
বোমা হামলায় বিধ্বস্ত মসজিদের ভাঙা দেয়ালগুলো কোনোরকমে দাঁড়িয়ে আছে, চারপাশে ধ্বংসস্তূপ। সেই নড়বড়ে স্থাপনার মাঝেই মাথা নিচু করে সিজদায় রত গাজাবাসী। ঈদের খুশির বদলে তাদের চোখে কান্না, মুখে কোরবানির দোয়া আর মনে ইসরাঈলি হামলার আতঙ্ক।
গাজা উপত্যকায় চলমান যুদ্ধের মধ্যে এবার নিয়ে চতুর্থ ঈদুল আজহা উদযাপিত হলো। চারপাশে ধ্বংস, ক্ষুধা, আহত মানুষের আহাজারি তার মাঝেই ঈদের নামাজে শামিল হয়েছেন ফিলিস্তিনিরা। কেউ বললেন, “নিজের জীবন ছাড়া কোরবানি দেওয়ার আর কিছুই নেই।”
গাজার এক বাসিন্দা জানান, “যুদ্ধের মাঝে চারটা ঈদ পার হয়ে গেছে। এখন আমরা কেবল আহতদের খবর শুনি। যুদ্ধবিমান আর ট্যাংকের শব্দ ছাড়া আর কিছু শুনি না। আগে ঈদের সময় পরিবার-পরিজন নিয়ে আনন্দ করতাম, বাচ্চাদের নতুন জামাকাপড় কিনতাম, কোরবানি হতো সব স্বপ্ন হয়ে গেছে।”
গাজায় আগ্রাসনের প্রভাব পড়েছে ফিলিস্তিনের অন্যান্য অঞ্চলেও। পশ্চিম তীরেও ঈদের আনন্দ মলিন। সেখানে কোরবানির পশুর দাম এতটাই বেশি যে সাধারণ মানুষ তা কেনার সামর্থ্য রাখে না। এক কেজি মাংস যেখানে আগে ছিল ৩৫ শেকেল, এখন সেখানে আধা কেজির দাম ২৩০ শেকেল।
স্থানীয় এক বৃদ্ধ বলেন, “এত টাকা কোথায় পাব আমরা? যুদ্ধের মধ্যে খাওয়া জোটে না, ঈদের কোরবানি তো অনেক দূরের বিষয়।”
ঈদের দিনেও থেমে নেই ইসরাঈলি বাহিনীর বর্বরতা। গাজার বিভিন্ন এলাকায় নির্বিচারে চালানো হয়েছে বিমান হামলা। কেউ নামাজ শেষে বাড়ি ফেরার আগেই শুনেছে নিজের ঘর ভেঙে পড়েছে, কেউ মসজিদের সামনেই হারিয়েছে প্রিয়জন।
এই অমানবিক বাস্তবতার মধ্যেও ঈমান হারায়নি গাজার মানুষ। ধ্বংসের মধ্যেও তারা কোরবানির চেতনা বুকে ধারণ করে বলেছে, “আল্লাহর ওপর ভরসা আছে, এই যুদ্ধে রক্ত ঝরবে কিন্তু আত্মার জয়ে ঈদ হোক ত্যাগের পূর্ণতা।”
মিমিয়া