ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ১১ মে ২০২৪, ২৭ বৈশাখ ১৪৩১

৬ মাসে রফতানির লক্ষ্যমাত্রা অতিক্রম

হিমায়িত মৎস্য রফতানি ১৯ শতাংশ হ্রাস

প্রকাশিত: ০৪:২৬, ৭ জানুয়ারি ২০১৬

হিমায়িত মৎস্য রফতানি ১৯ শতাংশ হ্রাস

অর্থনৈতিক রিপোর্টার ॥ লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে এগিয়ে গেলেও হিমায়িত মৎস্য রফতানি কমেছে প্রায় সাড়ে ১৯ শতাংশ। ২০১৫-১৬ অর্থবছরের জুলাই-ডিসেম্বরের মধ্যে হিমায়িত খাদ্য ও মৎস্য রফতানি ইতিবাচক ধারা লক্ষ্য করা গেছে। অর্থবছরের প্রথম ৬ মাসে পূর্বনির্ধারিত লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে ৪ দশমিক ৩৯ শতাংশ বেশি বৈদেশিক মুদ্রা আয় হয়েছে এই খাতে। বর্তমানে বিশ্ব অর্থনীতি অপ্রত্যাশিত শ্লথগতিতে চলছে। এ শ্লথগতির পেছনে অন্যতম কারণ হিসেবে চাহিদার দুর্বলতাকে দায়ী করা হচ্ছে। দেশের চিংড়ি রফতানি কমার পেছনেও আন্তর্জাতিক চাহিদার দুর্বলতাকে দায়ী করা হচ্ছে। রফতানি কমার অর্থ আয় কমা। আয় কমায় স্বাভাবিকভাবে বিপাকে পড়েছেন চিংড়ি ব্যবসায় যুক্ত ব্যক্তিরা। এমন পরিস্থিতিতে যে কোন ধরনের জালিয়াতি চিংড়ি রফতানিতে আরও বড় বাধা তৈরি করতে পারে বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা। বাংলাদেশ রফতানি উন্নয়ন ব্যুরোর (ইপিবি) তথ্য অনুযায়ী, ২০১৪-১৫ অর্থবছরে হিমায়িত খাদ্য এবং মৎস্য জাতীয় পণ্য রফতানি করে আয় হয়েছিল ৫৬ কোটি ৮০ লাখ মার্কিন ডলার। চলতি অর্থবছরে এই খাতে রফতানি লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে ৫৭ কোটি ৮০ লাখ মার্কিন ডলার। ২০১৫-১৬ অর্থবছরের প্রথম ৬ মাসে ২৭ কোটি ৩৭ লাখ ৩০ হাজার মার্কিন ডলারের হিমায়িত খাদ্য এবং মৎস্য জাতীয় পণ্য রফতানি লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছিল। আলোচ্য সময়ে এই খাতে আয় হয়েছে ২৮ কোটি ৫৭ লাখ ৬০ হাজার মার্কিন ডলার; যা লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে ৪ দশমিক ৩৯ শতাংশ বেশি। অন্যদিকে গত অর্থবছরের জুলাই-ডিসেম্বরের মধ্যে হিমায়িত খাদ্য এবং মৎস্য জাতীয় পণ্য রফতানি করে আয় হয়েছিল ৩৫ কোটি ৫০ লাখ ৩০ হাজার মার্কিন ডলার। অর্থাৎ গত অর্থবছরের প্রথম ৬ মাসের তুলনায় চলতি অর্থবছরের প্রথম ৬ মাসে এই খাতে পণ্য রফতানি ১৯ দশমিক ৫১ শতাংশ কমেছে। চলতি অর্থবছরের প্রথম ৬ মাসে ২৪ কোটি ৩৮ লাখ ৯০ হাজার মার্কিন ডলারের চিংড়ি রফতানির লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছিল। এই খাতে আয় হয়েছে ২৫ কোটি ১২ লাখ ৫০ হাজার মার্কিন ডলার; যা লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে ৩ দশমিক ০২ শতাংশ বেশি। লক্ষ্যমাত্রা অর্জিত হলেও গত অর্থবছরের একই সময়ের তুলনায় ২২ দশমিক ৪০ শতাংশ কম আয় হয়েছে চিংড়ি রফতানিতে। গত ২০১৪-১৫ অর্থবছরের প্রথম ৬ মাসে এই খাতে আয় হয়েছিল ৩২ কোটি ৩৭ লাখ ৬০ হাজার মার্কিন ডলার। ২০১৫-১৬ অর্থবছরের জুলাই-ডিসেম্বরের মধ্যে অন্যান্য মাছ রফতানিতে আয় হয়েছে ৪৬ লাখ ৮০ হাজার মার্কিন ডলার; যা লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে ২২৯ দশমিক ৫৮ শতাংশ বেশি। আলোচ্য সময়ে এই খাতে বৈদেশিক মুদ্রা আয়ের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছিল ১৪ লাখ ২০ হাজার মার্কিন ডলার। ২০১৪-১৫ অর্থবছরের প্রথম ৬ মাসে অন্যান্য মাছ রফতানিতে আয় হয়েছিল ১৬ লাখ ৫০ হাজার মার্কিন ডলার। চলতি অর্থবছরের প্রথম ৬ মাসে হিমায়িত খাদ্য রফতানির লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছিল ২ কোটি ৩৬ লাখ ৮০ হাজার মার্কিন ডলার। আলোচ্য সময়ে এই খাতে আয় হয়েছে ২ কোটি ৫৫ লাখ ৪০ হাজার মার্কিন ডলার; যা লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে ৭ দশমিক ৮৫ শতাংশ বেশি। সেইসঙ্গে গত অর্থবছরের একই সময়ের তুলনায়ও ১০ দশমিক ১৮ শতাংশ বেশি আয় হয়েছে এ খাতে। ২০১৪-১৬ অর্থবছরের প্রথম ৬ মাসে হিমায়িত খাদ্য রফতানিতে আয় হয়েছিল ২ কোটি ৩১ লাখ ৮০ হাজার মার্কিন ডলার। আলোচ্য সময়ে অন্যান্য হিমায়িত খাদ্য রফতানিতে আয় হয়েছে ৪১ লাখ ৫০ হাজার মার্কিন ডলার; যা লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে ১২ দশমিক ৪৫ শতাংশ কম। একইসঙ্গে গত অর্থবছরের একই সময়ের তুলনায় ৩৫ দশমিক ৫৬ শতাংশ কম বৈদেশিক মুদ্রা আয় হয়েছে এ খাতে। গত ২০১৪-১৫ অর্থবছরে অন্যান্য হিমায়িত খাদ্য রফতনি করে আয় হয়েছিল ৬৪ লাখ ৪০ মার্কিন ডলার। রফতানি মূল্যের কারণে চিংড়িকে আমাদের দেশে হোয়াইট গোল্ড বা সাদা সোনা বলা হয়। নামকরণ থেকে চিংড়ি রফতানির গুরুত্ব সহজেই অনুমেয়। রফতানি আয়ের দিক থেকে তৈরি পোশাক খাতের পরই হিমায়িত চিংড়ি ও মৎস্য খাতের অবস্থান। এ খাত থেকে আমাদের প্রতিবছর রফতানি আয় আসে প্রায় ৬০ কোটি ডলার। আর এ খাতে সঙ্গে জড়িত প্রায় কোটি লোক।
×