
নেত্রকোনার দুর্গাপুরে কোরবানির পশুর হাটে কুড়িয়ে পাওয়া টাকার বান্ডেল মালিককে ফেরত দিয়ে সততার দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছেন হাটে নিযুক্ত ভলান্টিয়ার লালু মিয়া। তিনি পৌরশহরের খুজিউড়া এলাকার বাসিন্দা। কুড়িয়ে পাওয়া টাকা প্রকৃত মালিক নূর মোহাম্মদকে ফেরত দিয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে প্রশংসায় ভাসছেন ওই ভলান্টিয়ার।
জানা যায়, শুক্রবার বিকেলে পৌরশহরের ঐতিহ্যবাহী শিবগঞ্জ পশুর হাটে লালু মিয়াসহ অন্যান্য ভলান্টিয়াররা দায়িত্ব পালন করছিলেন। আসন্ন ঈদুল আজহা উপলক্ষে জমে উঠেছে কোরবানির পশুর হাট। প্রতি সোম ও শুক্রবার দুর্গাপুর উপজেলার বিভিন্ন এলাকা থেকে গরু-ছাগল নিয়ে আসেন বিক্রেতারা। স্থানীয় ক্রেতাদের পাশাপাশি দেশের বিভিন্ন এলাকা থেকে পাইকারি গরু কেনার উদ্দেশ্যে হাটে আসেন বহু ব্যবসায়ী।
পয়নিষ্কাশন, জাল টাকা শনাক্তকরণসহ হাটকে পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন ও নিরাপদ রাখতে অতিরিক্ত ভলান্টিয়ার নিয়োগ করা হয়েছে। এর ফলে ক্রেতা ও বিক্রেতা উভয়েই সন্তুষ্ট।
ঢাকার মোহাম্মদপুর থেকে আসা গরু ব্যবসায়ী নূর মোহাম্মদ গরু কেনার সময় মোটা অঙ্কের একটি টাকার বান্ডেল হারিয়ে ফেলেন। পরে হাটে কর্মরত ভলান্টিয়ার লালু মিয়া সেই টাকার বান্ডেল কুড়িয়ে পেয়ে তা ইজারাদারের ক্যাশ কাউন্টারে জমা দেন। বিষয়টি জানাজানি হলে হাটের ইজারাদার, স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তি ও পুলিশ সদস্যদের উপস্থিতিতে টাকা প্রকৃত মালিকের হাতে ফেরত দেওয়া হয়।
টাকার মালিক নূর মোহাম্মদ বলেন, “আমি এই হাট থেকে কয়েকটি গরু কেনার পর আরেকটি গরু কেনার সময় দেখি আমার শেষ সম্বল, টাকার খতি (কাপড়ের ব্যাগ) কোমরে নেই। আমি পাগলের মতো হাটের এদিক-ওদিক খুঁজতে থাকি। পরে জানতে পারি টাকা পাওয়া গেছে এবং তা ইজারাদারের ক্যাশ কাউন্টারে জমা আছে। প্রমাণ দেওয়ার পর আমি আমার টাকা হাতে পাই। লালু মিয়ার সততায় আমি অভিভূত।”
শিবগঞ্জ হাটের ইজারাদার শাহ আলম বলেন, “দুর্গাপুর-কলমাকান্দার তরুণদের আইকন, কেন্দ্রীয় বিএনপির আইনবিষয়ক সম্পাদক ব্যারিস্টার কায়সার কামাল ভাইয়ের নির্দেশে সাধারণ মানুষের স্বার্থে আমরা প্রতিটি বিক্রিত গরু থেকে নামমাত্র ইজারা মূল্য গ্রহণ করি। হাটের নিরাপত্তায় অতিরিক্ত ভলান্টিয়ার নিয়োগ করা হয়েছে, যার ফলে দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে পাইকাররা স্বাচ্ছন্দ্যে এখানে গরু কিনতে আসছেন। হারিয়ে যাওয়া টাকা সঠিক মালিকের হাতে ফেরত দিতে পেরে আমরা আনন্দিত।”
এ সময় উপস্থিত ছিলেন হাটের ক্যাশিয়ার খান সুমন, ক্যাশ-সহকারী আলী হোসেন, পুলিশ সদস্য শাহীন, ভলান্টিয়ার লালু মিয়া, ব্যবসায়ী রমজান আলী, আমিনুল ইসলাম, রমিজ উদ্দিন প্রমুখ।
সজিব