ঢাকা, বাংলাদেশ   বুধবার ০১ মে ২০২৪, ১৭ বৈশাখ ১৪৩১

আমতলীতে বন্যা নিয়ন্ত্রন বাঁধের গাছ কাটার অভিযোগ

প্রকাশিত: ০৫:১০, ৬ নভেম্বর ২০১৯

আমতলীতে বন্যা নিয়ন্ত্রন বাঁধের গাছ কাটার অভিযোগ

নিজস্ব সংবাদদাতা,আমতলী,বরগুনা ॥ বরগুনার আমতলী উপজেলার বন্যা নিয়ন্ত্রন বাঁধের সবুজ বেষ্টনীর গাছ কাটার মহা উৎসব চলছে। রাতের আঁধারে প্রভাবশালীদের ছত্রছায়ায় গাছ কেটে নিয়ে যাচ্ছে দুর্বৃত্ত্বরা। গত এক মাস ধরে উপজেলার বিভিন্ন এলাকার গাছ কেটে নিয়ে গেলেও বন বিভাগের লোকজন এখন পর্যন্ত কোন আইনি পদক্ষেপ নিতে পারেনি। স্থানীয়দের অভিযোগ বন বিভাগের লোকজনের সহযোগীতাই গাছ কাটার মহাউৎসব চলছে। এ যাবৎ কয়েক লক্ষ টাকা গাছ কেটে নিয়ে গেছে বন খেকোরা। জানাগেছে, ১৯৬৭ সালে পানি উন্নয়ন বোর্ড আমতলী উপজেলাকে বন্যা জলোচ্ছাস, পায়রা ও টিয়াখালী নদীর ভাঙ্গণ থেকে রক্ষায় বন্যা নিয়ন্ত্রন বাঁধ নির্মাণ করে। ১৯৮৮ সালে বন্যা নিয়ন্ত্রন বাঁধের দুই পাশে বন বিভাগ সবুজ বেষ্টনীর প্রকল্পের আওতায় বিভিন্ন প্রজাতির গাছ রোপন করে ।ওই গাছ বর্তমানে বৃহৎ গাছে পরিনত হয়েছে। গত এক মাস ধরে রাতের আধারে উপজেলার ওই বন্যা নিয়ন্ত্রন বাঁধের সবুজ বেষ্টনীর গাছ কেটে নিয়ে যাচ্ছে প্রভাবশালীদের ছত্রছায়ায় দুর্বৃত্ত্বরা। উপজেলার বিভিন্ন এলাকার গাছ কেটে নিয়ে গেলেও বন বিভাগের লোকজন এখন পর্যন্ত কোন আইনি পদক্ষেপ নিতে পারেনি। স্থানীয়দের অভিযোগ বন বিভাগের লোকজনের সহযোগীতাই গাছ এ কাটার মহাউৎসব চলছে। এ যাবৎ কয়েক লক্ষ টাকা গাছ কেটে নিয়ে গেছে দুর্বৃত্ত্বরা। তারা আরো অভিযোগ করেন বন বিভাগ কর্তৃপক্ষকে জানালেও তারা গুরুত্ব দিচ্ছে না। প্রভাবশালীদের সাথে বন বিভাগের লোকজনের সখ্যতা রয়েছে। প্রভাবশালীদের ভয়ে মুখ খুলতে পারছে না স্থানীয়রা। খবর পেয়ে ইতিমধ্যে বন বিভাগের লোকজন গুলিশাখালী ইউনিয়নের আঙ্গুরকাটা এবং হলদিয়া ইউনিয়নের তক্তাবুনিয়া এলাকা থেকে গাছ জব্দ করেছে। এদিকে বিদ্যুৎ বিভাগের লোকজন বন বিভাগের লোকজনের উপস্থিতি ছাড়াই গাছ কেটে ফেলছে। স্থানীয় লোকজন ওই গাছগুলো বন বিভাগ কর্তৃপক্ষের অনুমতি ছাড়াই নিয়ে যাচ্ছে। গত এক মাসে গুলিশাখালী ইউনিয়নের আঙ্গুরকাটা. গুলিশাখালী বাজার, হরিদ্রাবাড়িয়া, হদলিয়া ইউনিয়নের উত্তর তক্তাবুনিয়া, দক্ষিণ তক্তাবুনিয়া, দফাদার ব্রীজ ও আড়পাঙ্গাশিয়া ইউনিয়নের ডাঙ্গার খাল, মধ্য আড়পাঙ্গাশিয়া ও যুগিয়ার স্লুইজ এলাকা থেকে বন বিভাগের সৃজিত চাম্বল,আকাশমনি,শিশু, জিলাপি ও বাবল গাছ কেটে নিয়ে গেছে দুর্বৃত্ত্বরা। বুধবার গুলিশাখালী ইউনিয়নের আঙ্গুরকাটা. গুলিশাখালী বাজার ,হরিদ্রাবাড়িয়া ও হলদিয়া ইউনিয়নের উত্তর তক্তাবুনিয়া, দক্ষিণ তক্তাবুনিয়া ও দফাদার ব্রীজ এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, বন্যা নিয়ন্ত্রন বাঁধের পাশের সবুজ বেষ্টনীর সৃজিত পরিপক্ক গাছ কেটে নিয়ে গেছে। গাছের গোড়ালি ও ডালপালা পড়ে আছে। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কয়েকজন জানান, তক্তাবুনিয়ার এলাকার প্রভাবশালী মোকলেস মৃধাসহ ১০/১২ জন দুর্বৃত্বরা রাতের আধারে গাছ কেটে নিয়ে গেছে। মোকলেস মৃধা গাছ কেটে নেয়ার কথা অস্বীকার করে বলেন, একটি মহল আমার বিরুদ্ধে মিথ্যা অভিযোগ করেছে। গুলিশাখালীর সোহরাফ গাজী ও আবুল বাসার বলেন, দিনে গাছ খাড়া দেখলেও সকালে ওই গাছ আর খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না। রাতের আধারে গাছের সারি অংশ কেটে নিয়ে যাচ্ছে। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক গুলিশাখালী এলাকার কয়েকজন বলেন, আবুল হোসেন ও ইব্রাহিম মৃধাসহ ৮/১০ জন বনদস্যুরা গাছ কেটে নিয়ে গেছে। তারা আরো বলেন, বন বিভাগের লোকজনকে জানালেও তারা কোন গুরুত্ব দিচ্ছেন না। আমতলী বন কর্মকর্তা সাইদুর রহমান আকন বলেন, গুলিশখালী ও হলদিয়া ইউনিয়ন থেকে গাছ জব্দ করা হয়েছে। তদন্ত সাপেক্ষে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে। তিনি আরো বলেন, বিদ্যুৎ বিভাগের লোকজন কিছু গাছ আমার লোকজনের উপস্থিতি ছাড়া কেটে ফেলেছে।
×