ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ১১ মে ২০২৪, ২৭ বৈশাখ ১৪৩১

তিন যুগ পর মাদারীপুর বিসিক শিল্প নগরী সংস্কারের উদ্যোগ

প্রকাশিত: ০৬:২৮, ১১ মার্চ ২০১৬

তিন যুগ পর মাদারীপুর বিসিক শিল্প নগরী সংস্কারের উদ্যোগ

অর্থনৈতিক রিপোর্টার ॥ মাদারীপুরের অর্থনৈতিক উন্নয়ন ও শিল্পায়নের লক্ষ্যে শহরের তরমুগুরিয়ায় গড়ে তোলা হয় মাদারীপুর বিসিক শিল্পনগরী। ১৬ একর জমি অধিগ্রহণের মাধ্যমে ১৯৮১ সালে শিল্পনগরীটি স্থাপন করে বাংলাদেশ ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্প কর্পোরেশন (বিসিক)। ক্রমান্বয়ে উদ্যোক্তারা ঘুরে দাঁড়ানোর স্বপ্ন নিয়ে এ শিল্পনগরীতে গড়ে তুলেছিলেন শিল্প-কারখানা। কিন্তু বিভিন্ন ধরনের সুযোগ-সুবিধার অভাবে উদ্যোক্তাদের স্বপ্ন ফিকে হয়ে আসে। এই অবস্থায় প্রায় তিন যুগ পর এই শিল্পনগরী সংস্কার ও সম্প্রসারণের উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। শিল্পনগরীসংলগ্ন আড়িয়াল খাঁ নদের তীরে জেগে ওঠা নতুন চরের প্রায় দুই একর খাস জমিতে শিল্প নগরীটি সম্প্রসারণ করা হবে। একই সঙ্গে শিল্পনগরীর সকল ধরনের সমস্যা সমাধান এবং অবকাঠামোর উন্নয়ন করা হবে। এ জন্য শিল্প মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে ‘মাদারীপুর বিসিক শিল্পনগরী সম্প্রসারণ’ শীর্ষক একটি প্রকল্পের ডিপিপি (উন্নয়ন প্রকল্প প্রস্তাবনা) পরিকল্পনা কমিশনে জমা দিয়েছে ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্প কর্পোরেশন। বৃহস্পতিবার প্রকল্পের মূল্যায়ন কমিটি (পিইসি) সভা অনুষ্ঠিত হয়। ডিপিপিতে বলা হয়েছে, শিল্পনগরীটি সম্প্রসারণ করা হলে এখানে অত্যাধুনিক সুযোগ-সুবিধাসহ উন্নতমানের শিল্পপ্রতিষ্ঠান স্থাপন সম্ভব হবে। প্রকল্পের আওতায় গ্যাস, বিদ্যুত, পানি সরবরাহের সুবিধা ও ভাল যোগাযোগ ব্যবস্থা নিশ্চিত করা হবে। পাশাপাশি শিল্পনগরীর রাস্তাঘাট, ড্রেনেজ ব্যবস্থাসহ বিদ্যমান অবকাঠামোর উন্নয়ন করা হবে। এর ফলে নতুন কর্মসংস্থান হবে আরও প্রায় এক লাখ লোকের। ১৯৮০ সালে মূল প্রকল্প (পিপি) অনুমোদনের পর ১৯৮১ সালে তিন পর্বে এবং ১৯৮৫ সালে চতুর্থ পর্বে শহরসংলগ্ন আড়িয়াল খাঁ নদে জেগে ওঠা চরে ১২.৯৬ একর ও হুকুম দখলকৃত ০৩.৩৭ একর জমি মাদারীপুর বিসিক শিল্পনগরীর জন্য অধিগ্রহণ করা হয়। এর মধ্যে ১০.৫৬ একর জমি প্লটভুক্ত, প্রশাসনিক ভবন ০.৮৭ একর, রাস্তা ড্রেন, এ্যাপ্রোচ রোড ও গ্রীন স্পেস হিসেবে রাখা হয় ৪.৯০ একর জমি। প্লটভুক্ত জমিকে ১৩৫টি প্লটে ভাগ করে বরাদ্দযোগ্য ১২৬টি প্লট বিভিন্ন শিল্প ইউনিট মালিকদের ক্রমান্বয়ে বরাদ্দ দেয়া হয়। ৮০ দশকে মাদারীপুর বিসিক শিল্পনগরীতে প্লট নিতে ব্যবসায়ীদের অনাগ্রহ দেখা গেলেও ৯০ দশকের পর থেকে এখানে প্লট বরাদ্দ নিতে আগ্রহী হয়ে ওঠে শিল্প ইউনিট মালিক ও বিভিন্ন শ্রেণী-পেশার মানুষ। বর্তমানে কোন খালি প্লট না থাকায় বিসিক শিল্পনগরীতে শিল্প মালিকদের চাহিদানুযায়ী প্লট বরাদ্দ দেয়া সম্ভব হচ্ছে না। বিসিক সূত্র আরও জানায়, বিসিকসংলগ্ন এসব জমিতে বৈধ-অবৈধ ‘স’ মিল স্থাপন করে কিছু প্রভাবশালী ব্যবসা করছে। এ ছাড়াও ১০-১২টি কাঠের আড়ত বসিয়ে আরও কিছু লোক ব্যবসা করে যাচ্ছে, যাদের তেমন কোন বৈধতা নেই। ফলে সরকার লাখ লাখ টাকা রাজস্ব হারাচ্ছে। পরিকল্পনা কমিশনের শিল্প ও শক্তি বিভাগের ভারপ্রাপ্ত সদস্য আহমদ হোসেন খান বলেন, দেশকে ২০২১ সাল নাগাদ মধ্যম আয়ে নিয়ে যেতে চায় সরকার। এ জন্য শিল্পনগরী স্থাপনের প্রতি জোর দিচ্ছে সরকার। এক্ষেত্রে মাদারীপুর শিল্পনগরী সম্প্রসারণ প্রকল্পটি অনুমোদনযোগ্য বলে তিনি উল্লেখ করেন।
×