নিজস্ব সংবাদদাতা, শেরপুর ॥ শেরপুরের নকলায় অন্তঃসত্ত্বা গৃহবধূ ডলি খানমকে (২২) গাছে বেঁধে বর্বরোচিতভাবে নির্যাতনের ঘটনায় দায়িত্ব পালনে অবহেলার অভিযোগে নকলা থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) ওমর ফারুককে প্রত্যাহার ও জেলা পুলিশ লাইন্সে সংযুক্ত করা হয়েছে। পুলিশ সুপার কাজী আশরাফুল আজীমের নির্দেশে তাঁকে (ওমর ফারুক) থানা থেকে প্রত্যাহার করা হয়। শুক্রবার দুপুরে পুলিশ সুপার আশরাফুল আজীম এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। এদিকে বিভিন্ন সংগঠনের পক্ষ থেকে গৃহবধূ ডলি খানমকে নির্যাতনের ঘটনার তীব্র নিন্দা জ্ঞাপন ও দায়ীদের শাস্তি দাবি করা হয়েছে।
জেলা পুলিশ প্রশাসন সূত্রে জানা গেছে, পুলিশের প্রাথমিক তদন্তে গত ১০ মে নকলা উপজেলার কায়দা এলাকায় সংঘটিত নির্যাতনের ঘটনার দিন এসআই ওমর ফারুকের দায়িত্ব পালনে অবহেলার সত্যতা পাওয়ায় বৃহস্পতিবার রাতে এসপি তাঁকে (ওমর ফারুক) থানা থেকে প্রত্যাহার ও পুলিশ লাইন্সে সংযুক্ত করার নির্দেশ দেন। তাৎক্ষণিকভাবে এ নির্দেশ কার্যকর হয়।
বৃহস্পতিবার রাতে অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট এ বি এম এহছানুল মামুন ও নকলার উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা জাহিদুর রহমান কায়দা এলাকার বাড়িতে গিয়ে নির্যাতনের শিকার গৃহবধূ ডলি খানম ও তাঁর স্বামী মো. শফিউল্লাহর সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন। ওই দুই কর্মকর্তা জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে পরিবারের প্রতি দুঃখ ও সহমর্মিতা প্রকাশ করেন এবং ন্যায়বিচার, স্বাস্থ্যসেবা, নিরাপত্তাসহ অন্যান্য বিষয়ে সার্বিক সহযোগিতা প্রদানের আশ্বাস দেন। এতে পরিবারটি স্বস্তি প্রকাশ করে।
এদিকে বাংলাদেশ মানবাধিকার কমিশন, শেরপুর জেলা শাখার সভাপতি রাজিয়া সামাদ ডালিয়া ও বাংলাদেশ মহিলা পরিষদ, জেলা শাখার সভানেত্রী জয়শ্রী দাস লক্ষ্মী পৃথক বিবৃতিতে গৃহবধূ ডলি খানমকে নির্যাতনের ঘটনার তীব্র নিন্দা জ্ঞাপন করে এর সঙ্গে জড়িত সকল আসামিকে অবিলম্বে গ্রেফতার ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করেন। একইসঙ্গে দায়িত্ব পালনে অবহেলাকারী পুলিশ কর্মকর্তাদের আইনানুযায়ী শাস্তি দাবি করেন।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে নকলা থানার পরিদর্শক (তদন্ত) ও মামলার তদন্ত কর্মকর্তা মো. সজীব রহমান বলেন, মামলার এজাহারভুক্ত আসামি নাসিমা আক্তারকে ইতোমধ্যে গ্রেফতার ও আদালতের নির্দেশে জেলা কারাগারে পাঠানো হয়েছে। অন্য আসামিদেরও গ্রেফতারে পুলিশি অভিযান অব্যাহত আছে।
উল্লেখ্য, জমিসংক্রান্ত বিরোধের জের ধরে গত ১০ মে নকলার কায়দা এলাকায় গাছে বেঁধে প্রতিপক্ষের নির্যাতনের ফলে ৩ মাসের অন্তঃসত্ত্বা ডলি খানমের গর্ভপাত ঘটে। ওই ঘটনায় ডলি বাদী হয়ে নকলা থানায় ও তাঁর স্বামী শফিউল্লাহ বাদী হয়ে শেরপুরের সি.আর আমলী আদালতে দুটি পৃথক মামলা করেন।