ঢাকা, বাংলাদেশ   মঙ্গলবার ৩০ এপ্রিল ২০২৪, ১৭ বৈশাখ ১৪৩১

একতা প্রতিবন্ধী উন্নয়ন স্কুল ও পুনর্বাসন কেন্দ্র

প্রকাশিত: ০৮:৫৮, ১০ আগস্ট ২০১৯

একতা প্রতিবন্ধী উন্নয়ন স্কুল ও পুনর্বাসন কেন্দ্র

প্রতিবন্ধীরা সমাজের বোঝা নয় তারাও সমাজের সম্পদ হতে পারে। এমনি চিন্তা নিয়ে ২০০৮ সালে প্রথম ১৫ প্রতিবন্ধী শিশু নিয়ে ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলার প্রত্যন্ত এলাকা রায়পুর ইউনিয়নে আমিরুল ইসলাম নামে এক ব্যক্তি নিজ উদ্যোগে একতা প্রতিবন্ধী স্কুল ও পুনর্বাসন কেন্দ্রটি চালু করেন। বিভিন্ন প্রতিবন্ধকতা সত্ত্বেও ২৫ শিক্ষক-শিক্ষিকা ও ৪১৫ প্রতিবন্ধী শিক্ষার্থী নিয়ে এমন একটি স্কুল ও পূনর্বাসন কেন্দ্র চালু করেছেন তিনি। জানা যায়, ঠাকুরগাঁওয়ের আশপাশের তিন উপজেলার ১৫টি ইউনিয়নের প্রতিবন্ধী শিশুরা এই পুনর্বাসন কেন্দ্রে লেখাপড়া করার সুযোগ পাচ্ছে। ৪১৫ ছাত্র-ছাত্রীর মধ্যে এখানে বুদ্ধি প্রতিবন্ধী ৮০ জন, বাকপ্রতিবন্ধী ৯৭ জন, শ্রবণ প্রতিবন্ধী ৪জন, শারীরিক প্রতিবন্ধী ৭৯জন, দৃষ্টি প্রতিবন্ধী ৩৬জন, মানসিক প্রতিবন্ধী ৬০ জন, অটিজম প্রতিবন্ধী ৫২জন, সেরিব্রাল পালসি ৭জন। তাদের সুবিধার জন্য বিদ্যালয়ের পরিচালক নিজ উদ্যোগে একটি স্বাস্থ্য কেন্দ্রসহ দুটি পিকআপ গাড়ি কিনে শিক্ষার্থীদের যাতায়াতের ব্যবস্থা করেছেন। স্কুলের প্রতিবন্ধী শিক্ষার্থী জিল্লুর রহমান জানায়, স্কুলে আসতে তার অনেক ভাল লাগে। কারণ এখানকার শিক্ষকরা তাকে অনেক ভালবাসে। তাদের অনেক ভালভাবে পড়ালেখা করায়। তার স্বপ্ন সে বড় হয়ে ইঞ্জিনিয়ার হবে। বিশেষ শিশুদের নিয়ে কাজ করা এ প্রতিষ্ঠানটির সৃষ্টি রানী ও মোহাম্মদ শাহাজাহান নামের দু’জন শিক্ষক বলেন, নিজের মানবিক দায়বদ্ধতা থেকে প্রায় বিনা বেতনেই আমরা এখানে শ্রম দিয়ে আসছি। এ প্রতিষ্ঠানটি যখন যাত্রা শুরু করে সেই সময়ের অনেক শিক্ষা প্রতিষ্ঠানই এমপিওভুক্ত হয়েছে। আমাদের এ প্রতিষ্ঠানটিও এমপিওভুক্ত হলে আমাদের কাজের মূল্যায়ন হতো এবং আমরা এসব শিশুকে আরও বেশি সেবা দিতে পারতাম। প্রতিষ্ঠানটির পরিচালক আমিরুল ইসলাম বলেন, সরকারী সুযোগ-সুবিধা ছাড়া শুধু নিজস্ব উদ্যোগে এ ধরনের একটি প্রতিষ্ঠান চালিয়ে নেয়া আমাদের পক্ষে প্রায় অসম্ভব হয়ে পড়েছে। শিশুদের ভবিষ্যত চিন্তা করে কোনমতে এটি চালিয়ে যাচ্ছি। সরকারের সুদৃষ্টি এবং সমাজের হৃদয়বান ব্যক্তিদের সহায়তা পেলে এ প্রতিষ্ঠানটি আরও সুনামের সঙ্গে সামনে এগিয়ে যাবে। সদর উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা আব্দুল্লাহ আল মামুন সম্প্রতি সরেজমিনে প্রতিষ্ঠানটি পরিদর্শন করে জানান, প্রতিষ্ঠানটির লেখাপড়ার মান ও সার্বিক পরিবেশ ভাল হলেও অবকাঠামো উন্নয়ন এবং সরকারী পৃষ্ঠপোষকতা পেলে এটি একটি ভাল প্রতিষ্ঠান হিসেবে দাঁড়িয়ে যেতে পারে। ইতোমধ্যে সমাজসেবা অধিদফতর থেকে তাদের সামান্য আর্থিক সহায়তা দেয়া হয়েছে তবে তা প্রয়োজনের তুলনায় অপ্রতুল। -এস, এম জসিম উদ্দিন, ঠাকুরগাঁও থেকে
×