ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

চুয়াডাঙ্গায় ফের কমছে তাপমাত্রা  

নিজস্ব সংবাদদতা, চুয়াডাঙ্গা  

প্রকাশিত: ১৪:২৭, ২০ জানুয়ারি ২০২৩

চুয়াডাঙ্গায় ফের কমছে তাপমাত্রা  

ফসলের মাঠে কাজে ব্যস্ত কৃষক। ছবি: জনকণ্ঠ

দেশের দক্ষিণ-পশ্চিম অঞ্চলের সীমান্তবর্তী জেলা চুয়াডাঙ্গা। ভৌগলিক কারণে এ জেলায় বরাবরই শীতের সময় শীত এবং গরমের সময় গরম বেশি অনুভূত হয়। 

আবহাওয়া অফিস বলছে, হিমালয় থেকে আসা বায়ুর একটি অংশ শীতের সময় দেশের উত্তর-পশ্চিম অংশ চুয়াডাঙ্গা দিয়ে বয়ে যায়। যার কারণে এই হিমেল বাতাসে জেলায় শীতের তীব্রতা জানান দেয়।

চুয়াডাঙ্গায় প্রথম ১৫ ডিসেম্বর চলতি মৌসুমে দেশের সর্বনিম্ন ১১ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়। এরপর থেকে এ জেলায় তাপমাত্রা কমতে শুরু করে। এ মৌসুমে জেলায় দেশের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ৮ দিনের রেকর্ড রয়েছে। 

সর্বশেষ ১২ জানুয়ারি প্রথম দেশের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ৬ দশমিক ৩ ডিগ্রিতে চলে আসে। শুক্রবার মাঝারি শৈত্যপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে জেলার উপর দিয়ে। আবহাওয়া অফিস সকাল ৯ টায় জেলার সর্বনি¤œ তাপমাত্রা রেকর্ড করে ৭ দশমিক ৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস। বাতাসের আর্দ্রতা ছিল ৮৯ শতাংশ।

শীতের তীব্রতার সাথে শৈত্যপ্রবাহের প্রভাবে বিপর্যস্ত এ জেলার জনজীবন। যেন তাদের দুর্ভোগের শেষ নেই। ব্যবসা প্রতিষ্ঠান থেকে শুরু করে প্রতিটি কর্মক্ষেত্রে শীতের প্রভাব পড়েছে। শীতের সকালে ছিন্নমূল আর গ্রামীণ মানুষ খড়কুটো জ্বালিয়ে শীত নিবারণের চেষ্টা করছেন। শীতের পাশাপাশি কুয়াশা বেশি হওয়ায় সড়কে হেডলাইট জ্বালিয়ে চলছে গাড়ি। এতে দূরপাল্লার পরিবহন চলছে ধীরগতিতে। এদিকে তীব্র শীতে ইরি-বোরোর চারা রোপণ নিয়ে বিপাকে পড়েছেন কৃষকরা। 

কৃষি শ্রমিক পাওয়া যাচ্ছে না, যাদের পাওয়া যাচ্ছে তাদের দিতে হচ্ছে বেশি টাকা। সার, বীজ ও সেচের সাথে কৃষি শ্রমিকের মজুরিতে বাড়তি খরচ হচ্ছে। মাঝে মাঝে সূর্যের দেখা মিললেও আকাশ থাকছে ঘন কুয়াশায় আচ্ছন্ন। 

এমন জুবুথুবু শীতে সদর হাসপাতালে ৫০ বেডের বিপরীতে শীতজনিত ১৩০ জনসহ ১৭৩ জন রোগী ভর্তি রয়েছে, যা বেডের বিপরীতে ৩ থেকে ৪ গুণ। এছাড়াও বহিঃবিভাগে প্রতিদিন ১ হাজার ২শ রোগী চিকিৎসা নিচ্ছে।

চুয়াডাঙ্গা প্রথম শ্রেনীর আবহাওয়া পর্যবেক্ষণাগারের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা রকিবুল হাসান জানান, চুয়াডাঙ্গাতে শীতের সময় তীব্র শীত অনুভূত হয়। এর কারণ হচ্ছে পশ্চিমবঙ্গের উপর এ সময়  উচ্চ চাপ বলয় অবস্থান করে। উচ্চ চাপ বলয় যেখানে থাকবে সেখানে শীত বেশী অনুভূত হবে।

চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার ডা. এএসএম ফাতেহ্ আকরাম বলেন, জেলার উপর দিয়ে শৈত্যপ্রবাহ বয়ে যাওয়ার কারণে ঠান্ড-কাশি, ডাইরিয়া রোগী বৃদ্ধি পাচ্ছে। শীত মৌসুমে এসব রোগ থেকে প্রতিকার পেতে বাসি ও ঠাণ্ডা খাবার থেকে দূরে থাকতে হবে। টয়লেট করার পর সাবান দিয়ে ভালোভাবে হাত পরিস্কার করতে হবে। সেই সঙ্গে গরম কাপড় পরিধান করাতে হবে।
 
চুয়াডাঙ্গা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক বিভাস চন্দ্র সাহা জানান, এ মৌসুমে বোরো বীজতলা লক্ষ্যমাত্রা ছিল ১ হাজার ৮১০ হেক্টর। অর্জন হয়েছে ১ হাজার ৯০৫ হেক্টর। কৃষকদের আমরা কুয়াশা শিশির বীজতলা থেকে সরিয়ে দিতে পরামর্শ দিয়েছি। জমিতে জমে থাকা অতিরিক্ত পানি বের করে দিতে বলছি।

এসআর

×