ঢাকা, বাংলাদেশ   মঙ্গলবার ১৩ মে ২০২৫, ৩০ বৈশাখ ১৪৩২

রাণীশংকৈলে বরই চাষে ভাগ্য বদল আমানুল্লাহর

রাণীশংকৈল (ঠাকুরগাঁও) প্রতিনিধি

প্রকাশিত: ১৪:৫৪, ১১ ফেব্রুয়ারি ২০২৩

রাণীশংকৈলে বরই চাষে ভাগ্য বদল আমানুল্লাহর

বরই বাগান

রাণীশংকৈলে বরই (কুল) চাষ করে ভাগ্যে বদলেছে কৃষকের। শীতের সুস্বাদু ফল বরই। দেশে এখন টক-মিস্টি, দেশি ও বিদেশি বিভিন্ন জাতের বরই চাষ হচ্ছে। বলছিলাম ঠাকুরগাঁওয়ের রাণীশংকৈল উপজেলার নেকমরদ করনাইট গ্রামের কৃষক আমানুল্লাহ আমান এর কথা‌। 

গত দুই বছর আগে টিভিতে কৃষি দিবানিশিতে বরই চাষের উপর একটি প্রতিবেদন দেখে তিনি নিজেও বরই চাষে উদ্বুদ্ধ হন।  সেই সুবাদে আমান তার পাঁচ বিঘা জমিতে বিভিন্ন জায়গা থেকে কাশ্মীরি আপেল কুল ও বল সুন্দরী কুলের ৪৩০টি চারা সংগ্রহ করে রোপণ করেন। 

চারা রোপণের ৬ মাস পরেই ফুল আসতে শুরু করে। বর্তমানে তার গাছে গাছে দুলছে থোকা থোকা বরই। এমন দৃশ্য যেন চোখ জুড়িয়ে যাওয়ার মতো। দূরদূরান্ত থেকে অনেকেই আসছেন তার বরই বাগান দেখার জন্য । এমন উদ্যোগে এখন তার বাগানে কাজ করে ছয় থেকে সাতটি পরিবার চলছে। 

রফিকুল ইসলাম নামে এক স্থানীয় বাসিন্দা জানান, আমান ভাই যে বাগানটি করেছে এটি তার ভালো একটি উদ্যোগ। আমি মাঝে মাঝেই তার বাগান দেখার জন্য আসি। এবার গত বছরের তুলনায় বরই এর ফলন বেশি ভালো হয়েছে। 

এর আগে আমাদের এলাকায় এমনভাবে বরই চাষ হতো না। ইদানিং কিছু কিছু জায়গায় চাষ হওয়া শুরু হয়েছে। আমিও পরিকল্পনা করছি আমার কিছু পতিত জমি আছে সেখানে বরই ও মাল্টা চাষাবাদ করার।

কৃষক আমানুল্লাহ আমান জানান, টিভিতে প্রতিবেদন দেখে আমারও ইচ্ছে জাগে বরই চাষ করার। আমার আরো অন্যান্য চাষাবাদ রয়েছে। বরই চাষের আগ্রহের জায়গা থেকে বাড়ির পাশে ৫ বিঘা জমিতে বিভিন্ন জায়গা থেকে বরই চারা সংগ্রহ করে রোপণ করি। গতবারের থেকে এবার বরইয়ের ফলন বেশি ভালো হয়েছে। গত বছর এ বাগান থেকে আমি সব মিলিয়ে ৫ থেকে ৬ লাখ টাকার মতো বরই বিক্রয় করেছি। এবার যে ফলন হয়েছে আবহাওয়া যদি অনুকূলে থাকে তাহলে গত বছরের থেকে বেশি লাভবান হতে পারবো । 

সব থেকে বড় বিষয় হলো আমি আমার চিন্তাধারায় সফল হতে পেরেছি। আমি একটা কথায় বলবো যাদের পতিত জমি আছে সেসব জমি ফেলে না রেখে আপনারা বরই, মালটা, কমলা ও ড্রাগনসহ আধুনিক এ চাষাবাদের মাধ্যমে একজন ভালো উদ্যোক্তা হতে পারেন। এতে করে দেখা যাবে দেশে ফলের ঘাটতি, ভিটামিনের অভাব পূরণ ও বৈদেশিক মুদ্রা সাশ্রয় হবে। 

উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ সঞ্জয় দেবনাথ জানান, দিন দিন উপজেলায় বরই চাষ বাড়ছে। উপজেলায় ৮ হেক্টর জমিতে বরই চাষাবাদ হচ্ছে। যারা আগ্রহী হচ্ছে তাদের নানাভাবে পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে। চারা সংগ্রহের বিষয়েও তাদের সহযোগিতা করা হচ্ছে। মাঠ পর্যায়ে উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তারা নিয়মিত কৃষকদের পরামর্শ দেওয়ায় বরই চাষ দিনদিন বাড়ছে।

এসআর

×