
ছবি: জনকণ্ঠ
৩০ বছর বয়সী যুবক মো. সাইফুল ইসলাম ফরিদ। তিন মাস আগে শখের বশে ১৫শত কোয়েল পাখি নিয়ে নিজ বসতঘরের ছাদে খামার শুরু করেন। তার স্বপ্ন ছিল ডিম বিক্রি করে লাভবান হওয়া। তবে ১৫শত পাখির মধ্যে বেশির ভাগই ছিল পুরুষ পাখি। মাত্র ৫শত ছিল ডিম পাড়া পাখি। এক হাজার পুরুষ কোয়েল পাখি ৫০ টাকা দরে বিক্রি করে তিনি বাকী ৫শত ডিম পাড়া কোয়েল পাখি নিয়ে খামার চালু রাখেন। এই খামার থেকে গত দুই মাস ধরে প্রতিদিন চারশত থেকে সাড়ে চারশত ডিম সংগ্রহ করছেন তিনি।
প্রতি পিস ডিম খুচরা ৩ টাকা ও পাইকারি আড়াই টাকায় বিক্রি করছেন। এতে প্রতি মাসে প্রায় ৫০ হাজার টাকার ডিম বিক্রি হয়। খরচ বাদে তার আয় প্রতি মাসে প্রায় ১৮ থেকে ২০ হাজার টাকা। মো. সাইফুল ইসলাম ফরিদ ভোলার লালমোহন উপজেলার পশ্চিম চর উমেদ ইউনিয়নের ৫নং ওয়ার্ড পাঙ্গাসিয়া এলাকার মৌলভি বাড়ির মো. মাকসুদ উল্লাহর ছেলে।
সাইফুল ইসলাম ফরিদ বলেন, “গত ৩ মাস আগে অনেকটা শখের বশে ১৫শত কোয়েল পাখি নিয়ে আমাদের বসতঘরের ছাদে খামার করি। এতে আমার মোট খরচ হয় ৬০ হাজার টাকা। এর মধ্যে প্রায় এক হাজার পুরুষ পাখি বিক্রি করে বাকী ৫শত পাখি নিয়ে চলছে খামার। এই পাখিগুলো থেকে প্রতিদিন চারশত থেকে সাড়ে চারশত ডিম পাচ্ছি। বর্তমানে খামারে পাখির সংখ্যা কম হওয়ায় প্রতিদিনের ডিম খুচরাতেই বিক্রি করতে পারি। এছাড়া বীজ ডিম প্রতি পিস ৪ টাকা এবং প্রতি পিস বাচ্চা ৮ টাকায় বিক্রি করছি। এতে করে মাসে অন্তত ৫০ হাজার টাকার ডিম বিক্রি হয়। এসব কোয়েল পাখিকে লেয়ার-১ নামে দানাদার খাদ্য দেই।
খাদ্য, বিদ্যুৎ বিল এবং ওষুধ বাবদ প্রতি মাসে প্রায় ৩০ হাজার টাকা ব্যয় হয়। অল্পসংখ্যক পাখি থেকেও প্রতি মাসে ১৮ থেকে ২০ হাজার টাকা আয় হচ্ছে। তবে এই অল্প কোয়েলের খামারেই যখন ভালো আয় হচ্ছে, তাই ভেবেছি আগামী শীত আসার আগেই কোয়েলের সংখ্যা বাড়িয়ে ৫ হাজার করবো। আশা করছি তখন আরো ভালো লাভবান হতে পারবো।”
তিনি আরো বলেন, “প্রতিদিন বিকেল থেকে সন্ধ্যা ৭টার মধ্যে কোয়েল পাখি ডিম দেয়। রাত ৮টার মধ্যেই আমি সব ডিম সংগ্রহ করি। এছাড়া আমি কোয়েলের বাচ্চা উৎপাদনের জন্য মেশিন ক্রয় করেছি। কেউ যদি খামার করতে চায় বা বীজ ডিম বা বাচ্চা দরকার হয়, তাহলে আমার সঙ্গে যোগাযোগ করলে চাহিদামতো ডিম ও বাচ্চা দিতে পারবো।”
লালমোহন উপজেলা প্রাণিসম্পদ সম্প্রসারণ কর্মকর্তা ডা. মো. রইস উদ্দিন বলেন, “কোয়েলের মাংস ও ডিম প্রোটিন, ভিটামিন ও খনিজ উপাদানে সমৃদ্ধ, যা শরীরের জন্য উপকারী। পশু ও পাখির খামারের নতুন উদ্যোক্তাদের আমরা প্রয়োজনীয় পরামর্শ দিয়ে থাকি। এছাড়া এসব উদ্যোক্তার খামার নিয়মিত পর্যবেক্ষণ করেন আমাদের কর্মকর্তারা। পশু-পাখির ওষুধ বা চিকিৎসার প্রয়োজন হলে উপজেলা প্রাণিসম্পদ দফতর ও ভেটেরিনারি হাসপাতাল থেকে তা সরবরাহ করা হয়।”
শহীদ