ঢাকা, বাংলাদেশ   মঙ্গলবার ৩০ এপ্রিল ২০২৪, ১৭ বৈশাখ ১৪৩১

পশু পরিবহণে ক্যাটল স্পেশাল ট্রেন চালু করছে পশ্চিমাঞ্চল রেলওয়ে

প্রকাশিত: ১৭:৪৮, ১০ জুলাই ২০২০

পশু পরিবহণে ক্যাটল স্পেশাল ট্রেন চালু করছে পশ্চিমাঞ্চল রেলওয়ে

স্টাফ রিপোর্টার, ঈশ্বরদী ॥ পশ্চিমাঞ্চল রেলওয়ের জিএম মিহির কান্তি গুহের নির্দেশে পাকশী বিভাগীয় রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ কোরবানির জন্য গবাদি পশু পশ্চিমাঞ্চল রেলওয়ের বিভিন্ন স্টেশন থেকে দু’টি ক্যাটল স্পেশাল ট্রেনের মাধ্যমে ঢাকা ও চট্রগ্রাম অভিমুখে পরিবহণের সহজ ব্যবস্থা করেছে । স্বল্প সময়ে, স্বল্প খরচে, গরু ব্যবসায়ী ও কোরবাণীর পশু ক্রেতাদের সুবিধা বৃদ্ধি ও সুস্থভাবে গন্তব্যস্থানে পশু পরিবহণ করার লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য শীঘ্রই ট্রেন দু’টি চালু করা হবে । ইতি মধ্যেই ক্যাটল স্পেশাল এই দু’টি ট্রেনের ওয়াগনগুলো প্রস্তুত করা হয়েছে। এই ট্রেনে মোট দু’টি রেক গঠন করা হয়েছে যাতে কোন বিলম্ব ব্যতিরেকে ট্রেনদু’টি চলাচল করতে পারে। পাকশী বিভাগের মোবারকগঞ্জ, চুয়াডাঙ্গা, পোড়াদহ কুষ্টিয়া ও উল্লাহ পাড়া স্টেশনে এই ট্রেনগুলোর স্টপেজ দেয়া হবে । এই ট্রেনে পশু পরিবহণের জন্য যে কাভার্ড ওয়াগনগুলো ব্যবহার করা হবে সেগুলোতে বায়ু চলাচলের ব্যবস্থা করা হয়েছে এবং রোদ কিংবা বৃষ্টি ভেতরে প্রবেশ রোধেরও ব্যবস্থা করা হয়েছে। ফলে প্রচন্ড রোদে বা বৃষ্টিতে গবাদি পশু গুলোর অসুস্থ হয়ে পড়ার কোন সুযোগ থাকবেনা। গরম থেকে পশুগুলোকে রক্ষার লক্ষ্যে পশু ভর্তি ট্রেন দু’টি রাতে চলাচল করবে যাতে দিনের তীব্র গরমে পশু গুলো অসুস্থ হয়ে না পড়ে। আবার পথিমধ্যে কোন গবাদি পশু অসুস্থ হয়ে পড়লে স্থানীয় প্রাণি সম্পদ হাসপাতাল এর মাধ্যমে যেন চিকিৎসা প্রদান করা যায় সে ব্যবস্থা করা হয়েছে। গবাদি পশুর সাথে পরিচর্যাকারীগণ একই ওয়াগণএ ভ্রমণ করতে পারে সে ব্যবস্থাও রাখা হয়েছে। এবার ঈদকে সামনে রেখে রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ প্রথম পশু পরিবহণ ট্রেন চালুর ব্যবস্থা করলেও প্রতি বছর কোরবানির ঈদ মৌসুমে যশোর থেকে একই নিয়মে পশু পরিবহণ অব্যাহত থাকবে। এই ট্রেনে পশু পরিবহণের কারণে ব্যবসায়ীদের সময় ও অর্থ সাশ্রয় হবে। একইভাবে সড়ক পথের জানজট ও বিভিন্ন প্রকার চাঁদাবাজির শিকার হতে হবেনা। বর্তমানে ট্রাকে গরু পরিবহন করে ঢাকা যেতে ৪০ ঘণ্টার মতো সময় লাগে। পথিমধ্যে জানজটের শিকার হয়ে সময় ব্যয় হয়। অনেক গরু অসুস্থ হয়ে পড়ে। আবার পথে পথে নানা প্রকার চাঁদাবাজির শিকার হতে হয়। এতে ব্যবসায়ী ও ক্রেতারা ক্ষতির শিকার হন। কিন্তু এই ক্যাটল ট্রেনে সময় লাগবে মাত্র ১২ ঘণ্টা। বর্তমান সময়ে সীমিত আকারে যাত্রীবাহী ট্রেন চলাচল করায় নির্ধারিত সময়ের মধ্যেই ক্যাটল স্পেশাল ট্রেনগুলো ঢাকায় পৌঁছানো সম্ভব হবে। পথিমধ্যে কোন যান জটের ভয় থাকবে না। ব্যবসায়ীদের চাঁদাবাজির শিকার হতে হবেনা । রেলওয়ে ও ব্যবসায়ীদের এসব স্বার্থ রক্ষায় পাকশী বিভাগীয় ব্যবস্থাপক আসাদুল হক ও পরিবহণ কর্মকর্তা নাসির আহমেদ গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখে চলেছেন। ইতিমধ্যে পশ্চিমাঞ্চল রেলওয়ের জিএম মিহিরকান্তির গুহর নির্দেশে রেলওয়ে পাকশী বিভাগীয় ডিআরএম আসাদুল হকের দফতর থেকে গঠিত চার সদস্য বিশিষ্ট কমিটি ট্রেনদু’টি সুষ্ঠভাবে চালানোর বিষয়ে মতামত দিয়েছেন। কমিটিতে পাকশী রেলওয়ে বিভাগের সহকারি পরিবহন কর্মকর্তা মোহাম্মদ আব্দুস সোবহানকে আহ্বায়ক করা হয়েছে। অন্য তিন সদস্যদের মধ্যে পাকশী রেলওয়ে বিভাগের সরকারি বাণিজ্যিক কর্মকর্তা, পাকশী রেলওয়ে বিভাগ দক্ষিণের সহকারি যন্ত্র প্রকৌশলী অপারেশন ও রেলওয়ে নিরাপত্তা বাহিনীর সহকারি কমান্ডেন্ট রয়েছেন। এদিকে রেলওয়ে কর্তৃপক্ষের কোরবানির পশু পরিবহণের সময়োপযোগী সিদ্ধান্ত গ্রহণ করায় গরু ব্যবসায়ীরা রেলওয়ের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের বিশেষভাবে অভিনন্দন জানিয়েছেন। পশ্চিমাঞ্চল রেলওয়ে ও পাকশী বিভাগীয় রেলওয়ের দায়িত্বশীল সূত্রে এসব তথ্য জানাগেছে।
×