ঢাকা, বাংলাদেশ   বুধবার ১৭ এপ্রিল ২০২৪, ৩ বৈশাখ ১৪৩১

লক্ষীপুরে মায়ের খন্ডিত লাশ উদ্ধার, ছেলে আটক

নিজস্ব সংবাদদাতা, লক্ষীপুর

প্রকাশিত: ১৯:৩০, ২৫ এপ্রিল ২০২৩

লক্ষীপুরে মায়ের খন্ডিত লাশ উদ্ধার, ছেলে আটক

লক্ষীপুর মডেল থানা

লক্ষীপুর শহরের সড়ক ও জনপথ বিভাগের আবাসিক স্টাফ কোয়ার্টার থেকে মমতাজ বেগম (৪৭) নামে এক নারীর খন্ডিত লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ। এ ঘটনায় নিহতের বড় ছেলে শরিফুল ইসলাম বাপ্পীকে আটক করেছে পুলিশ।

মমতাজ বেগমের মৃত্যুর ঘটনায় তার ছোট মেয়ে রোজি আক্তার অজ্ঞাত আসামি করে মামলা দায়ের করেছেন। তবে ঘটনার পর থেকেই নিহতের ছোট ছেলে লক্ষীপুর সরকারি ডিগ্রী কলেজের ছাত্র সাইফুল ইসলাম রকি লাপাত্তা রয়েছেন। 

এর আগে গতকাল সোমবার দিবাগত রাত ২টার দিকে ওই নারীর খন্ডিত মৃতদেহ (বিবস্ত্র) উদ্ধার করে ময়না তদন্তের জন্য জেলা সদর হাসপাতাল মর্গে পাঠায় পুলিশ।

পুলিশ জানায়, নিহত মমতাজ বেগম লক্ষীপুর সদর উপজেলা কুশাখালী ইউনিয়নের গোরারবাগ গ্রামের মৃত আব্দুল মতিনের স্ত্রী। নিহতের মৃত স্বামী সড়ক বিভাগের ড্রাইভার হিসেবে চাকরি করতেন। স্বামী মারা যাওয়ার পর থেকেই তার দুই ছেলে শরিফুল ইসলাম বাপ্পী ও ছোট ছেলে সাইফুল ইসলাম রকিকে নিয়ে সড়ক বিভাগের স্টাফ কোয়ার্টারে বসবাস করছিলেন তিনি। তার স্বামী মারা যাওয়ার পর থেকে বর্তমানে বড় ছেলে বাপ্পি সড়ক বিভাগে মাস্টার রুলে কাজ করছেন। 

পুলিশ ও স্থানীয়রা জানায়, নিহত ওই নারীর স্বামী আবদুল মতিন এক সময়ে সড়ক বিভাগে রোলার চালক হিসেবে চাকরি করতেন। ২০০৫ সালে নিহত মমতাজ বেগমের (৪৭) স্বামী আবদুল মতিন মারা যান। এরপর থেকে মমতাজ বেগম স্টাফ কোয়ার্টারে দুই ছেলেকে নিয়ে বসবাস করতেন। তার স্বামী মারা যাওয়ার পর বড় ছেলে শরিফুল ইসলাম বাপ্পী মাস্টার রুলে সড়ক ও জনপথ বিভাগে কাজ করে আসছেন। রাতে তার বড় ছেলে শরিফুল ইসলাম বাপ্পি বাসায় ফিরে দেখেন তার মায়ের কয়েক খন্ডিত লাশ পড়ে আছে। পরে স্থানীয়রা পুলিশকে খবর দেয়। রাত দুইটার দিকে পুলিশ এসে নিহত মমতাজ বেগমের লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য জেলা সদর হাসপাতাল মর্গে পাঠায়। ওই নারীকে পরিকল্পিতভাবে হত্যা করে লাশ কয়েকটি খন্ডে খন্ডিত করে দুর্বৃত্তরা। জড়িতদের চিহ্নিত করে দ্রুত গ্রেপ্তারের দাবি জানান স্থানীয়রা।

লক্ষীপুর সদর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মোসলেহ উদ্দিন বলেন, ‘লক্ষীপুর সড়ক ও জনপদ বিভাগের স্টাফ কোয়ার্টারে ভেতরে এক নারীর বিবস্ত্র অবস্থায় কয়েক খন্ডিত লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য সদর হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়েছে। এটি একটি নৃশংস হত্যাকাণ্ড। জড়িতদের চিহ্নিত করে গ্রেপ্তারের অভিযান চলছে। এ বিষয়ে অজ্ঞাত সংখ্যক লোককে আসামি করে মামলা করেছেন নিহতের মেয়ে রোজি আক্তার।’ 

তিনি বলেন, ‘পারিবারিক বিষয় বা অন্য কোনো কারণে এই হত্যাকাণ্ড ঘটেছে কিনা সে বিষয়ে তদন্ত করা হচ্ছে। তবে ঘটনার পর থেকে নিহতের ছোট ছেলে রকি লাপাত্তা রয়েছে। এ ব্যাপারে অন্যান্য নিকটতম স্বজনদের জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। তবে এটি একটি পরিকল্পিত হত্যাকাণ্ড।’ 

জেলা সদর মডেল হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার ডা. আনোয়ার হোসেন বলেন, ‘মঙ্গলবার দুপুরের পর নিহতের মরদেহের ময়না তদন্ত সম্পন্ন হয়েছে। ওই নারীকে ধারালো অস্ত্রের আঘাতে বেশ কয়েকটি খন্ডে খন্ডিত করা হয়েছে। এটি নৃশংস হত্যাকাণ্ড।’ 

পুলিশ সুপার ড. মাহফুজ্জামান আশরাফ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে বলেন, ‘এটি খুবই নৃশংস হত্যাকাণ্ড। এ ব্যাপারে সুষ্ঠু তদন্ত করে দোষীদের গ্রেপ্তার করে আইনের আওতায় আনা হবে। যত দ্রুত সম্ভব ঘটনাটি তদন্ত করে ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে।’

এমএইচ

×