ঢাকা, বাংলাদেশ   বুধবার ০৪ জুন ২০২৫, ২১ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২

শিবালয়ে ফসলের মাঠে জলাবদ্ধতা, ইরি-বোরোর ব্যাপক ক্ষতি

নিজস্ব সংবাদদাতা, শিবালয়, মানিকগঞ্জ

প্রকাশিত: ২২:৪২, ২ জুন ২০২৫

শিবালয়ে ফসলের মাঠে জলাবদ্ধতা, ইরি-বোরোর ব্যাপক ক্ষতি

গত কয়েকদিনের টানা প্রবল বৃষ্টি ও সেচের পানিতে সৃষ্ট জলাবদ্ধতায় শিবালয় উপজেলার বেশ কয়েকটি  ফসলের মাঠে ইরি-বোরো ডুবে গেছে। এতে, ভোগান্তিতে পড়েছে সাধারণ কৃষক। অপরিকল্পিত জলাধার নির্মাণের কারণে পানি আটকে থাকায় পাকা-আধাপাকা ধানের ব্যাপক ক্ষতিসাধিত হচ্ছে। 

এতে, কৃষক ও সংশ্লিষ্টদের মাঝে দারুণ ক্ষোভের সৃষ্টি হয়। সোমবার ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোঃ জাকির হোসেন। তিনি ভুক্তভোগী কৃষকদের জলাবদ্ধতা নিরসনের আশ্বাস দেন। 

সরেজমিন দেখা যায়, উপজেলার  বোয়ালী ডাক্তারখানা থেকে উথলী সংযোগ মহাসড়কের দক্ষিণে প্রায় এক কিলোমিটার দূরত্বে তিনটি সেতুর নিচে অপরিকল্পিত জলাধার নির্মাণ করা হয়েছে। এমন জলাধারা নির্মাণের ফলে চলতি ইরি মওসুমে অন্তত আটটি বিরাট চকের কয়েক হাজার একর জমিতে আবাদকৃত ধানের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে।

মহাসড়কের পাশে বোয়ালী শ্মশান ঘাট ও বড় ব্রীজের দক্ষিণ দিকে চার থেকে ছয় বিঘা জমির চারদিকে বাঁধ দিয়ে এমন জলাধার নির্মাণ করায় উত্তর দিকের প্রবাহিত পানি আটকে আছে। এতে, উত্তরের বেলতা, কৃষ্ণপুর, নিহালপুর, টুবাখালি, জমদুয়ারা, বীর বাশাইল, কান্দা বাশাইল, রাধাকান্তপুর, মাগুরাইল, মিরপুর প্রভৃতি চকের কয়েক হাজার হেক্টর জমির ইরি-বোরো ধান ক্ষতির মুখে পড়েছে। সপ্তাহ জুড়ে অব্যাহত বৃষ্টি ও সেচের পানিতে এ পরিস্থিতি আরো নাজুক হয়ে পড়েছে। বিভিন্ন চকের নিম্নাঞ্চলের ধান ডুবে গেছে। 

অনেক কৃষক এমন পরিস্থিতিতে পানিতে থাকা পাকা, আধাপাকা ধান কেটে নিচ্ছে। 

বেলতা গ্রামের কৃষক সিরাজুল জানান, বৃষ্টিতে সৃষ্ট জলাবদ্ধতা  ও জমিতে হাটু পানি থাকায় তার ১৫ বিঘা পাকা ধান কাটতে অসুবিধা হচ্ছে। পানি যদি আর ৩/৪ দিন থাকে তাহলে আধাপাকা ধান গাছের গুড়া পচে হেলে পড়ে পানিতে ডুবে নষ্ট হয়ে যাবে। ব্রিজের নিচে যে বাঁধ দেয়া আছে তা যদি দ্রুত কেটে পানি নিষ্কাশনের ব্যবস্থা না করা হয় মাঠের সব ধান নষ্ট হয়ে যাবে।

অপর কৃষক মন্টু হালদার জানান, প্রতি বছর বৃষ্টির পানি ক্ষেতে জমলেও ব্রিজের নিচ দিয়ে বের হয়ে যেত। এবার এখানে বাঁধ দেয়ায় তা আর বের হচ্ছে না। চকের ধান পেকে গেছে। আজকে আমারা অনেক কৃষক একত্রিত হয়ে উপজেলা প্রশাসনকে জানিয়েছি। আমরা আশাবাদী প্রশাসন ২/১ দিনের মধ্যে এ সমস্যা সমাধান করবে। 

উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা রাজিয়া তরফদার জানান, বিভিন্ন চকের জলাবদ্ধতা নিয়ে ইতিমধ্যে সমাধানের জন্য ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের সাথে কথা হয়েছে।
দ্রুতই সমস্যা সমাধানের আশ্বাস দেয়া হয়েছে। এ বছর ৬০ হাজার হেক্টর জমিতে ইরি ধান আবাদের লক্ষ্য মাত্রা নির্ধারণ হয়েছে।

উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোঃ জাকির হোসেন সাংবাদিকদের জানান, তিনি যোগদানের আগেই অনুমোদিত জাইকার অর্থায়নে ও এলজিইডি মহাসড়কের কয়েকটি ব্রিজের নিচে জলাধার নির্মাণ করে। মূলত উদ্দেশ্য ছিল নদীর পানি আটকে রেখে যেন পাকা ধান কেটে নেওয়া যায়। বর্তমান উদ্ভূত পরিস্থিতি সামাল দিতে দ্রুত পানি নিষ্কাশনের ব্যবস্থা করা হচ্ছে। 

মুমু

×