
ছবি: সংগৃহীত
রবিবার নেশনস লিগ জয়ে দলের সহায়তা করার পর আবেগে কেঁদে ফেলেন পর্তুগালের এই তারকা ফুটবলার।
ফাইনালে রোনালদো গোল করে পর্তুগালকে স্পেনের সঙ্গে ২-২ সমতায় ফেরান। এরপর টাইব্রেকারে তার সতীর্থরা ৫-৩ ব্যবধানে জয় নিশ্চিত করেন।
"আমার ক্লাবগুলোর হয়ে অনেক শিরোপা আছে, কিন্তু পর্তুগালের হয়ে জেতার আনন্দই আলাদা," বলেন রোনালদো। "এগুলো আনন্দাশ্রু। লক্ষ্য পূরণ হয়েছে, তাই এত খুশি।"
৪০ বছর বয়সী রোনালদো ওয়ার্ম-আপের সময়ই প্রথম মাঠে নেমে যান, আর তা দেখে গর্জে ওঠে পর্তুগাল সমর্থকরা, যাঁদের অনেকেই তাঁর নাম লেখা জার্সি পরে ছিলেন।
রোনালদোকে খেলার মধ্যে দেখতে পেয়ে অনেক ভক্ত মোবাইল ফোনে ভিডিও তুলতে ব্যস্ত হয়ে পড়েন। শনিবার তিনি স্বীকার করেন, তিনি চিরকাল খেলতে পারবেন না।
মাত্র তিন দিন আগে তিনি পর্তুগালকে ২৫ বছরের মধ্যে প্রথমবারের মতো জার্মানির বিপক্ষে জয় এনে দেন, সেমিফাইনালে ২-১ ব্যবধানে জয়ের ম্যাচে রোনালদোই ছিলেন জয়সূচক গোলদাতা।
রবিবারও তিনি দলের চালিকাশক্তি ছিলেন, যদিও শুরুতে স্পেনের কঠিন ডিফেন্সের কারণে বেশ ভুগতে হয়।
মার্টিন জুবিমেন্দির গোলে স্পেন এগিয়ে গেলেও নুনো মেন্ডেসের গোলে সমতায় ফেরে পর্তুগাল। পরে মিকেল ওয়ারসাবাল গোল করে স্পেনকে আবারও এগিয়ে দেন ২-১ ব্যবধানে।
কিন্তু ৬১তম মিনিটে মেন্ডেসের ডিফ্লেক্টেড ক্রস থেকে বল পেয়ে সঠিক সময়ে সঠিক জায়গায় থাকা রোনালদো গোল করে পর্তুগালকে সমতায় ফেরান। রোনালদোর সেই গোল উদযাপনে দর্শকদের মধ্যে দেখা যায় চরম উল্লাস। এটি ছিল পর্তুগালের হয়ে তার ১৩৮তম গোল — আন্তর্জাতিক ফুটবলে যা সর্বোচ্চ।
রোনালদো এরপরও চেষ্টা চালিয়ে যান। এটি ছিল দেশের হয়ে তার ২২১তম ম্যাচ, যা নিজেই একটি রেকর্ড। শেষ পর্যন্ত ৮৮তম মিনিটে ক্লান্ত হয়ে মাঠ ছাড়েন, তখন দর্শকরা দাঁড়িয়ে অভিবাদন জানান আর কোচ রবার্তো মার্টিনেজ তাকে আলিঙ্গন করেন।
রোনালদো জানান, এই ম্যাচে তিনি চোট নিয়ে খেলেছেন।
"ওয়ার্ম-আপের সময় থেকেই ব্যথা অনুভব করছিলাম, অনেকদিন ধরেই এটা হচ্ছিল, কিন্তু জাতীয় দলের জন্য যদি পা ভেঙে ফেলতেও হতো, আমি করতাম," বলেন রোনালদো। "এটি একটি ট্রফির জন্য ছিল, আমাকে খেলতেই হতো, আর আমি সর্বোচ্চটা দিয়েছি।"
রোনালদোর ভবিষ্যৎ এখনও অনিশ্চিত, কারণ সৌদি ক্লাব আল-নাসরের সঙ্গে তার চুক্তি শেষ হচ্ছে জুন মাসেই। ক্লাবের শেষ সৌদি প্রো লিগ ম্যাচের পর তিনি সামাজিক মাধ্যমে লিখেছেন, "এই অধ্যায় শেষ।"
শনিবার তিনি জানান, ক্লাব বিশ্বকাপে যাওয়ার সিদ্ধান্ত প্রায় নিয়েই ফেলেছেন—যদিও সেখানে অংশগ্রহণকারী বেশ কয়েকটি ক্লাব তাকে চেয়েছে।
যেই ক্লাবেই খেলুন না কেন, পর্তুগালের জন্য সবসময় নিবেদিত থাকবেন—এ কথাও বলেন তিনি।
"আমি অনেক দেশে থেকেছি, অনেক ক্লাবে খেলেছি, কিন্তু যখন পর্তুগালের কথা আসে, তখন অনুভূতি সবসময়ই আলাদা," বলেন রোনালদো।
সূত্র: ফার্স্টপোস্ট
আবির