ছবি:জনকণ্ঠ
পটুয়াখালীর কুয়াকাটা সমুদ্র সৈকতের জিরো পয়েন্ট থেকে পূর্বদিকে প্রায় ২ কিলোমিটার নির্মাণাধীন মেরিন ড্রাইভ উদ্ভোদনের আগেই সমুদ্র গর্ভে বিলীন হচ্ছে। উত্তর-পশ্চিম বঙ্গোপসাগর ও তৎসংলগ্ন এলাকায় অবস্থানরত সুস্পষ্ট লঘুচাপটি একই এলাকায় নিম্নচাপে পরিনত হয়েছে। এটি বুধবার সকাল ছয়টায় পায়রা সমুদ্র বন্দর থেকে ২৪৫ কিলোমিটার দক্ষিণপশ্চিমে অবস্থান করছিল। এর প্রভাবে পটুয়াখালীর কুয়াকাটা সংলগ্ন বঙ্গোপসাগর বেশ বিক্ষুব্ধ হয়ে উঠেছে। বড় বড় ঢেউ তীড়ে পড়ছে।
বুধবার (২৯ মে) সকাল ১০ টা শুরু হওয়া জোয়ারের তান্ডবে এ মেরিন ড্রাইভটির তিন-চার স্থান থেকে অনেকাংশ ডেউয়ের তোরে সমুদ্র গর্ভে চলে গেছে শুধু তাই নয়, মেরিন ড্রাইভ রক্ষায় গাইডওয়াল, ওয়াকওয়ে ভেঙে পড়ে রয়েছে এতে ক্ষুব্ধ স্থানীয় সাধারণ মানুষ। স্থানীয়দের ভাষ্য, নিম্নমানের কাজ এবং সঠিক তদারকি না থাকা আর টেকসই মেরিনড্রাইভ না করার কারনে অতিদ্রুত এটি নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। তাদের ধারনা, আয়লা, সিডর বা এই রকমের শক্তিশালী কোনো ঘূর্ণিঝড় উপকূলে আঘাত হানলে পুরোপুরি নষ্ট হতে পারে নির্মাণাধীন এই সড়কটি।
জানা যায়, গত ২০২৪ সালে ৪ কোটি ৮৬ লাখ টাকা ব্যয়ে পর্যটকদের সুবিধা ও কুয়াকাটা সৈকতের সৌন্দর্য রক্ষায় মেরিন ড্রাইভের আদলে ২ কিলোমিটার সড়ক নির্মাণের কাজ হাতে নেয় কুয়াকাটা পৌরসভা। তবে এই কাজের মান নিয়ে স্থানীয় অনেকের রয়েছে অনিয়মের অভিযোগ। এবিষয়ে কথা বলতে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান, কুয়াকাটা পৌরসভার প্রশাসক ইয়াসীন সাদিকে ফোন দিলে তাদের মোবাইল নাম্বার বন্ধ পাওয়া যায়। এবং সংশ্লিষ্ট প্রকৌশলীকে ফোন দিলে দু'বার ফোন রিন হলেও তিনি ফোন রিসিভ করেননি।
স্থানীয় বাসিন্দা রিয়াজুল ইসলাম জানান, আমাদের চোখের সামনে জনগনের কোটি টাকা আত্মসাৎ হচ্ছে। নামে মাত্র মেরিন ড্রাইভ, যেখানে নেই কোনো রট নেই টেকসই কোনো গাইড ওয়াল কোনোমতে নামে মেরিন ড্রাইভ করায় এটি ভেঙে পড়েছে এর থেকে আরো বড় ও ঝুকিপূর্ণ ডেউ সামনে হবে কারন প্রতি বর্ষায়ই সমুদ্র এমন আগ্রাসী রুপ ধারন করে এবং উপকূলের অনেক ক্ষতি হয়।
মিজানুর রহমান নামের এক স্থানীয় জানান, মেরিন ড্রাইভের কাজের নামে চলছে হরিলুট কাজ করে যাচ্ছে। নামে মাত্র ভালো হচ্ছে বল্লেও আসলে কি কাজ করেছে তা এখন স্পষ্ট আমাদের দাবি কুয়াকাটা সৈলত রক্ষায় এই ঝুকিপূর্ণ এলাকায় টেকসই ভাবে কাজ করার।
পুলিশ বক্স এলাকা, সরদার মার্কেট, ফুচকা মার্কেট সহ বিভিন্ন স্থাপনার অনেকাংশ ডেউয়ের তোরে ভেঙ্গে পড়ে। কুয়াকাটা সৈকতে বেড়াতে আসা পর্যটকদের মাইকিং করে সরিয়ে দিচ্ছেন পুলিশ ও স্থানীয় স্বেচ্ছাসেবকরা।
এছাড়া গতকাল সন্ধ্যা থেকে উপকূলীয় এলাকায় মাঝারী বৃষ্টিপাত হচ্ছে। বাতাসের চাপ অনেকটা বৃদ্ধি পয়েছে। জোয়ারে নদ-নদীর পানির উচ্চতা ২ থেকে ৩ ফুট বৃদ্ধি পাওয়ায় প্লাবিত হয়েছেন নিম্নাঞ্চল। টানা বৃষ্টিতে জলাবদ্ধতার পাশাপাশি পানি বন্ধি হয়ে পড়েছে শত শত পরিবার। নিম্নচাপটি আরো ঘনীভূত হতে পারে এবং উপকূলীয় এলাকায় ঝড়ো হাওয়া আকারে বয়ে যেতে পারে। তাই পটুয়াখালীর পায়রা সহ দেশের সব সমুদ বন্দরকে ০৩ নম্বর স্থানীয় সতর্ক সংকেত দেখিয়ে যেতে বলা হয়েছে। সকল মাছধরা নিরাপদ আশ্রয়ে অবস্খান করতে বলেছে আবহাওয়া অফিস।
ট্যুরিস্ট পুলিশ কুয়াকাটা রিজিয়নের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার হাবিবুর রহমান বলেন, আজকে এই বৈরী আবহাওয়ায় পর্যটক এবং উৎসাহিত জনসাধারণকে সরিয়ে দিচ্ছি যাতে কোনো ধরনের দূর্ঘটনার সম্ভাবনা না থাকে। আবহাওয়া পুরোপুরি অনুকুলে না আসা পর্যন্ত আমরা দায়িত্বে রয়েছি।
আঁখি
