ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

বাজারের বর্জ্যে নদী দূষণ ॥ ছড়াচ্ছে রোগব্যাধি

রাজীব হাসান কচি, চুয়াডাঙ্গা

প্রকাশিত: ২১:২৮, ২৩ ফেব্রুয়ারি ২০২৩

বাজারের বর্জ্যে নদী দূষণ ॥ ছড়াচ্ছে রোগব্যাধি

বাজারের বর্জ্য এভাবেই গিয়ে মিশছে মাথাভাঙ্গা নদীতে

মাথাভাঙ্গা নদী সংলগ্ন বড়বাজারে জবাই করা পশু ও মুরগি-মাছের রক্ত-বর্জ্য পচে নদীর পানি দূষণের পাশাপাশি উৎকট দুর্গন্ধে ব্যবসায়ী, ক্রেতাসহ নদীর দু’পাড়ের প্রায় দুই কিলোমিটারজুড়ে বসবাসকারীদের জীবনযাপন দুর্বিষহ হয়ে পড়েছে। পৌরসভা ও সিভিল সার্জনের কাছে লিখিত অভিযোগ করেও প্রতিকার মিলছে না। এতে করে শ্বাসকষ্ট, শরীরে ক্ষত, পেটের পীড়া, চর্মরোগসহ বিভিন্ন উপসর্গ দেখা দিচ্ছে। এ ব্যাপারে দ্রুত ব্যবস্থা না নিলে স্বাস্থ্যহানি ঘটার আশঙ্কা প্রকাশ করেছে স্থানীয় স্বাস্থ্য বিভাগ। 
১৯৮২ সালে চুয়াডাঙ্গা বড়বাজারের মাথাভাঙ্গা নদীর তীরে প্রতিষ্ঠা করা হয় মাছ-গোশত, সবজি ও মুদি বাজার। এ ছাড়াও শনিবার ও মঙ্গলবার বসে পানের হাট। এ বাজারে গোশত পট্টিতে রয়েছে অপরিকল্পিত ড্রেনেজ ব্যবস্থা। একটি মাত্র ড্রেন দিয়ে শহর ও বাজারের ময়লা পানি, রক্ত-বর্জ্য গিয়ে মাথাভাঙ্গা নদীর পানি দূষণ করছে। নদীর কোল ঘেঁষে চারদিকে বর্জ্য-আবর্জনা পড়ে থাকায় কাক, শকুন, চিল ও শুকর ঘাঁটাঘাঁটি করে আরও দুর্গন্ধ ছড়াচ্ছে।

মাথাভাঙ্গা নদীর তীরের বাসিন্দা ফুলবানু, মহর আলী ও বীর মুক্তিযোদ্ধা শুকুর আলী অভিন্নভাবে বলেন, নদীর দূষিত পানিতে গোসল করার কারণে গায়ে চুলকানি হচ্ছে। পানিতে কাপড় চোপড় কাঁচলে তাতেও দুর্গন্ধ থেকে যায়। এ ছাড়াও বাতাসে এত দুর্গন্ধ যে বসবাস করাই দুষ্কর হয়ে পড়েছে। বড়বাজারের মাছ ব্যবসায়ী কালু ও কাঁচা সবজি বিক্রেতা ইমতিয়াজ জানান, ড্রেনেজ ব্যবস্থা না থাকায় বছরের পর বছর জবাই করা পশুর রক্ত ও নাড়িভুঁড়ি পচে দুর্গন্ধ আরও বাড়ছে। নিচের বাজার ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি শাহ আলম জানান, বর্জ্য সরানো ব্যবস্থা না থাকায় সেগুলো পচে দুর্গন্ধ ছড়াচ্ছে। 
চুয়াডাঙ্গা সিভিল সার্জন ডা. সাজ্জাদ হাসান বলেন, প্রবহমান নদী হলেও জীবজন্তু জবাই করা বর্জ্য নদীতে ফেলা যাবে না। এটা স্বাস্থ্যসম্মত নয়। এ নদীর পানি ব্যবহার করলে বিভিন্ন বড় ধরনের রোগ হতে পারে। নদী দূষণ কাজে জড়িতদের আইনের আওতায় আনতে হবে। 
চুয়াডাঙ্গা পৌরসভার প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা ও সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শামীম ভুঁইয়া বলেন, বাজার ব্যবস্থা উন্নত করার জন্য প্রায় ৫ কোটি টাকা বরাদ্দ মিলবে। সেটা পেলে এ ব্যাপারে কাজ শুরু হবে। এই কাজ শেষ হলে এ ভোগান্তি আর থাকবে না।

×