নিজস্ব সংবাদদাতা, লক্ষ্মীপুর ॥ লক্ষ্মীপুরে অষ্টম শ্রেণির এক ছাত্রী বাল্য বিয়েতে রাজি না হওয়ায় পারিবারিক চাপের মুখে বিষপান করে আত্মহত্যা করার ঘটনার খবর পাওয়া গেছে। বুধবার সকালে বিষপানের পরে নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতালে নেয়া হলে সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়। ইয়াসমিন আক্তার (১৫) সদর উপজেলার দত্তপাড়া ইউনিয়নের সৈয়দপুর গ্রামের ইসমাইল হোসেনের মেয়ে ও সৈয়দপুর বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের অষ্টম শ্রেণির ছাত্রী।
স্থানীয়রা জানান, গত কয়েকদিন ধরে প্রবাসী মো. রাশেদ (৩৫) নামে ইয়াসমিনের এক ফুফাতো ভাইয়ের সাথে তার বিয়ের কথাবার্তা শুনা যাচ্ছিল। নিহত ছাত্রীর বাবা ইসমাইল হোসেন এ বিয়ের প্রস্তাব করেন। কিন্তু তার মেয়ে ইয়াসমিন আক্তার এ বিয়েতে রাজি ছিলেন না। পারিবারিকভাবে তার প্রতি চাপ সৃষ্টি করলে সোমবার সকালে সে আত্মহত্যার চেষ্টায় বিষপান করে। বিষয়টি দেখে পরিবারের লোকজন তাকে উদ্ধার করে লক্ষ্মীপুর সদর হাসপাতাল ভর্তি করে।
অবস্থার অবনতি ঘটলে উন্নত চিকিৎসার জন্য তাকে নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতালে পাঠানো হয়। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়। পরে দুপুরে মরদেহ উপজেলার দত্তপাড়ার সৈয়দপুরের বাড়িতে আনা হয়। খবর পেয়ে পুলিশ মরদেহটি উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য সদর হাসপাতালের মর্গে পাঠায়।
নিহত স্বজনদের অভিযোগ ইয়াসমিন আক্তারের বিয়ের কথা চলছিল একই উপজেলার মান্দারী ইউনিয়নের সমাষপুর গ্রামের মোস্তফা মিয়ার ছেলে ইয়াসমিনের এক ফুফাতো ভাই প্রবাসী মো. রাশেদের সাথে। রাশেদ ৩ বছর আগেও বিয়ে করেছিলো। তখন তাদের পারিবারিক কলহের জের ধরে তাদের বিবাহ বিচ্ছেদ হয় রাশেদের।
ইয়াসমিন রাশেদের পূর্বে বিয়ের বিষয়টি জানার পর বিয়েতে মতামত দেয়নি। এর পরও তাকে না জানিয়ে অল্পবয়সে বিয়ের প্রস্তুতি নেয় ইয়াসমিনের পরিবার। বিয়ের জন্য তাকে চাপ সৃষ্টি করলে অভিমান করে সে বিষপান করে।
স্থানীয় দত্তপাড়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ও সৈয়দপুর বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির সভাপতি আহসানুল কবির রিপন জানান, ইয়াসমিনের বাবা ইসমাইল হোসেন জানিয়েছেন, তাকে পড়ালেখার বিষয়ে বকাঝকা করায় সে বিষ পান করেছে। কিন্তু স্থানীয়রা তাকে জানিয়েছে ভিন্যকথা। এ জন্য বিষয়টি সন্দেহ হওয়ায় তিনি থানা পুলিশকে অবহিত করেন। পরে পুলিশ গিয়ে নিহতের লাশ উদ্ধার করেন। পরে ময়নাতদন্তের জন্য সদর হাসপাতালের মর্গে প্রেরণ করেন।
দত্তপাড়া পুলিশ তদন্ত কেন্দ্রের উপ-পরিদর্শক (এসআই) মজিবুর রহমান জানান, নিহত স্কুল ছাত্রীর মৃতদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। হত্যা না আত্মহত্যা তার জন্য সদর হাসপাতালের মর্গে ময়নাতদন্তের জন্য পাঠানো হয়েছে। তদন্ত করে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।