ঢাকা, বাংলাদেশ   সোমবার ০২ জুন ২০২৫, ১৯ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২

ভারী বর্ষণে আসাম ডুবেছে তিস্তা ফুঁসছে-রেড এলার্ট

তাহমিন হক ববী, নীলফামারী

প্রকাশিত: ১৯:৪৯, ৩১ মে ২০২৫

ভারী বর্ষণে আসাম ডুবেছে তিস্তা ফুঁসছে-রেড এলার্ট

ভারী বর্ষণে ভারতের আসামের বিভিন্ন এলাকা তলিয়ে গেছে। মারা গেছে ৫ জন। ১০ হাজার মানুষজনকে সরিয়ে নেয়া হয়েছে। অপরদিকে একইভাবে ভারী বৃষ্টিতে তিস্তা নদী সংযুক্ত সিকিমেও তিস্তা নদী ফুঁসে উঠেছে। আছড়ে পড়ছে তিস্তার বড় বড় ঢেউ। ফলে ওপারের তিস্তায় লাল সংকট জারি করা হয়েছে। পাহাড় থেকে তিস্তার ঢল সমতলে এগিয়ে আসছে। ভারতীয় সংবাদমাধ্যমগুলো ও তিস্তা অববাহিকার বন্যা পূর্বাভাস ও সর্তরকীকরন কেন্দ্র সূত্রে এ খবর জানা গেছে।
এদিকে তিস্তার পানির ঢল প্রবেশ করতে শুরু করেছে বাংলাদেশে। শনিবার (৩১ মে) বিকাল ৬টায় নীলফামারীর ডালিয়াস্থ পয়েন্টে তিস্তার পানি প্রবাহ পরিমাপ করা হয় ৫১ দশমিক ২৭ সেন্টিমিটার। যা একই দিন বেলা ৩টায় ছিল ৫১ দশমিক ১৬ সেন্টিমিটার। এই পয়েন্টে বিপৎসীমার ৫২ দশমিক ১৫ সেন্টিমিটার। এতে ৩ ঘণ্টায় পানি বেড়েছে ১১ সেন্টিমিটার।
ডালিয়া পানি উন্নয়ন বোর্ড এর বন্যা ও সতর্কীকরণ কেন্দ্র এবং ডালিয়াস্থ তিস্তার পানি পরিমাপক গেজরিডার নুরুল ইসলাম জানান, তিস্তা ব্যারেজের ৪৪টি জলকপাট খুলে রাখা হয়েছে। উজানের ঢল প্রবেশ করতে শুরু করেছে। নদীর পার এলাকায় নজরদারিতে রাখা হয়েছে।
কানাডার সাসকাচুয়ান বিশ্ববিদ্যালয়ের আবহাওয়া ও জলবায়ুবিষয়ক গবেষক মোস্তফা কামাল পলাশ  তিনি তার ভেরিফায়েড ফেসবুক আইডিতে তিন ঘণ্টা আগে  একটি পোস্ট দিয়ে জানিয়েছেন আজ শনিবার (৩১ মে) থেকে শুরু করে আগামী সোমবার (২জুন) পর্যন্ত বাংলাদেশের রংপুর এবং ভারতের আসাম,মেঘালয় এবং পশ্চিমবঙ্গের জলপাইগুড়ি,কোচবিহার, ও আলিপুর দুয়ার জেলায় উপরে ভারী থেকে খুবই ভারী বৃষ্টির আশঙ্কা করা যাচ্ছে। ফলে তিস্তা নদীর উপকূলবর্তী বাংলাদেশের নীলফামারী,লালমনিরহাট, রংপুর, কুড়িগ্রাম ও গাইবান্ধা জেলাগুলোতে স্বল্পমেয়াদি বন্যার প্রবল আশঙ্কা করা যাচ্ছে। সেই সাথে সিলেট ও ময়মনসিংহ বিভাগের নদীগুলোতে পাহাড়ি ঢলের আশঙ্কা করা হচ্ছে রবিবার ও সোমবার থেকে।
অপর দিকে ভারতের আসাম রাজ্যের, গত ২৪ ঘণ্টায় টানা বৃষ্টির জেরে ছয় জেলায় বন্যা পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে। তার মধ্যে রয়েছে কামরূপ মেট্রোপলিটান, কামরূপ, কাছাড়, ধেমাজি, লখিমপুর এবং গোলাঘাট।কামরূপে মাটি ধসে চাপা পড়ে পাঁচ জনের মৃত্যু হয়েছে।কামরূপ মেট্রোপলিটান, কামরূপ, কাছাড়, ধেমাজি, লখিমপুর এবং গোলাঘাটে ১০ হাজারেরও বেশি জলবন্দি মানুষকে ত্রাণশিবিরে সরিয়ে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। শনিবার ভারী থেকে অতি ভারী বৃষ্টির সতর্কতা দেওয়া হয়েছে চিরাং, বাক্সা, বরপেটা, বঙ্গাইগাঁও, বাজালি, তামুলপুর, দারাং এবং উদলগুড়িতে।
এ দিকে অঝোর বৃষ্টিতে বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে উত্তর সিকিম। ফিদাংয়ে তিস্তা নদী ভয়ংকর রূপ নিয়েছে। একইসঙ্গে তিস্তার জলস্ফীতিতে উদ্বেগ ছড়িয়েছে কালিম্পংয়ের মল্লিতেও। খরস্রোতা তিস্তার পানি বেড়েছে সেখানেও।
এ ছাড়া তুমুল বৃষ্টিতে উত্তরপূর্ব উত্তরপ্রদেশ থেকে উত্তর বিদর্ভ পর্যন্ত একটি নিম্নচাপ অরেখা সৃষ্টি হয়েছে। পূর্বাভাস অনুযায়ী দার্জিলিং, জলপাইগুড়ি এবং কালিংম্পয়ে ভারী থেকে অতিভারী বৃষ্টি শুরু হয় সন্ধ্যা থেকে। যে কারণে এই জেলাগুলিতে লাল সতর্কতা  জারি করা হয়েছে। নদীর জলস্ফীতির ওপর নজর রাখার কথা বলা হয়েছে সেচ  দপ্তরকে। ইতিমধ্যে নজরদারি শুরু করে দিয়েছে সেন্ট্রাল ওয়াটার কমিশন। বাংলাদেশে তিস্তার ওপারে এমন পরিস্থিতিতে তিস্তার পানি ধেয়ে আসতে শুরু হয়েছে বাংলাদেশেও । নীলফামারীর কালিগঞ্জ জিরোপয়েন্ট দিয়ে তিস্তান ঢল প্রবেশ করছে বলে জানান ওই এলাকার রশিদ, সমসের ও রহমত সহ অনেকে।

সাব্বির

×