ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

যুদ্ধদিনের স্মৃতি 

পাকসেনাদের বহু ক্যাম্পে গেরিলা আক্রমণ করেছি

মো. মামুন চৌধুরী, হবিগঞ্জ

প্রকাশিত: ২৩:৫১, ৬ মার্চ ২০২৩

পাকসেনাদের বহু ক্যাম্পে গেরিলা আক্রমণ করেছি

বীর মুক্তিযোদ্ধা হামিদুল হক

বীর মুক্তিযোদ্ধা হামিদুল হক চৌধুরী মাহতাব হবিগঞ্জের চুনারুঘাট উপজেলার উবাহাটা গ্রামের বাসিন্দা। মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতিচারণে এই বীর মুক্তিযোদ্ধা বলেন, ১৯৭১ সালে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ৭ মার্চের ভাষণের পর আর ঘরে মনে বসছিল না। সে সময় শাকির মোহাম্মদ স্কুলে ১০ম শ্রেণির টেস্ট পরীক্ষা দিয়েছি মাত্র। সিদ্ধান্ত নিলাম মুক্তিযুদ্ধে যাওয়ার। কিন্তু কিভাবে যাওয়া যায়, সেটা নিয়ে ভাবছিলাম। তখন জুন মাস ছিল।

মুক্তিযুদ্ধে যোগ দেওয়ার উদ্দেশ্যে একদিন সকালে কাঁঠাল ও রুটি খেয়ে রওনা দেই। সঙ্গে ছিলেন গোড়ামী তালুকদার বাড়ির বীর মুক্তিযোদ্ধা এবাদ আলী তালুকদার মামা। মামা-ভাগিনা মিলে পাহাড়ি পথে হেঁটে যাচ্ছিলাম। সাতছড়ি চা বাগানে আমাদের পেলেন ক্যাপ্টেন আব্দুল মতিন। তিনি আমাদের ৩নং সেক্টর প্রধান কেএম শফিউল্লাহর কাছে পাঠান। যাই ভারতের খোয়াইয়ে।

তিনি বলেন, সাবেক মন্ত্রী মরহুম এনামুল হক মোস্তফা শহীদের সহায়তায় অমর কলোনি ইয়ুথ ক্যাম্পে যাওয়া হয়। সেখান থেকে অমপিনগর ট্রেনিং সেন্টারে। আমরা প্রায় এক মাস প্রশিক্ষণ নেই। পরে ৩নং সেক্টরের হেডকোয়ার্টারে। সেখান থেকে কাঁচামাটি ক্যাপ্টেন মতিউর রহমানের কোম্পানিতে পাঠানো হয়।

প্রথমে শহীদ তরফদার পরবর্তী ক্যাপ্টেন এজাজের অধীনে গ্রুপ কমান্ডার তজমুল হক তরফদারের গ্রুপের হয়ে কালেঙ্গা, দেউন্দি, লালচান্দ, শাকির মোহাম্মদসহ বিভিন্ন স্থানে গেলিরা যুদ্ধে অংশগ্রহণ করে তুমুল লড়াই করেছি। এই গ্রুপে আমার সঙ্গে ছিলেন বীর মুক্তিযোদ্ধা এবাদ আলী তালুকদার, বীর মুক্তিযোদ্ধা জামাল তালুকদার, বীর মুক্তিযোদ্ধা সৈয়দ মোস্তুফা, বীর মুক্তিযোদ্ধা মর্তুজ তরফদারসহ ১৪ জন।
হামিদুল হক চৌধুরী মাহতাব বলেন, আমরা একসঙ্গে গেরিলাযুদ্ধে রাজাকার ও পাকসেনাদের অনেক ক্যাম্পে হামলা করেছি এবং জ্বালিয়ে দিয়েছি। ডিসেম্বর মাসে বিজয় নিয়ে ফিরে আসি। সেই সময়ে চারদিকে শুরু হয় বিজয়ের জয়ধ্বনি। দেশ পুরোপুরি স্বাধীন হয়। শায়েস্তাগঞ্জ হাইস্কুলে সাব-সেক্টর কমান্ডার ক্যাপ্টেন এজাজের কাছে অস্ত্র জমা দেই।
তিনি বলেন, যুদ্ধ শেষ হলে পরে এসএসসি পরীক্ষায় অংশ নিয়ে ভালো ফল অর্জন করি। সেই থেকে আজ পর্যন্ত দেশের কল্যাণ কামনা করে আসছি।

×