সুন্দরবনের চরে ৭৮ জনকে রেখে গেল বিএসএফ!

সুন্দরবনে বিএসএফ-এর ঠেলে দেওয়া ৭৫ জন বাংলাদেশি ও তিনজন ভারতীয় নাগরিককে পুলিশে সোপর্দ করা হয়েছে। রবিবার রাত সাড়ে ১১টার দিকে তাদেরকে কোস্টগার্ড সাতক্ষীরার শ্যামনগর থানায় সোপর্দ করে। উদ্ধারকৃত বাংলাদেশিদের বাড়ি নড়াইল, খুলনা, যশোর ও বরিশাল জেলায়। তাদের অধিকাংশই দুই মাস থেকে ৩৭ বছর ধরে বিভিন্ন মেয়াদে ভারতের গুজরাট রাজ্যের আহমেদাবাদ ও সুরাট শহরে বসবাস করতেন।

মামলার আসামিরা হলেন, খুলনার বটিয়াঘাটা উপজেলার ফুলবাড়িয়া গ্রামের খালিদ শেষের ছেলে আব্দুর রহমান (২০), নড়াইল জেলার কালিয়া উপজেলার বিষ্ণুপুর গ্রামের মুন্না শাহের ছেলে হাসান শাহ (২০) এবং একই গ্রামের সোহেল শেখের ছেলে সাইফুল শেখ (১৯)। এদের বাবা-মা বাংলাদেশি হলেও জন্ম ভারতের গুজরাট প্রদেশের আহমেদাবাদ জেলার যথাক্রমে নেহেরীনগর, জোপারপাচ্চি ও ফুলবাড়িয়ায়।

কোস্টগার্ড পশ্চিম জোনের মোংলা মিডিয়া সেলের দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা জানান, বিএসএফ-এর পুশ-ইন করা ৭৮ জনের মধ্যে ৭৫ জন বাংলাদেশি। অপর তিনজনের পৈতৃক বাড়ি বাংলাদেশে হলেও তাদের জন্ম ভারতে। সে কারণে ওই তিনজনের বিরুদ্ধে কোস্টগার্ড বাদী হয়ে রবিবার রাতেই শ্যামনগর থানায় মামলা দায়ের করেছে। ৭৫ জন বাংলাদেশিকেও একইসঙ্গে থানায় সোপর্দ করা হয়েছে। উদ্ধারকৃতদের মধ্যে ৬৭ জনের বাড়ি নড়াইল, ৬ জনের খুলনায়, দুইজনের যশোরে, একজনের বরিশালে এবং একজনের সাতক্ষীরায়।

সাতক্ষীরার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মিথুন সরকার জানান, ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনী বিএসএফ সাতক্ষীরার শ্যামনগরের সুন্দরবন সংলগ্ন মান্দারবাড়িয়া এলাকায় ঠেলে দেওয়া ৭৮ জন বাংলাভাষীকে রবিবার রাত ১১টার দিকে কোস্টগার্ড পশ্চিম জোন, মোংলা থেকে শ্যামনগর থানায় সোপর্দ করে। বাংলাদেশে পৈতৃক ভিটা থাকলেও তিনজনের জন্ম ভারতে হওয়ায় কোস্টগার্ড পশ্চিম জোনের মোংলা জোনাল অফিসের পিও মশিউর রহমান বাদী হয়ে রবিবার রাতে ওই তিনজনের বিরুদ্ধে অবৈধ অনুপ্রবেশের অভিযোগে (১১(সি) ধারায়) মামলা দায়ের করেন। তাদেরকে সোমবার দুপুরে আদালতে পাঠানো হবে। বাকি ৭৫ জনকে তাদের স্বজনদের হাতে তুলে দেওয়া হবে।

প্রসঙ্গত, গত ৯ মে সন্ধ্যায় ভারতীয় বিএসএফ ৭৮ জনকে বাংলাদেশি নাগরিক হিসেবে ভারত–বাংলাদেশ সীমান্তের বঙ্গোপসাগর সংলগ্ন গভীর সুন্দরবনের মান্দারবাড়িয়া এলাকার একটি চরে ঠেলে দেয়। সেখান থেকে তারা পায়ে হেঁটে বনবিভাগের মান্দারবাড়িয়া টহল ফাঁড়িতে চলে আসে। সেখানে জিজ্ঞাসাবাদ শেষে রবিবার বিকেলে সমুদ্রপথে একটি জাহাজ ও একটি স্পিডবোটে করে বাগেরহাটের মোংলা কোস্টগার্ড অফিসে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে জানা যায়, উদ্ধারকৃতদের মধ্যে ৭৫ জন বাংলাদেশি এবং তিনজন ভারতীয়। রাত সাড়ে ১১টার দিকে তাদের সাতক্ষীরার শ্যামনগর থানায় সোপর্দ করা হয়।