ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৪ বৈশাখ ১৪৩১

বসন্তবরণ-ভ্যালেন্টাইন ও আন্তর্জাতিক  মাতৃভাষা দিবস

সৈয়দপুরে এবার কোটি টাকার ফুল বিক্রির প্রস্তুতি

সংবাদদাতা, সৈয়দপুর, নীলফামারী

প্রকাশিত: ২৩:৪৬, ১২ ফেব্রুয়ারি ২০২৩

সৈয়দপুরে এবার কোটি টাকার ফুল বিক্রির প্রস্তুতি

নীলফামারীর সৈয়দপুরে ফুলের দোকানে ফুল সাজাতে ব্যস্ত দোকানি

আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস, ঋতুরাজ বসন্ত বরণ ও ‘ভ্যালেন্টাইনস ডে’ উপলক্ষে চলতি ফেব্রুয়ারি মাসে সৈয়দপুরে প্রায় কোটি টাকার ফুল বিক্রির আশা করছেন ব্যবসায়ীরা। এ নিয়ে খুচরা বিক্রেতারা ফুল বাণিজ্যের জন্য সব ধরনের প্রস্ততি গ্রহণ করেছেন। ঋতুরাজ বসন্ত ও ভালবাসা দিবসকে বরণ করতে এ শহরের উঠতি তরুণ-তরুণীরা অধীর আগ্রহে প্রহর গুনছেন। হলদে শাড়ি আর বাহারি রঙের ফুল খোঁপায় গুঁজে প্রিয়জনকে উপহার দেবেন ফুল। এছাড়াও মহান ২১ ফেব্রুয়ারি ‘আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা’ দিবস। শহীদদের স্মরণ করতে সবার হাতে থাকবে ফুল। আর এই তিন দিবস ঘিরে জমজমাট হবে এবার ফুল বাণিজ্য।
শহরের শহীদ ডা. জিকরুল হক সড়ক ও সৈয়দপুর প্লাজার নুর ফুল বিতান, বিপ্লব ফুল ঘর, নওশাদ ফুল বিতান, শাম্মি ফুল বিতান, বিয়েবাড়ি ধুম, পাপিয়া ফুল বিতান ও পাপন ফুল বিতানের খুচরা ফুল বিক্রেতারা জানান, এ মাসেই ফুল বিক্রির মহৎসব চলে। আগে শুধু মহান ২১ ফেব্রুয়ারি আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস, মহান স্বাধীনতা ও বিজয় দিবস, যে কোনো সংবর্ধনা, বিদায়, বিয়েবাড়ি, পূজা অর্চনা এবং উপহার হিসেবে ফুল বিক্রি হতো। এতে কোনো রকম টিকেছিলাম। বর্তমানে ফেব্রুয়ারি মাসে রোজ ডে, বসন্ত বরণ উৎসব ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসে ব্যাপকভাবে ফুলের ব্যবহার বেড়েছে। এতে একটি গোলাপ ২০ থেকে ৫০ টাকা, আর একটু বড় সাইজের গোলাপ ৫০-৮০ টাকা, জারবেরা ৩০ থেকে ৬০ টাকা, গ্লাডিওলাস ৩০ থেকে ৬০ টাকা ও রজনীগন্ধা প্রতিস্টিক ১০-২০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে।
