ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ০৫ জুন ২০২৫, ২২ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২

উপাচার্যবিরোধী আন্দোলনে জড়িতের অভিযোগে ৩০ শিক্ষার্থীকে বহিষ্কার

স্টাফ রিপোর্টার

প্রকাশিত: ১৮:৩০, ৩ জুন ২০২৫

উপাচার্যবিরোধী আন্দোলনে জড়িতের অভিযোগে ৩০ শিক্ষার্থীকে বহিষ্কার

ছবি:সংগৃহীত


উপাচার্য ও একজন বিভাগীয় প্রধানের পদত্যাগ দাবিতে আন্দোলনে জড়িত থাকার দায়ে বেসরকারি ইউনাইটেড ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির (ইউআইইউ) ৩০ শিক্ষার্থীকে বহিষ্কার করা হয়েছে। তাদের মধ্যে ১৭ জনকে স্থায়ী ও ১৩ জনকে অস্থায়ীভাবে বহিষ্কার করেছে ভার্সিটি প্রশাসন। বহিস্কৃতরা সবাই বিশ্ববিদ্যালয়টির কম্পিউটার সায়েন্স অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং (সিএসই) বিভাগের শিক্ষার্থী।

 

 

মঙ্গলবার দুপুরে শাস্তি পাওয়া শিক্ষার্থী বহিষ্কার আদেশের কপি পেয়ে হাতে পাওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করেন। যা নিয়ে শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের মধ্যে তীব্র প্রতিক্রিয়া দেখা যাচ্ছে। এছাড়াও শিক্ষার্থীদের উপর বহিষ্কারের ঘটনায় একে প্রশাসনিক ও দাপ্তরিক নিপিড়ন হিসেবেও আখ্যা দিচ্ছেন অনেকে। এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরী কমিশনের (ইউজিসি) মুখ বন্ধ রাখার বিষয়টিও সামনে এসেছে। যদিও এক সপ্তাহ আগে শিক্ষার্থী ও ইউজিসি কর্তৃপক্ষের দ্বন্দের বিষয়ে  ইউজিসি সদস্য প্রফেসর ড. মোহাম্মদ আনোয়ার হোসেনকে অবগত করা হয়। জনকণ্ঠকে তিনি জানিয়েছিলেন, কমিশন সব সময় শিক্ষার্থীদের স্বার্থ সুরক্ষায় কাজ করবে। বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় বিভাগ গুরুত্ব নিয়ে কাজ করছে।

 

 

ইউআইইউ সূত্রে জানা যায়, সোমবার বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার ড. জুলফিকার রহমানের সই করা পৃথক পৃথক আদেশে ৩০ শিক্ষার্থীকে বহিষ্কার করা হয়। বহিষ্কার হওয়া সবাই গত ২৬ এপ্রিল বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ও সিএসই বিভাগের প্রধানকে বহিষ্কারের দাবিতে গড়ে ওঠা আন্দোলনে আন্দোলনের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন।

বহিষ্কারের আদেশে বলা হয়েছে গত ২৬ এপ্রিল বিশ্ববিদ্যালয়ের কিছু অপ্রীতিকর ঘটনায় আপনার জড়িত থাকার বিষয়ে আপনাকে যে কারণ দর্শানোর নোটিশ দেওয়া হয়েছিল, সেটির বিষয়ে গত ১ জুন শৃঙ্খলা কমিটির একটি সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। শৃঙ্খলা কমিটি ঘটনা সম্পর্কিত সমস্ত উপলব্ধ প্রমাণ পুঙ্খানুপুঙ্খভাবে পর্যালোচনা করেছে এবং সামগ্রিক পরিস্থিতি বিবেচনা করার পর আপনার ব্যাখ্যা অসন্তোষজনক এবং অগ্রহণযোগ্য বলে মনে করেছে। এতে আর বলা হয়, ইউআইইউ শৃঙ্খলাবিধি অনুসারে আপনাকে বিশ্ববিদ্যালয়ের ফল সেমিস্টার থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে। এ চিঠি পাওয়ার পরবর্তী ১০ কার্যদিবসের মধ্যে আপনি ই-মেলের মাধ্যমে এ সিদ্ধান্ত পুনর্বিবেচনার জন্য আপিল করতে পারেন।

 

 

 

বহিষ্কার হওয়া ফাইয়াজ নামের একজন শিক্ষার্থী বলেন, আমাদের বিরুদ্ধে অন্যায় সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়েছে। আমরা এ আদেশ মানি না। অনিয়মের বিরুদ্ধে আন্দোলন করায় আমাদের বহিষ্কার করা হচ্ছে। দ্রুত বেসরকারি অন্যান্য বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা এ ইউআইইউর এসব অনিয়মের বিরুদ্ধে মাঠে নামবে। বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার ড. জুলফিকার রহমানের সঙ্গে একাধিকবার চেষ্টা করেও যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি।

এর আগে গত ১৮ মে শিক্ষার্থীদের উদ্দেশে খোলা চিঠি দেয় ইউআইইউ বোর্ড অব ট্রাস্টিজ। সেখানে বলা হয়েছে, গত ২৬ এপ্রিল রাতে উপাচার্য ও শিক্ষকদের অফিস রুমে আটকে রাখার আন্দোলনে যেসব শিক্ষার্থী এ ঘটনায় দায়ী প্রমাণিত হবেন, তাদের বিরুদ্ধে ইউআইইউ শৃঙ্খলা কমিটির মাধ্যমে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে। তাদেরকে বহিষ্কারও করা হতে পারে। তবে যেসব শিক্ষার্থী স্বেচ্ছায় নির্ধারিত সময়ের মধ্যে ভর্তি বাতিল করে বিশ্ববিদ্যালয় ত্যাগ করবেন, তাদের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়া হবে না।

আঁখি

×