
ছবি: জনকণ্ঠ
বরিশালের প্রাণকেন্দ্রে দাঁড়িয়ে থাকা একসময়ের ঐতিহ্যবাহী জ্ঞানকেন্দ্র বরিশাল পাবলিক লাইব্রেরি আজ পরিণত হয়েছে একটি মৃতপ্রায় স্থাপনায়। ১৮৫৪ সালে প্রতিষ্ঠিত এই লাইব্রেরিটি ছিল পাঠকপ্রেমী মানুষের এক নির্ভরযোগ্য ঠিকানা, যেখানে নিয়মিত পাঠচর্চা ও জ্ঞানের আদান-প্রদান হতো। লাইব্রেরিটিতে এক সময়ে জ্ঞানের সাধক আরজ আলী মাতুব্বরের মতো গুণীজনদের পদচারণাও ছিল।
কিন্তু সময়ের সঙ্গে সঙ্গে উপেক্ষা, অব্যবস্থাপনা এবং দেখভালের অভাবে লাইব্রেরিটি এখন জরাজীর্ণ অবস্থায় পরে আছে। লাইব্রেরির ভিতরে তাকভর্তি পড়ে থাকা কয়েক হাজার বইয়ে জমেছে ধুলোর আস্তরণ; বহু গ্রন্থে ধরেছে পোকামাকড়। অমূল্য ও দুর্লভ বইগুলোর অনেকগুলোই আজ বিলুপ্তির পথে। ভবনের দেয়ালে দেখা দিয়েছে ফাটল, ছাদ থেকে ঝরছে পানি, আর চারপাশে ছড়িয়ে আছে পরিত্যক্ততার নিদর্শন।
সম্প্রতি বরিশাল সরকারি ব্রজমোহন কলেজের স্বেচ্ছাসেবী সামাজিক সংগঠন ব্রজমোহন বই বন্ধু’র একদল প্রতিনিধি লাইব্রেরিটি পরিদর্শন করেন। তাঁরা জানান, বরিশালের ইতিহাস ও সংস্কৃতির অংশ এই লাইব্রেরিটি সংস্কার করে পুনরায় চালু করা উচিত। যদি তা সম্ভব না হয়, তবে অন্তত লাইব্রেরিতে থাকা অমূল্য বইগুলো রক্ষা করার জন্য জরুরি ভিত্তিতে সংরক্ষণের ব্যবস্থা নেওয়া প্রয়োজন।
এটি শুধু একটি ভবন নয়, এটি বরিশালের ইতিহাস, ঐতিহ্য এবং প্রজন্মের জ্ঞানচর্চার স্মারক। একে নিঃশেষ হতে দেওয়া মানে বরিশালের জ্ঞান-ঐতিহ্যের একটি গুরুত্বপূর্ণ অধ্যায় চিরতরে হারিয়ে ফেলা।লাইব্রেরিটিকে রক্ষা করতে হলে সরকারি-বেসরকারি পর্যায়ে জরুরি উদ্যোগ নিতে হবে এখনই, নতুন করে প্রাণ ফিরিয়ে দিতে হবে এই ‘নীরব সাক্ষী’কে।
সাব্বির