ঢাকা, বাংলাদেশ   মঙ্গলবার ১৩ মে ২০২৫, ৩০ বৈশাখ ১৪৩২

ঋণের প্রলোভন দেখিয়ে ৫ লাখ টাকা নিয়ে উধাও এনজিও

নিজস্ব সংবাদদাতা, নীলফামারী

প্রকাশিত: ১৬:২৭, ১৩ ফেব্রুয়ারি ২০২৩

ঋণের প্রলোভন দেখিয়ে ৫ লাখ টাকা নিয়ে উধাও এনজিও

উদ্ভাসিত সামাজিক সংস্থা নামের এনজিও

সৈয়দপুরে ঋণের প্রলোভন দেখিয়ে সঞ্চয় হিসেবে নারী সদস্যদের প্রায় ৫ লাখ টাকা নিয়ে উধাও হয়েছে উদ্ভাসিত সামাজিক সংস্থা নামের একটি এনজিও। 

সোমবার (১৩ ফেব্রুয়ারি) নুর মোহাম্মদ (১৭) নামে এক মাঠকর্মী বাদী হয়ে ওই এনজিওর পলাতক আমিনুল ইসলাম (৩৫) ও আ. রহমান (৩৫) নামে দুই কর্মকর্তার বিরুদ্ধে সৈয়দপুর থানায় অভিযোগ দায়ের করেছেন।

জানা যায়, এনজিওটির শহরের গোলাহাট এলাকায় এরিয়া ও উত্তরা ইপিজেড সংলগ্ন কাজিহাটে শাখা অফিস স্থাপন করেন। তারা এ দুই অফিস মিলে চলতি মাসের ৫ ফেব্রুয়ারি নুর মোহাম্মদকে নিয়োগ দেয়। তাদের নির্দেশনা অনুযায়ী এ উপজেলার বোতলাগাড়ি ইউনিয়ন, শহরের নতুন বাবু পাড়া, কুন্দল ডাঙ্গাপাড়া, কাজিপাড়া, উত্তরা আবাসন, উত্তরা ইপিজেডসহ বিভিন্ন এলাকায় নারীদের নিয়ে ছোট-ছোট দল গঠন করেন। সদস্য অন্তর্ভুক্তির পর ১০০ টাকা ঋণের প্রলোভন দিয়ে প্রস্তাবিত ঋণের বিপরিতে ১০ ভাগ টাকা সঞ্চয় হিসাবে জমা নেওয়া হয়। এতে এ যুবকের মাধ্যমে প্রায় অর্ধশতাধিক ও  অভিযুক্ত এ দুই কর্মকতা মিলে শতাধিক নারী সদস্যদের কাছে প্রায় পাঁচ লাখ টাকা উত্তলন করেন।

এতে নব নিযুক্ত মাঠকর্মী ও স্থানীয় যুবকের সন্দেহ হলে ১২ ফেব্রুয়ারি তিনি অফিসে ছুটে যান। সেখানে তালাবদ্ধ পেয়ে ফোনে কল দিয়ে নানা বাহানায় খুঁজতে থাকেন। এনজিও কর্তারা তার ফোনটি রিসিভ করলেও তাদের অবস্থানের কথা তাকে জানান না। পরে বাধ্য হয়ে মাঠকর্মী নুর মোহাম্মদ বাদী হয়ে সৈয়দপুর থানায় ওই দুই কর্মকর্তাও বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করেন।

মাঠকর্মী নুর মোহাম্মদ জানান, আমার বাবা পেশায় রিকশা চালক। সবে মাত্র এসএসসি পাশ করেছি। সংসারের অভাবের তাড়নায় এ চাকরিতে যোগ দেই। তবে ১০ দিনেই বুঝতে পারি। ঋণের নামে তারা গ্রাহকের সঙ্গে প্রতারণা করছে। কারণ, কোনো লেজার নেই। গ্রাহকের টাকা তারা বিকাশের মাধ্যমে তুলেছে। এছাড়া এর আগে তারা মৌলভীবাজারে একইভাবে প্রতারণা করে পালানোর বিষয়টি জানার পরই গ্রাহকদের জানিয়ে দেন। তাদেরকে খোঁজাখুজির পর না পেয়ে স্থানীয় প্রশাসনের আশ্রয় নিয়েছেন।

শহরের ১১নং কুন্দল ডাঙ্গাপাড়া এলাকার ভুক্তভোগী আইরিন, মিনতি, রওশন, শেফালি, তানিয়া, মর্জিনা, লিপি জানান, নতুন এ এনজিওর কর্তারা সহজশর্তে ঋণের প্রলোভন দেখায়। ঋণের ১০ ভাগ হিসাবে ৪১ হাজার টাকা জমা নেয়। প্রত্যেকেই এক লাখ টাকা দেয়ার প্রতিশ্রুতি দেয়। তবে টাকা নেয়ার পর খোঁজ পাওয়া যাচ্ছে না। এমনকি তাদের অফিস তালাবদ্ধ পাওয়া গেছে। ফোন বন্ধ। এখন আমরা কোথায় যাব, কি করব? বুঝতে পারছি না।

শহরের গোলাহাট এলাকার বাড়ির  উজ্জল জানান, তারা মৌখিক চুক্তির মাধ্যমে বাড়িটি ভাড়ায় নেয়। আগামী ১৫ ফেব্রুয়ারি চুক্তি করবে এবং ভাড়া অগ্রিম দেবে। এমন শর্তে ভাড়া নেয়ার পর এখন তাদের মোবাইলেও পাওয়া যাচ্ছে না। তবে এমন প্রতারকদের আইনের আওতায় নিয়ে কঠিন শাস্তি দাবি করেন তিনি।

এ বিষয়ে সৈয়দপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মখর্তা (ওসি) মফিজুল ইসলাম বলেন, এ বিষয়ে আমরা একটা অভিযোগ পেয়েছি। তদন্তের পর যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

এমএইচ

×