
দখল দূষণে মৃত প্রায় ঐতিহাসিক ইছামতী নদী খনন কাজ শুরু হয়েছে। পাবনা জেলার বুকের উপর দিয়ে বয়ে চলা এ নদী শহর বাসীর ধারায় দখল দূষণের শিকার। সেনাবাহিনীর তত্ত্বাবধানে ১১০ কিলোমিটার নদী খনন কাজ চলছে। জটিলতা কাটিয়ে শহর অংশে পাঁচ কিলোমিটারব্যাপী ইছামতী নদী খনন কাজ শুরু হয়েছে।
জেলা প্রশাসক মফিজুল ইসলাম,পাবনা পানি উন্নয়ন বোর্ডের তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী সুধাংশু কুমার সরকার,সেনাবাহিনী সদস্য ও নদী উদ্ধার আন্দোলনের নেতাদের উপস্থিতিতে। ৩ মে শহরের লাইব্রেরি বাজার পুরাতন ব্রিজের পাশে খনন কাজ উদ্বোধন করা হয়। খনন কাজ অনেকটা দৃশ্যমান। এতে প্রাণ ফিরে পাচ্ছে ইছামতী নদী। এ নদী দখল দূষণ মুক্ত করতে ২০১৬ সালে ‘ইছামতী নদী উদ্ধার আন্দোলনে নামে পাবনাবাসী। অবৈধ দখলদারদের মামলা আর রাজনৈতিক প্রভাবে পথ হারায় নদী উদ্ধার কার্যক্রম। অবশেষে ইছামতী নদী পুনরুজ্জীবিতকরণ প্রকল্প গ্রহণ করে নদীটির প্রাণ ফেরানোর উদ্যোগ নেয় সরকার। তারই ফলশ্রুতিতে ২০২৩-২৪ অর্থবছর থেকে নদী উদ্ধার কাজ শুরু হয়।
প্রকল্প সংশিষ্টরা জানান,ঐতিহ্যবাহী ইছামতী নদীর প্রাণ ফেরাতে প্রকল্পটির খরচ ধরা হয়েছে এক হাজার ৫৫৪ কোটি টাকা। ২০২৭ সালে প্রকল্পের কাজ শেষ হওয়ার কথা রয়েছে। প্রকল্প প্রস্তাবনা ও নকশা অনুযায়ী, যাতায়াত ও সৌন্দর্যবর্ধনে নদীর বিভিন্ন স্থানে নির্মাণ হবে ছোট-বড় ২৩টি সেতু। থাকবে ড্রেনেজ ব্যবস্থা,ওয়াকওয়ে ও ঘাট। পরিবেশ রক্ষায় রোপণ করা হবে অসংখ্য বৃক্ষরাজি। প্রকল্পটি বাস্তবায়নে কাজ করছে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর চব্বিশ ইঞ্জিনিয়ার কনস্ট্রাকশন ব্রিগেড। সিএস ম্যাপ অনুযায়ী সাঁথিয়ার জগন্নাথপুরের মাধপুর ক্লোজার পয়েন্ট থেকে খননকাজ শুরু হয়েছে। বর্তমানে বিভিন্ন পয়েন্টে বেশ জোরেশোরে এগিয়ে চলেছে প্রকল্পের কাজ। এ ছাড়া বিভিন্ন এলাকায় অবৈধ স্থাপনাও উচ্ছেদ করা হয়েছে। খননের পর নোংরা ও দুর্গন্ধযুক্ত ভাগাড়ে পরিণত হওয়া গয়েশপুর, মালঞ্চি,আতাইকুলা এলকায় স্বচ্ছ পানির প্রবাহ বইছে।
এরই মধ্যে নদীর ১১০ কিলোমিটারের মধ্যে প্রায় ২৫ কিলোমিটার অংশের খননকাজ শেষ হয়েছে। ১৪০টি এক্সক্যাভেটর দিয়ে খননকাজ চলছে। পাবনাবাসী উচ্ছ্বসিত নদী খনন কাজ শুরু হওয়ায়। সবার প্রত্যাশা,আবার আগের মতো প্রাণ ফিরবে নদীর।
আঁখি