
ছবি: সংগৃহীত
বেঙ্গালুরুতে এক ভয়াবহ হুড়োহুড়িতে প্রাণ হারানো ১৬ বছর বয়সী আদিত্য রেড্ডির বাবা এখনও তার ছেলের সমাধির পাশেই দিন কাটাচ্ছেন। "আমি এখানেই থাকব, আমার ছেলের সঙ্গে," বলছেন শোকার্ত বাবা মনোহর রেড্ডি, যিনি গত এক সপ্তাহ ধরে সন্তানের সমাধিস্থলেই শুয়ে-বসে কাটাচ্ছেন।
গত সপ্তাহে বেঙ্গালুরুর কান্তিরাভা স্টেডিয়ামে জনপ্রিয় সঙ্গীতশিল্পী এ আর রাহমানের কনসার্টের টিকিট বিতরণকালে ভয়াবহ হুড়োহুড়ি শুরু হয়। এতে আদিত্যসহ ৪ জনের মৃত্যু হয় এবং শতাধিক মানুষ আহত হন। স্থানীয় কর্তৃপক্ষের অব্যবস্থাপনা ও নিরাপত্তা ঘাটতিকে এই ট্র্যাজেডির জন্য দায়ী করা হচ্ছে।
"সেদিন সকালে সে আমার কাছ থেকে ৫০০ রুপি নিয়ে গিয়েছিল টিকিট কিনতে," কান্নাজড়িত কণ্ঠে বলছিলেন মনোহর। "কিন্তু সন্ধ্যায় পুলিশ আমার বাড়িতে এসে জানাল, আমার ছেলে আর নেই।" আদিত্য ছিলেন পরিবারের একমাত্র সন্তান এবং স্থানীয় স্কুলের দশম শ্রেণির ছাত্র।
মনোহর ও তার পরিবার এখন পর্যন্ত কোনো ক্ষতিপূরণ বা সরকারি সাহায্য পাননি। ক্ষোভে-দুঃখে তিনি ছেলের সমাধিস্থলেই অনশন শুরু করেছেন। "আমার ছেলের জন্য ন্যায়বিচার চাই," বললেন তিনি। "এই ঘটনার জন্য দায়ীদের কঠোর শাস্তি হওয়া উচিত।"
স্থানীয় প্রশাসন ঘটনাটি তদন্তের জন্য একটি কমিটি গঠন করেছে। কর্ণাটকের মুখ্যমন্ত্রী বাসবরাজ বোম্মাই শোক প্রকাশ করে প্রতিটি পরিবারকে ৫ লাখ রুপি ক্ষতিপূরণ দেওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন। তবে স্থানীয় বাসিন্দারা বলছেন, এই ট্র্যাজেডি এড়ানো যেত যদি কর্তৃপক্ষ সঠিক পরিকল্পনা করত।
#JusticeForAditya হ্যাশট্যাগে সোশ্যাল মিডিয়ায় এই ঘটনায় ন্যায়বিচারের দাবি জানানো হচ্ছে। অনেক ব্যবহারকারী ভারতের গণসমাগম ব্যবস্থাপনা ও নিরাপত্তা প্রোটোকল নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন।
মনোহর রেড্ডির মতো শোকার্ত পরিবারগুলোর জন্য এখনও ন্যায়বিচারের অপেক্ষা। "আমার জীবন শেষ," বললেন তিনি, তার ছেলের সমাধির পাশে শুয়ে। "এখন আমি শুধু চাই, অন্য কোনো বাবাকে যেন এমন মর্মান্তিক পরিণতি ভোগ না করতে হয়।"
(সূত্র: গাল্ফ নিউজ)
সাব্বির