ফুলের সাজ-সজ্জাকারী মশিউর রহমান জানান, এ মাসে প্রতিটি দোকানে ১৫ হাজার গোলাপ, ৬ হাজার গ্লাডিওলাস, ১০ হাজার রজনীগন্ধা, ১০ হাজার জারবেরা, ২০ হাজার জিপসি, ২০ হাজার চন্দ্রমল্লিকা, ১৫ হাজার ডালিয়া ও প্রায় দেড়লাখ গাদা ফুল বিক্রি হবে। আর বর্তমান বাজারদর অনুযায়ী এতে প্রায় কোটি টাকার ফুল বিক্রি হতে পারে এ জনপদে। এ উপজেলা শহরে মাত্র ২০ টি বাগান রয়েছে, যা দিয়ে একদিনের চাহিদা মেটাতে পারে না।
তাই, বাধ্য হয়ে খুচরা ফুল বিক্রেতারা যশোরের গদাগারি, চুয়াডাঙ্গা, সাতক্ষীরা, পোটচাঁদপুর থেকে রেলপথে ফুল আমদানি করেন। তবে ট্রেনে ফুল পরিবহনে বিশেষ সংরক্ষণ ব্যবস্থা না থাকায় ১২ ঘণ্টার দূরত্বের পথে পরিবহনের সময়ই নষ্ট হয়ে যায় ৩০ ভাগ ফুল। কার্টনে ফুলের পাপড়ি ঝরে যায়, মাথা ভেঙ্গে যায় ও কৃত্রিম গ্যাসে ঝলসে যায় অনেক স্টিক। পাশাপাশি বাগানে মূল্য ও পরিবহন ব্যয় বৃদ্ধি পেয়েছে। সর্বপরি ত্রুটিপূর্ণ পরিবহন ব্যবস্থাপনা ও নষ্ট হওয়া বাদে ৭০ ভাগ ফুল বিক্রি করে এক বছরের দোকান ভাড়া, বিদ্যুৎ বিল, শ্রমিক মজুরি ও পরিবারের ব্যয় মেটাচ্ছেন ব্যবসায়ীরা।
পাপন ফুল বিতানের স্বত্বাধিকারী মবিনুল ইসলাম এ্যাপোলো বলেন, ফুল বিক্রি ৯ মাস ভাল চলে। তবে ফেব্রুয়ারি,  মার্চ ও ডিসেম্বরের এক সপ্তাহ চলে। সবমিলিয়ে দিবসগুলোতে গোলাপের চাহিদা বেশি। মহামারি করোনার আগে প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে ফুল পরিবহনে রেলওয়েতে বিশেষ ব্যবস্থার ক্ষেত্র তৈরির কথা ছিল। তারা ফুল ব্যবসায়ীদের সঙ্গে আলোচনা করে সংরক্ষণের পরামর্শ নিয়েছিলেন। তবে ফুল পরিবহনে সংরক্ষণ ব্যবস্থাপনা আজও গড়ে ওঠেনি। এতে ফুলের মূল্য কমত। তাই রেলওয়েতে ফুল পরিবহনে সংরক্ষণ ব্যবস্থার দাবি জানান সকল ব্যবসায়ী।
মাগুরায় ফুলচাষিদের ব্যাপক প্রস্তুতি  ॥ নিজস্ব সংবাদদাতা মাগুরা  থেকে জানান,  ১৪ ফেব্রুয়ারি  বিশ্ব ভালবাসা দিবস ও বসন্ত উৎসব এবং আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস  উপলক্ষে  মাগুরায় ফুলচাষিরা ব্যাপক প্রস্তুতি গ্রহণ করেছে।
মাগুরায় উৎপন্ন্ ফুল ঢাকায় পাঠানো হচ্ছে । ফলে চাষিরা আর্থিকভাবে লাভবান হচ্ছেন। প্রতিটি ফুলের দাম ১০টাকা থেকে ১৫টাকা দরে বিক্রি করা হয়। জানা গেছে,  মাগুরায় বাণিজ্যিকভাবে জারবেরা ও গ্লাডিওলাস, গাদা  ফুলের চাষ করে সফলতার মুখ দেখছেন অনেকে। মাগুরা সদর উপজেলার বেলনগর গ্রামে প্রায় ৩ একর জমিতে গড়ে উঠেছে জারবেরা ও গ্লাডিওলাস ফুলের বাগান। তার মধ্যে ২ একর জুড়ে রয়েছে জারবেরা ফুল। 

×