ঢাকা, বাংলাদেশ   সোমবার ২৩ জুন ২০২৫, ৯ আষাঢ় ১৪৩২

প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের লীলাভূমি গজনী অবকাশ কেন্দ্র

মো: সাফিজল হক তানভীর, কন্ট্রিবিউটিং রিপোর্টার, শেরপুর

প্রকাশিত: ০৯:৫৭, ২৩ জুন ২০২৫

প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের লীলাভূমি গজনী অবকাশ কেন্দ্র

ছবি: জনকণ্ঠ

শেরপুর জেলার ঝিনাইগাতী উপজেলার সীমান্তবর্তী গারো পাহাড়ের পাদদেশে অবস্থিত গজনী অবকাশ কেন্দ্র এখন দেশের অন্যতম জনপ্রিয় পর্যটনকেন্দ্র। প্রাকৃতিক সৌন্দর্য আর কৃত্রিম বিনোদন কেন্দ্রের অসাধারণ সমন্বয়ে গড়ে ওঠা এ স্থান প্রতিদিনই ভ্রমণপিপাসুদের মন জয় করে নিচ্ছে।

শেরপুর জেলার কাংশা ইউনিয়নের সীমান্তবর্তী এলাকায় প্রায় ৯০ একর জায়গা জুড়ে গড়ে তোলা গজনী অবকাশ কেন্দ্রটি ১৯৯৩ সালে জেলা প্রশাসনের উদ্যোগে প্রতিষ্ঠিত হয়। এখানে রয়েছে শাল, সেগুন, গজারী, মহুয়া গাছে ভরা গভীর বনাঞ্চল, পাহাড়ি ঝর্ণাধারা, কৃত্রিম জলাধার, প্রাণিজ ভাস্কর্য, ওয়াচ টাওয়ারসহ নানা আকর্ষণীয় স্থাপনা।

প্রবেশপথেই চোখে পড়ে বিশাল ডাইনোসর, জলপরী, মৎস্যকন্যা, জিরাফ ও হাতির ভাস্কর্য। রয়েছে রংধনু সেতু, দোলায়মান ঝুলন্ত ব্রিজ, সুড়ঙ্গপথ, পদ্মসিঁড়ি, প্যাডেল বোটের ব্যবস্থা এবং ক্যাবল কার। দর্শনার্থীদের জন্য নির্মিত হয়েছে ৬৪ ফুট উঁচু সাইট ভিউ টাওয়ার, যা থেকে চারপাশের দৃশ্য দেখা যায়। এছাড়া একটি ক্ষুদ্র চিড়িয়াখানা ও আদিবাসী সংস্কৃতি জাদুঘরও রয়েছে।

ঢাকা থেকে সরাসরি শেরপুর আসতে সময় লাগে প্রায় ৫ ঘণ্টা। মহাখালী বাসস্ট্যান্ড থেকে নন-এসি বাসে ভাড়া ৪০০ থেকে ৬০০ টাকা। শেরপুর শহর থেকে গজনী অবকাশ কেন্দ্রে যেতে লোকাল বাস, সিএনজি বা মোটরবাইকে যেতে সময় লাগে ৪৫ থেকে ৫০ মিনিট। জনপ্রতি ভাড়া ৭০ থেকে ৮০ টাকা। প্রবেশমূল্য মাত্র ১০ থেকে ২০ টাকা, আর গাড়ির জন্য নির্ধারিত ফি রয়েছে।

থাকা ও বিশ্রামের জন্য গজনী অবকাশ কেন্দ্রেই রয়েছে ছয় কক্ষবিশিষ্ট রেস্ট হাউজ, যেখানে দিনের বেলায় অবস্থান করা যায়। ঝিনাইগাতী ও শেরপুর শহরে বিভিন্ন হোটেল-গেস্ট হাউজেও রাত্রিবাসের ভালো ব্যবস্থা রয়েছে।

পর্যটকদের জন্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে রয়েছে পর্যাপ্ত আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর নজরদারি। তবে সীমান্তসংলগ্ন হওয়ায় পর্যটকদের সতর্ক থাকা এবং সীমান্তের বাইরে না যাওয়ার নির্দেশনা রয়েছে।

জেলা প্রশাসনের ভাষ্যমতে, প্রতিবছর লাখো পর্যটক এখানে আসেন। এ কেন্দ্রটির আরও সম্প্রসারণ এবং আবাসন সুবিধা বাড়ানোর পরিকল্পনা রয়েছে।

শীতকাল গজনী ভ্রমণের জন্য আদর্শ সময়। প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের মাঝে পরিবার-পরিজন নিয়ে একদিন কাটাতে চাইলে গজনী হতে পারে উত্তম গন্তব্য।

মুমু ২

×