেখাপড়া করেছেন, দাও কিন কাই নামে তার একটি দাতব্য প্রতিষ্ঠান রয়েছে। থিন কিয়াওর পিতা মিন থু উন ছিলেন এনএলডির অনেক আগেকার একজন সদস্য এবং দেশটির একজন সুপরিচিত লেখক। স্ত্রী সু সু লুইন দলের একজন পার্লামেন্ট সদস্য।
×