ঢাকা, বাংলাদেশ   বুধবার ১৮ জুন ২০২৫, ৪ আষাঢ় ১৪৩২

রাতের আঁধারে পাথরপাচার! জনতার তৎপরতায় ফাঁস চাঞ্চল্যকর সিন্ডিকেট

মো. এমদাদ হোসেন ভূঁইয়া, সিলেট

প্রকাশিত: ১৯:২৭, ১৮ জুন ২০২৫

রাতের আঁধারে পাথরপাচার! জনতার তৎপরতায় ফাঁস চাঞ্চল্যকর সিন্ডিকেট

ছবি: জনকণ্ঠ

সিলেটের লোভাছড়া কোয়ারির জব্দকৃত পাথর পরিহরণকালে সুরমা নদী থেকে পাথরবোঝাই ৯টি স্টিলবডি কার্গো আটক করে পুলিশে দিয়েছে জনতা। মঙ্গলবার গভীর রাতে দক্ষিণ সুরমার গোটাটিকরস্থ পাসপোর্ট অফিসের কাছে কার্গোগুলো আটক করা হয়। বিপুল পরিমাণ এই পাথর লোভাছড়া থেকে লুট করে পাচার করা হচ্ছিল বলে অভিযোগ করেছেন কার্গো আটককারী স্থানীয়রা। জনতা কর্তৃক পাথরবোঝাই কার্গো আটক করে পুলিশে দেওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন সিলেট মেট্রোপলিটন পুলিশের উপ-কমিশনার (দক্ষিণ) মো. সজিব খান।

মঙ্গলবার গভীর রাতে কানাইঘাটের লোভাছড়া থেকে সরকারি অভিযানে জব্দকৃত বিপুল পরিমাণ পাথর ৯টি কার্গোর মাধ্যমে সুরমা নদী দিয়ে পাচারের চেষ্টা করা হচ্ছিল। এগুলো দক্ষিণ সুরমার গোটাটিকরের পাসপোর্ট অফিসের কাছে পৌঁছালে স্থানীয়রা কার্গোগুলো আটক করেন। পরে সেগুলো তীরে নোঙর করে থানায় খবর দেওয়া হয়। মোগলাবাজার থানার পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে পাথরসহ কার্গোগুলো জব্দ করে।

গোটাটিকরের সামি এন্টারপ্রাইজের স্বত্বাধিকারী নজরুল ইসলাম জানান, ২০২০ সালের জুলাই মাসে লোভাছড়া কোয়ারি থেকে অবৈধভাবে উত্তোলন করে মজুদ করা প্রায় এক কোটি ঘনফুট পাথর জব্দ করে প্রশাসন। পাঁচ বছর পর খনিজ সম্পদ উন্নয়ন ব্যুরো (বিএমডি) ৫৬ লাখ ঘনফুট গোপন রেখে ৪৪ লাখ ঘনফুট পাথর নিলামের জন্য দরপত্র আহ্বান করে। এ ঘটনায় তিনি উচ্চ আদালতের দ্বারস্থ হয়েছেন। অভিযোগ বিচারাধীন থাকা অবস্থায় আদালতের নির্দেশ উপেক্ষা করে বিএমডি ‘পিয়াস এন্টারপ্রাইজ’ নামক একটি প্রতিষ্ঠানের কাছে সর্বোচ্চ দরদাতা হিসেবে ৪৪ লাখ ঘনফুট পাথর বিক্রি করে দেয়। এ নিয়েও তিনি আদালতের আশ্রয় নিয়েছেন।

নজরুলের অভিযোগ, বিএমডি কাগজে ৪৪ লাখ ঘনফুট পাথর নিলাম করলেও বাস্তবে ১ কোটি ঘনফুট পাথর বিক্রি করেছে। গোপন যোগসাজশে ৫৬ লাখ ঘনফুট পাথর সিন্ডিকেটের হাতে তুলে দেওয়া হয়েছে। এর নেপথ্যে রয়েছেন জেলা আওয়ামী লীগ নেতা মোস্তাক আহমদ পলাশ ও স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতা তমিজ উদ্দিন চেয়ারম্যান। আদালতের নির্দেশ উপেক্ষা করে তাঁরা লোভাছড়ায় জব্দকৃত পাথর পাচারের চেষ্টা চালাচ্ছেন বলে অভিযোগ করেছেন তিনি।

মোগলাবাজার থানার ওসি ফয়সাল আহমদ জানিয়েছেন, স্থানীয়রা কয়েকটি পাথরবোঝাই কার্গো আটক করে থানায় হস্তান্তর করেছেন। যাঁরা কার্গো আটক করেছেন, তাঁরা মামলার প্রস্তুতি নিচ্ছেন।

সিলেট মেট্রোপলিটন পুলিশের উপ-কমিশনার (দক্ষিণ) মো. সজিব খান জানিয়েছেন, সিলেটের কোয়ারিগুলোতে পাথর উত্তোলন বন্ধ রয়েছে। সুরমা নদী থেকে জনতা কয়েকটি কার্গো আটক করে পুলিশে দিয়েছে। বিষয়টি তদন্ত করে দেখা হচ্ছে।

শহীদ

×