
ছবি: দৈনিক জনকন্ঠ।
কোরবানির ঈদকে সামনে রেখে মানিকগঞ্জের সাটুরিয়া উপজেলার কামার পল্লীগুলোতে বেড়েছে কর্মচাঞ্চল্য। ঈদের আর মাত্র একদিন বাকি, ফলে দিনরাত এক করে ব্যস্ত সময় পার করছেন কামাররা। হাঁপরের তীব্র বাতাসে উত্তপ্ত লোহাকে পিটিয়ে তৈরি হচ্ছে দা, ছুরি, বঁটি, চাপাতি। চারপাশ জুড়ে হাতুড়ির টুংটাং শব্দে মুখর কামার পল্লী।
সারা বছর তুলনামূলকভাবে কাজ কম থাকলেও কোরবানির মৌসুম এলেই জমে ওঠে কামার শিল্প। তবে এ বছর লোহা ও কয়লার দাম বেড়ে যাওয়ায় সরঞ্জামের মূল্যও আগের চেয়ে বেশি। বিশেষ করে পশু জবাই ও চামড়া ছাড়ানোর জন্য ব্যবহৃত ছুরির চাহিদা যেমন বেশি, তেমনি দামেও এসেছে পরিবর্তন।
উপজেলার বিভিন্ন কামারশালায় ক্রেতাদের ভিড় দেখা যাচ্ছে। কেউ পুরাতন যন্ত্রপাতি শান করাচ্ছেন, আবার কেউ কিনছেন নতুন দা-বঁটি। অনেক কামার ফেরি করে উপজেলার হাট-বাজার কিংবা রাস্তাঘাটে ঘুরে ঘুরে বিক্রি করছেন ছুরি, দা ও অন্যান্য সরঞ্জাম।
বৃহস্পতিবার (৫ জুন) সকালের দিকে উপজেলার দড়গ্রামসহ আশপাশের কয়েকটি কামার পল্লীতে সরেজমিন ঘুরে দেখা গেছে, একেকটি চামড়া ছাড়ানোর ছুরি বিক্রি হচ্ছে ২০০ থেকে ২৫০ টাকায়, বঁটি ৭০০ থেকে ৮০০ টাকা, বড় ছুরি ১০০০ থেকে ১২০০ টাকা, কাটারি ২৫০ থেকে ৩০০ টাকা এবং চাপাতি ৭০০ থেকে ১০০০ টাকায়।
ক্রেতা লুত্ফুর মিয়া জানান, “ঈদ যতই ঘনিয়ে আসছে, দামের ঊর্ধ্বগতিও ততই বাড়ছে। মাস তিনেক আগে যে ছুরি ২৫০ টাকায় কিনেছি, এখন সেটি কিনতে হচ্ছে ৩০০ টাকায়। এমনকি পুরোনো যন্ত্রপাতি শান দিতেও খরচ বেশি গুনতে হচ্ছে।
কামারদের ভাষ্য অনুযায়ী, কয়েক বছর আগেও প্রতি কেজি লোহা কিনতে হয়েছে ৬০–৭০ টাকায়, এখন সেটাই ৯৫–১০০ টাকা। কয়লার দামও ব্যাপক হারে বেড়েছে—আগে যেটি ১ হাজার টাকায় মিলতো, এখন তা ১৪০০ টাকার ওপরে।
দড়গ্রাম বাজারের কামার দীনেশ চন্দ্র দাস বলেন, “কোরবানির সময়টাতে কাজ একটু ভালো হয়। তবে এবার খরচ বেড়ে যাওয়ায় বেচাবিক্রি কিছুটা কম। একদিকে দাম বাড়ছে, অন্যদিকে ক্রেতারা একটু দ্বিধায় আছেন।”
আরেক কামার উত্তম দাস বলেন, “কারিগরের মজুরি এখন প্রতিদিন ৭০০ টাকা করে দিতে হয়। সঙ্গে যুক্ত হয়েছে লোহা, কয়লা, বিদ্যুৎ—সবকিছুর খরচ। এজন্য আমাদেরও সরঞ্জামের দাম বাড়াতে হয়েছে।
মিরাজ খান