ঢাকা, বাংলাদেশ   মঙ্গলবার ১৩ মে ২০২৫, ৩০ বৈশাখ ১৪৩২

ভাতা কার্ড দেয়ার নামে হোটেলে নিয়ে গৃহবধূকে ধর্ষণ

নিজস্ব সংবাদদাতা, বাকেরগঞ্জে

প্রকাশিত: ২১:৪৪, ২০ জানুয়ারি ২০২৩

ভাতা কার্ড দেয়ার নামে হোটেলে নিয়ে গৃহবধূকে ধর্ষণ

ধর্ষণ

বরিশালের বাকেরগঞ্জ উপজেলার ভরপাশা ইউনিয়নে এক শ্রবণ প্রতিবন্ধী গৃহবধূকে ধর্ষণ অভিযোগ উঠেছে প্রতিবেশি রিপন বিশ্বাসের বিরুদ্ধে। 

ভুক্তভোগী গৃহবধূ ভরপাশা ইউনিয়নের ২নং ওয়ার্ড কৃষ্ণকাঠী গ্রামের দিনমজুর মো. আব্দুল বারেকের স্ত্রী।

ধর্ষণের ঘটনায় ভরপাশা ইউনিয়ন পরিষদের ২নং ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য আউয়াল হাওলাদার ও নুর ইসলাম ভূঁইয়া ও রিপন বিশ্বাসের নাম উল্লেখ একটি লিখিত অভিযোগ করেছেন ভুক্তভোগীর পিতা পাদ্রীশিবপুর ইউনিয়নের ৩নং ওয়ার্ডের দূর্গাপুর গ্রামের মো. আইয়ুব আলী সিকদার। 

এ বিষয়ে ভুক্তভোগী জানান, তাকে প্রতিবন্ধী কার্ড দেয়ার কথা বলে বাড়ি থেকে বাকেরগঞ্জ উপজেলা সমাজ সেবা কার্যালয়ে নিয়ে যায় প্রতিবেশি রিপন বিশ্বাস। সেখানে যাওয়ার কিছুক্ষণ পরে রিপন বিশ্বাস প্রতিবন্ধী কার্ড পেতে বরিশাল যেতে হবে বলে রুপাতলী আবাসিক হোটেলে নিয়ে জোরপূর্বক ধর্ষণ করেন। গত ৫ সেপ্টেম্বর ভুক্তভোগী তার পরিবারের কাছে বিষয়টি জানালে বিচার পেতে দ্বারে দ্বারে ঘুরলেও বিচার পায়নি। প্রভাবশালী মহলের  হুমকি ধামকিতে ভুক্তভোগী ভয়ে আইনের সহায়তাও নিতে পারেনি। পরে ধর্ষণের ঘটনা এলাকায় ছড়িয়ে পড়লে ভুক্তভোগী আত্মহত্যারও চেষ্টা করেন। 

স্থানিয়রা জানান, অচেতন অবস্থায় ভুক্তভোগীকে হাসপাতালে নিয়ে চিকিৎসা দেয়া হয়। তার শারীরিক অবস্থার অবনতি হলে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকা নেয়া হয়। দুই মাস পরে ভুক্তভোগীকে ঢাকা থেকে  আনা হয়। ভুক্তভোগী এখন ভারসাম্যহীন জীবন-যাপন করছেন। ঠিকমত কথা বলতে পারেন না, কথা মুখে আটকে যায়। 

ভুক্তভোগীর চাচি শাশুড়ি মনোয়ারা বেগম জানান, আমার ভাশুরের ছেলে বারেক দিনমজুরের কাজ করে। তাই আউয়াল মেম্বার ভুক্তভোগীকে প্রতিবন্ধী ভাতা দেয়ার কথা বলেন। কিছুদিন পর রিপন বিশ্বাস ভুক্তভোগীকে তার পিতার বাড়ি থেকে মেম্বর আউয়ালের কথা বলে বাকেরগঞ্জ নিয়ে যায়। তখন রিপন বিশ্বাসের সাথে গেলে ধর্ষণের ঘটনা ঘটে। ভুক্তভোগী ওই ঘটনার পরদিন তার কাছে বিষয়টি জানায়। ভুক্তভোগী আগে সুস্থ ছিল, একটু কানে কম শুনতো। 

সরেজমিনে জানা যায়, ধর্ষণের ঘটনা এলাকায় ছড়িয়ে পড়লে রিপন বিশ্বাস ঢাকায় আত্মগোপনে রয়েছে। তার মোবাইল ফোনে ফোন করা হলে সাংবাদিকদের পরিচয় পেয়ে ফোন কেটে দেয়।

এ বিষয়ে ইউপি সদস্য আউয়াল হাওলাদার জানান, রিপন বিশ্বাস ভুক্তভোগীকে ধর্ষণ করেছে কিনা সেটা আমি দেখিনি। তবে আমার কাছে কিছুদিন আগে ভুক্তভোগীর পরিবারের লোকজন বিচার চাইতে এসেছিল। আমার সালিশ বিচার করার কথা থাকলেও আমি যতটুকু জানি একটি প্রভাবশালী মহল দুই দিন আগে বাকেরগঞ্জ বিআইপি কলোনিতে ভুক্তভোগীর বাবাকে ডেকে রিপন বিশ্বাসের থেকে পঞ্চাশ হাজার টাকা বাকিতে জরিমানা করে বিচার করে দিয়েছে।

এ বিষয় ভরপাশা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আশ্রাফুজ্জামান খান খোকন জানান, কিছুদিন আগে পরিষদে ভুক্তভোগীর বাবা ধর্ষণ ঘটনা কেন্দ্র করে বিচারের দাবিতে আবেদন করে। তখন আমি ভুক্তভোগীকে চিকিৎসা করাতে বলি ও বিষয়টি থানা পুলিশকে জানাতে পরামর্শ দেই। তবে সালিশি বিচার ঘটনার বিষয় আমার কিছু জানা নেই। 

এ বিষয়ে বাকেরগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা এস এম  মাকসুদুর রহমান জানান, এ বিষয়ে আমাদের কাছে অভিযোগ আসেনি। তবে ধর্ষণ ঘটনা যদি বরিশাল রুপাতলী ঘটে থাকে তাহলে বরিশাল কোতয়ালি থানায় অভিযোগ করলে পুলিশ আইনগত ব্যবস্থা নিবে।

এমএইচ

×