ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

খান জিয়াউল হকের আক্ষেপ

প্রকাশিত: ০৩:৪৯, ২৭ ফেব্রুয়ারি ২০১৬

খান জিয়াউল  হকের আক্ষেপ

ভাষাসৈনিক খান জিয়াউল হকের কপালে কোন রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতি জোটেনি। জীবনের শেষপ্রান্তে এসে এ জন্য রয়ে গেছে অতৃপ্তি। জীবিতাবস্থায় কি দেখে যেতে পারবেন স্বীকৃতি? খান জিয়াউল হক ১৯৪৮ সালে যশোর এমএম কলেজের ছাত্র ছিলেন। উর্দুকে রাষ্ট্রভাষা করার ঘোষণা দেয়ার পর যশোরের মাইকেল মধুসূদন কলেজের ছাত্ররা প্রতিবাদ মিছিল করে। সেই মিছিলে খান জিয়াউল হক ছিলেন প্রথম সারিতে। ১৯৪৯ সালে খান জিয়াউল হক এমএম কলেজের ছাত্র সংসদে সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হন। ১৯৫০-এ সভাপতি। ১৯৫২ সালে সারাদেশে যখন ভাষা আন্দোলন তীব্রতর হয়ে ওঠে, তখন তিনি বিএ পরীক্ষার্থী। ১৫ ফেব্রুয়ারির দিকে তিনি বন্ধুদের পরামর্শে নিজ বাড়ি মাগুরায় চলে আসতে বাধ্য হন। মাগুরায় ফিরে আসার পর তিনি যুক্ত হন মাগুরার আন্দোলন সংগঠিত করার কাজে। ২৩ ফেব্রুয়ারি সকালে মাগুরা শহরের সেগুনবাগিচায় আবু মিয়ার সভাপতিত্বে সমাবেশ হয়। সমাবেশ শেষে মিছিল নিয়ে এগিয়ে চৌরঙ্গী মোড়ে আসতেই পুলিশ লাঠিচার্জ করে ছত্রভঙ্গ করে দেয়। অন্যরা নিরাপদ স্থানে সরে গেলেও খান জিয়াউল হক, জলিল খান এবং আমিনুল ইসলাম চান্দু মিয়া পুলিশের হাতে ধরা পড়েন। খান জিয়াউল হক মাগুরার এজি একাডেমি স্কুলের প্রধান শিক্ষক ছিলেন। জড়িত ছিলেন সামাজিক ও সংস্কৃতিক সংগঠনের সঙ্গে। স্কাউটসের সর্বোচ্চ সম্মান রৌপ্যব্যঘ্র, জাতীয় সমাজসেবা পুরস্কার, শ্রেষ্ঠ প্রধান শিক্ষক, নরেন বিশ্বাসপদক, আবদুল হক স্বর্ণপদকসহ জাতীয় ও স্থানীয় পর্যায়ে অসংখ্য পদক ও সম্মাননায় ভূষিত হয়েছেন। জীবনের শেষ বেলায় এসে খান জিয়াউল হকের আক্ষেপ, ভাষাসৈনিকদের রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতি দেয়া হয়নি। -সঞ্জয় রায় চৌধুরী, মাগুরা থেকে
×