ঢাকা, বাংলাদেশ   মঙ্গলবার ৩০ এপ্রিল ২০২৪, ১৭ বৈশাখ ১৪৩১

শুক্রাবাদে ড্রেনের ময়লার স্তূপ বস্তায় ভরে ফেলে রেখে গেছে ওয়াসা

প্রকাশিত: ১০:০৬, ২৯ জুন ২০১৯

  শুক্রাবাদে ড্রেনের ময়লার স্তূপ বস্তায় ভরে  ফেলে রেখে গেছে ওয়াসা

স্টাফ রিপোর্টার ॥ রাজধানীর ৩৬/১ শুক্রাবাদের সড়কটিতে ড্রেনের ময়লার স্তূপ বস্তাভরে ছড়িয়ে ছিটিয়ে ফেলে রেখে গেছে ওয়াসা। গত কয়েক মাস ধরে সড়কটির বেশ কয়েকটি স্থানে এমন ময়লার স্তূপ পড়ে থাকতে দেখা গেছে। গত সোমবার আবারও নতুন করে বস্তাভরা ময়লা রেখে চলে গেছে ওয়াসার পরিচ্ছন্নতা কর্মীরা। ফলে ময়লা উৎকট গন্ধে স্থানীয়রা চরম দুর্ভোগে পড়ছেন। স্কয়ার হাসপাতালের সামান্য দূরত্বে অবস্থিত এই সড়কটি পান্থপথের প্রধান সড়কে যেখানে মিলেছে সেখানেও ফেলে রাখা হয়েছে এমন ময়লার স্তূপ। স্থানীয়রা জানিয়েছে, ঢাকা ওয়াসা সড়কটির ড্রেন পরিষ্কারের কাজ করেছে। সোমবার এই সড়কটির বেশ কয়েকটি ম্যানহোল খুলে ড্রেন পরিষ্কার করা হয়েছে। ড্রেন থেকে ময়লা উত্তোলন করে বস্তা ভরে সড়কের পাশে বাসাবাড়ি ও দোকান পাটের সামনে স্তূপ করে রাখা হয়েছে। এর কারণে কোথাও কোথাও গলির আয়তন কমে গেছে। এতে যান চলাচলে বিঘ্ন ঘটছে। পাশাপাশি দুর্গন্ধে পথচারী ও স্থানীয় বাসিন্দাদের চলাচলে অসুবিধা হচ্ছে। স্থানীয় দোকানদার জামাল উদ্দিন জানান, সোমবার ওয়াসার শ্রমিকরা ড্রেন পরিষ্কার করে ময়লাগুলো বস্তা ভরে পাশের দোকানপাট ও বাসা বাড়ির দেয়াল ঘেঁষে রেখে চলে গেছে। উৎকট গন্ধে দোকানে গ্রাহক বসতে পারে না। ওয়াসার কর্মীদের ময়লা সরিয়ে নিতে বারবার বলেছি। কিন্তু কোনও কথা শোনেননি তারা। মঙ্গলবার এই সড়কটিতে গিয়ে দেখা গেছে, ড্রেন পরিষ্কারের পর একদিন চলে গেলেও ময়লাগুলো সরিয়ে নেয়া হয়নি। তাছাড়া ইতোপূর্বেও বেশ কয়েকবার এই সড়কটির ড্রেন পরিষ্কার করা হয়েছে। তখনকার ময়লাও এখনও পড়ে আছে। স্থানীয় বরিশাল হোটেলের একজন কর্মচারী বলেন, দোকানে বসতে পারি না। গন্ধে অনেক কষ্ট হয়। গ্রাহকরা দোকানে বসতে চায় না। এভাবে যদি তারা কাজ করে তাহলে তো আমাদের ব্যবসা গুটিয়ে চলে যেতে হবে। স্থানীয় বাড়িমালিক গিয়াস উদ্দিন বলেন, ‘বলতে বলতে শেষ। কোন কাজ হয় না। যে যার মতো করে কাজ শেষে ময়লা ফেলে চলে যায়। বাসা বাড়ির ময়লাও এই সড়কে পড়ে থাকে। সিটি করপোরেশনের পরিচ্ছন্নতা কর্মীরাও আসে না। ঢাকা ওয়াসার কাছে তো কথাই বলা যায় না। তাদের অনেক বার বলেছি। কোন কাজ হয়নি।’ আরেক স্থানীয় দোকানদার কবির আলী জানান, ওয়াসার লোকদের এসব ময়লা সরিয়ে নেয়ার কথা বলা হরে প্রথমে তারা এসব সরিয়ে নেয়া হবে বলে জানান। এরপর তাদের ভেগে যেতে দেখে এলাকাবাসী প্রশ্ন করলে তারা বলেন, এখন এসব ময়লায় পানি থাকায় ভারি হয়ে আছে। পানি একটু শুকিয়ে গেলে এগুলো নিয়ে যাওয়া হবে। কিন্তু, বছরের পর বছর ধরে দেখা যায়, ওয়াসার ময়লা আর কেউ নিয়ে যায় না। তার অভিযোগ, এসব ময়লা রোদে শুকিয়ে ধুলো হয়ে আবারও পথচারী ও স্থানীয়দের নাকে ঢোকে। ফলে এর জীবাণু থেকে তাদের সর্দি-ঠান্ডা , জ্বর ইত্যাদি লেগেই থাকে। আরও অনেক কঠিন অসুখ-বিসুখ হয়। স্থানীয় আরেক বাসিন্দা সোহানা পারভীন বলেন, ঢাকা শহরবাসীর অসুস্থ হওয়ার অন্যতম কারণ সড়কের ওপর ফেলে রাখা এসব ড্রেনের ময়লা ও আবর্জনা। এসব ময়লার কারণে সন্তানদের নিয়ে আমরা চিন্তায় বাঁচি না। দেখবেন, এসব ময়লাই বৃষ্টির পানিতে ধুয়ে আবারও ড্রেনে নেমে যায়। ফলে ড্রেন বন্ধ হয়ে যায়। আবারও নতুন ময়লার সঙ্গে এসব ময়লা তোলে ওয়াসা। তুলে রাস্তার ওপরে রেখেই চলে যায়। প্রতিবছর এমন ঘটনা দেখছি। ফলে ঢাকা শহরের ড্রেনগুলো না কখনও পরিষ্কার হয়, না আমরা এসব উৎপাত থেকে বাঁচতে পারি। এসব ময়লা তুলে নেওয়ার জন্য ওয়াসার ছোট আকারের ময়লার গাড়িও কখনো দেখেননি বলে জানান তিনি। ঢাকা ওয়াসার নির্বাহী প্রকৌশলী (ড্রেনেজ) সৈয়দ শিহাবুর রহমান বলেন, আমি বিষয়টি জেনেছি। ঠিকাদারকে বলে দিয়েছি খুব দ্রুত যাতে ময়লাগুলো অপসারণ করে নেয়। আশাকরি আগামী দুই এক দিনের মধ্যে ময়লা সরে যাবে। ঢাকা দক্ষিণ সিটির অতিরিক্ত প্রধান বর্জ্য ব্যবস্থাপনা কর্মকর্তা খন্দকার মিল্লাতুল ইসলাম বলেন, ওয়াসার ময়লা ওয়াসাকেই সরাতে হবে। তারা যদি ময়লা না সরায় তাহলে আমরা ডাম্পার লাগিয়ে সরিয়ে দেবো। তাদের ময়লার কারণে কোন নাগরিককে কষ্ট করতে দেয়া হবে না।
×