
ছবি: সংগৃহীত
বাংলাদেশের চোখে এখন একটাই স্বপ্ন—একদিন বিশ্বকাপের স্টেডিয়ামে বাজবে বাংলাদেশের জাতীয় সংগীত। দোহা, মস্কো বা বুয়েনস আইরেসের মতো শহরগুলোতে যখন গ্যালারিতে উড়বে লাল-সবুজের পতাকা, তখন আর হাতে থাকবে না কোনো আর্জেন্টিনা বা ব্রাজিলের পতাকা। গোল হলে আর ‘রোনালদো’ নয়, চিৎকার উঠবে বাংলাদেশের ‘হামজা’ কিংবা ‘সামিত’-এর নামে—“বাংলাদেশ! বাংলাদেশ!”
এটা শুনতে হয়তো স্বপ্ন মনে হতে পারে, কিন্তু এখন আর তা অলীক নয়। ইতিহাসের এক সন্ধিক্ষণে দাঁড়িয়ে বাংলাদেশ, যেখানে একটিমাত্র সমীকরণ মিললেই ২০৩০ সালের বিশ্বকাপে খেলার স্বপ্ন হয়ে উঠতে পারে বাস্তব।
স্বপ্নের পথ খুলছে ২০২৭ সালের এশিয়ান কাপ দিয়ে
দীর্ঘ ২২ বছর পর জামাল ভূঁইয়ারা সুযোগ পেয়েছেন এশিয়ান কাপে খেলার। বর্তমানে বাংলাদেশ এশিয়ান কাপের বাছাই পর্বের চূড়ান্ত রাউন্ডে লড়ছে, যেখানে ২৪টি দল ৬টি গ্রুপে বিভক্ত হয়ে প্রতিযোগিতা করছে। প্রতিটি গ্রুপের চ্যাম্পিয়ন দল সরাসরি খেলবে মূল আসরে।
বাংলাদেশ রয়েছে ‘গ্রুপ সি’-তে। প্রতিদ্বন্দ্বী দলগুলো হলো ভারত, হংকং ও সিঙ্গাপুর। প্রথম ম্যাচ থেকেই পয়েন্ট নিয়ে গ্রুপের শীর্ষে জামালরা। সামনে রয়েছে গুরুত্বপূর্ণ ম্যাচ—১০ জুন, সিঙ্গাপুরের বিপক্ষে। এই ম্যাচে জয় মানেই পথটা আরও পরিষ্কার।
এরপর ভারতের বিপক্ষে ঘরের মাঠে, এবং হংকংয়ের বিপক্ষে হোম-অ্যাওয়ে লেগ—এই তিন ম্যাচে জয় পেলে ৪৭ বছর পর এশিয়ান কাপে খেলা নিশ্চিত হবে বাংলাদেশের।
২০৩০ বিশ্বকাপ হতে পারে ৬৪ দলের, সুযোগ বাড়ছে এশিয়ার জন্যও
ফিফার পরিকল্পনা অনুযায়ী, ২০৩০ সালের বিশ্বকাপে অংশ নেবে ৬৪টি দল। এতে করে এশিয়া অঞ্চল থেকেও দলের সংখ্যা বাড়বে নিশ্চিতভাবেই। আর সেই সুযোগটাই কাজে লাগাতে পারে বাংলাদেশ।
যদি বাংলাদেশ এশিয়ান কাপে ভালো পারফর্ম করতে পারে, তাহলে বিশ্বকাপে খেলা আর কল্পনার জগতে সীমাবদ্ধ থাকবে না—বাস্তবে পরিণত হওয়াও অসম্ভব হবে না।
নতুন বাংলাদেশ গড়ে তুলছে নতুন প্রজন্ম
জাতীয় দলে ইতিমধ্যেই যুক্ত হয়েছেন প্রবাসী ফুটবলার হামজা চৌধুরী ও সামিত সম্রার মতো তারকারা। ইউরোপের পেশাদার ফুটবল ঘরানায় বেড়ে ওঠা এই তরুণরা গড়ে তুলছেন এক নতুন বাংলাদেশ। স্প্যানিশ কোচ হ্যাভিয়ার কাবরেরার অধীনে দল পাচ্ছে নতুন রূপ ও গতি।
এই গতি ও প্রস্তুতি বজায় থাকলে, শুধু দক্ষিণ এশিয়া নয়, গোটা এশিয়াতেই একদিন আধিপত্য বিস্তার করতে পারে লাল-সবুজের দল।
নিজেদের পতাকায় গ্যালারি কাঁপানোর দিন আর দূরে নয়
আজ আর আমরা চাই না অন্য দেশের পতাকা হাতে। আমরা গ্যালারিতে দাঁড়াতে চাই নিজেদের পতাকা নিয়ে, গলা ফাটাতে চাই নিজেদের খেলোয়াড়দের নাম ধরে। “বাংলাদেশ বিশ্বকাপে খেলবে”—এটা এখন কেবল আশা নয়, বাস্তবতার কাছাকাছি এক দৃশ্য। স্বপ্নের সেই দিন আর খুব একটা দূরে নয়।
আঁখি