ঢাকা, বাংলাদেশ   সোমবার ০৯ জুন ২০২৫, ২৬ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২

কুয়াকাটায় বাড়ছে পর্যটক-দর্শনার্থীর ভিড়: টোয়াকের বিশেষ মনিটরিং

নিজস্ব সংবাদদাতা, কলাপাড়া, পটুয়াখালী

প্রকাশিত: ১২:৫৩, ৯ জুন ২০২৫

কুয়াকাটায় বাড়ছে পর্যটক-দর্শনার্থীর ভিড়: টোয়াকের বিশেষ মনিটরিং

ছবি: দৈনিক জনকণ্ঠ

ঈদের তৃতীয় দিন আজ সোমবার সকাল থেকেই কুয়াকাটায় পর্যটক-দর্শনার্থীর আনাগোনা বহুগুণে বেড়েছে। সকাল দশটার মধ্যেই শূন্য পয়েন্ট থেকে পূর্ব-পশ্চিম দুইদিকে আগতদের পদচারণায় মুখরিত হয়ে উঠেছে। শত শত পর্যটক সাগরের ঢেউয়ের সঙ্গে মিতালি করে গোসলে মত্ত রয়েছেন। যেমনি উপভোগ্য সময় কাটাচ্ছেন, তেমনি প্রচণ্ড ভ্যাপসা গরম থেকে কিছুটা হলেও স্বস্তি খুঁজে পাচ্ছেন। আজকে পারিবারিকভাবে আসা পর্যটকের সংখ্যা অনেক বেশি রয়েছেন। পর্যটকরা ছাতা বেঞ্চিতে বসে সাগরের নৈসর্গিক দৃশ্যাবলি অবলোকন করছেন। বালিয়াড়িতে শিশু-কিশোররা মাখামাখি করেছে উচ্ছ্বাসের মধ্য দিয়ে। কেউবা ঘোড়ায় চড়েছে। কেউবা ওয়াটার বাইকে সাগরের অগভীর এলাকায় চক্কর দেওয়াসহ নানা উপভোগে মেতেছে।

আগতরা বিভিন্ন দর্শনীয় স্পটগুলোয় ঘুরেফিরে আমুদে সময় কাটাচ্ছেন। সেলফি তুলছেন। সুন্দর মুহূর্তগুলো প্রিয়জনদেরসহ ক্যামেরাবন্দী করতে ভুলছেন না। ঘুরেছেন রাখাইন পল্লীতে। দেখেছেন শ্রীমঙ্গল বৌদ্ধবিহার। ভুল করছেন না কুয়াকাটা নামকরণের কুয়া দেখতে। অনেকেই অত্যাবশ্যকীয় কেনাকাটাও করছেন। 

গোপালগঞ্জ থেকে আসা পর্যটক, শিক্ষার্থী মো. নাঈম খান জানান, তারা সাত বন্ধু একই সঙ্গে আজ (সোমবার) ভোররাতে কুয়াকাটায় এসে পৌঁছেছেন। এখন (বেলা ১১টায়) বিচে ঘুরছেন। কুয়াকাটা সৈকত তাঁদের কাছে খুবই সুন্দর লাগছে বলে অভিব্যক্তি প্রকাশ করলেন। হোটেল আমির হামজার তিন বেডের একটি কক্ষে উঠেছেন। দৈনিক চার হাজার টাকা ভাড়া চুক্তি তাঁদের সঙ্গে হয়েছে। সকালে নাস্তা খেয়েছেন। সবকিছুই তাদের কাছে সহনীয় মনে হচ্ছে। দুই দিন থাকার চিন্তা তাঁদের। এতা সুন্দর পরিচ্ছন্ন সৈকতে যে কারও মনপ্রাণ ভালো হয়ে যায় বলে এই শিক্ষার্থীর অভিমত।

আজকে ( সোমবার) সকাল থেকে আবাসিক হোটেলে অবস্থান নেওয়া পর্যটকের সংখ্যা গতকালের চেয়ে বেড়েছে। গতকালকে সকালে এসে সন্ধ্যায় ফেরা পর্যটক-দর্শনার্থীর সংখ্যাই ছিল বেশি। অটোবাইক, অটোভ্যান, প্রাইভেট কার নিয়ে আসা পর্যটকের সংখ্যা ছিল বেশি। কিন্তু আজকের হোটেলগুলোতে ইতোমধ্যে ৬০-৭০ শতাংশ কক্ষে গেস্ট প্রবেশ করেছেন। হোটেল তাজওয়ার এর পরিচালক রণজিৎ মিত্র এ খবর নিশ্চিত করেন। তিনি জনকন্ঠকে জানান, আজ-কাল পর্যটকের ভিড় বেশি থাকবে। টানা দশ দিনের দীর্ঘ ছুটিতে পর্যটকের কাঙ্ক্ষিত উপস্থিতির আশায় হোটেল-মোটেল রিসোর্ট ব্যবসায়ীরা মুখিয়ে ছিলেন। যার কিছুটা হলেও পূরণ হচ্ছে বলে ব্যবসায়ীরা স্বস্তিবোধ করছেন। আধুনিক সেবা সংবলিত তারকা মানের আবাসিক হোটেলগুলোতে শতভাগ কক্ষ আজ-কাল বুকড রয়েছে। তবে কুয়াকাটাগামী আন্ধারমানিক সেতুর টোল প্লাজার পরিচালক পরিমল কুমার রায় বলেন, ‘ গেল বছর কোরবানির ঈদের দ্বিতীয় দিনে এমন সময়ে প্রায় ১৪ শতাধিক যানবাহন আপডাউন করেছে। আর এবছর মাত্র ৬০৮টি যানবাহন আপ-ডাউন করেছে। এছাড়া থ্রি-হুইলার যানবাহনও কমে এক তৃতীয়াংশে নেমেছে।’ পরিমল রায় জানান, আজ যানবাহনের সংখ্যা কিছুটা বেড়েছে। আগামীকাল পর্যন্ত ভিড় বাড়বে বলে তার প্রত্যাশা।

কুয়াকাটা হোটেল-মোটেল ওনার্স এসোসিয়েশন সভাপতি মোতালেব শরীফ জানান, আজকে পর্যটক আসতে শুরু করেছে। তবে আগামীকাল থেকে ভিড় অনেক বেশি থাকবে বলে তার প্রত্যাশা। তারাও দুই শতাধিক হোটেল-মোটেল-গেস্ট হাউস প্রস্তুত রেখেছেন পর্যটকের সর্বোচ্চ সেবা দেওয়ার জন্য। 

পর্যটকের সেবা নিশ্চিতে ট্যুর অপারেটর এসাসিয়েশন অব কুয়াকাটার নেতৃবৃন্দকে গতকাল থেকে ব্যাপক তৎপর দেখা গেছে। সংগঠনের সভাপতি রুমান ইমতিয়াজ তুষারের নেতৃত্বে রবিবার দুপুর থেকে বিচের বিভিন্ন দোকানপাটে গিয়ে তাদের বিভিন্ন নির্দেশনা দিয়েছেন। খাবার হোটেলগুলোতেও তারা মনিটরিং করেছেন। পর্যটকের সেবা নিশ্চিতে বিশৃঙ্খল পরিবেশ ঠেকাতে এবং প্রতারণা হয়রানি রোধে এমন সব পদক্ষেপের কথা জানালেন তিনি। পর্যটকরা এমনসব উদ্যোগে স্বস্তি প্রকাশ করেছেন। তারা প্রশংসা করেছেন।
 

 

ফারুক

×