ঢাকা, বাংলাদেশ   বুধবার ০১ মে ২০২৪, ১৭ বৈশাখ ১৪৩১

স্থাপত্যে শিল্পে নতুন দিগন্তের উন্মোচন করলো এস.এল এডভান্স টেকনোলোজি

প্রকাশিত: ০১:২০, ১৫ ডিসেম্বর ২০১৭

স্থাপত্যে শিল্পে নতুন দিগন্তের উন্মোচন করলো এস.এল এডভান্স টেকনোলোজি

নিজস্ব সংবাদদাতা,সীতাকুন্ড(চট্টগ্রাম) ॥ মধ্যযুগের স্থাপত্যের শিল্প মাধ্যম হিসেবে টেরাকোটার ছিল উৎকর্ষের শিখরে। সেসময় শৈলী ও অলঙ্কৃত মাটির তৈরি জালি প্যানেল ও নানা বস্তুর প্রতিরূপ বিচিত্র দৃশ্য ফুটিয়ে তোলা হতো একেকটি স্থাপত্যে। শুধু মাটি নয় মোগল আমলের স্থাপত্যের ব্যবহার হতো মার্বেলের তৈরি জালি। যেমন তাজমহলে আলো ছায়ার খেলার জন্য মার্বেলের জালি লাগানো রয়েছে বারান্দা জানালা কিংবা ছাদে। এটি অবশ্যই বাড়তি সৌন্দর্য যোগ করেছিল গৃহসজ্জায়। সেই টেরাকোটা বা মার্বেলের জালি আকারে নতুন সংস্করণে এসেছে আপন অঙ্গনের শোভা বৃদ্ধির লক্ষ্যে। এখন ইন্টেরিয়ার ডিজাইনে হর হামেশাই ব্যবহার হচ্ছে এ জালি প্যানেল। কিন্তু এখন সেই সব জালি প্যানেল এর জন্য মাসের পর মাস অপেক্ষা করতে হতো। সীতাকু-ে অত্যাধুনিক মেশিনে খুব অল্প সময়ে তৈরি হচ্ছে যে কোন ডিজাইনের ‘জালি প্যানেল’। এস, এল এডভান্স টেকনোলোজি এতে এনেছে ভিন্নতা। তাদের রয়েছে যেকোন ফ্য¬াট প্যানেলকে জালি প্যানেল বানানোর অত্যাধুনিক মেশিন যা বাংলাদেশে অদ্বিতীয়। তারা দিচ্ছে কাঠ বোর্ড এমডিএফ লোহা তামা, এ্যলুমিনিয়াম প্লাস্টিক বোডর্, মার্বেল গ্যানাইট এস এস আরো অনেক পর্দাথের কাটিং সলিউশন যা দিয়ে ঘরের সিলিং পার্টিশান দরজা, জানালা সিঁড়ির রেলিং, গেইট ঘরের ফ্লোর ও নকশা করে অপরূপ সৌন্দর্য আনা যায়। এ ছাড়া বর্তমানে বিল্ডিং এর বাহিরেও জালি প্যানেল এর ব্যবহার শুরু হয়েছে যা স্থাপনায় দিচ্ছে নতুন রূপ। টেকসই মজবুত এবং পুনঃ বিক্রয় মূল্য থাকার কারনে এসব ডিজাইন এর চাহিদা দিন দিন বেড়ে চলছে। এ ব্যাপারে এস এল এডভান্স টেকনোলোজির মূখপাত্র রাশেদুল হাসান জানান,একটা মেশিন দিয়ে শুরু করে আমরা এখন প্রতিদিন ৫০০ সেফটি কাজ তুলে দেওয়ার ক্ষমতা রাখি এবং ভবিষ্যতে ক্রেতার চাহিদা মেটানোর জন্য আরো মেশিন যোগ হচ্ছে। আমরাই একমাত্র প্রতিষ্টান যারা সব রকম পদার্থের উপর সি এন সি কাটিং করতে সক্ষম।’ কারখানাটি স্থাপিত হয় ২০১৩ সালে। শিল্পপতি আলহাজ্ব মো: লোকমানের মালিকানাধীন এ শিল্প প্রযুক্তি কারখানায় ইতালি ও আমেরিকান প্রযুক্তির সমন্বয়ে প্রায় সব রকম ধাতব পদার্থের ওপর চোখ জুড়ানো শিল্পকর্ম গড়ে তোলা হয়, যা যেকোনো প্রতিষ্ঠানের মানকে এক অনন্য উচ্চতায় নিয়ে যেতে পারে। দেশের সব শ্রেণীর মানুষ যেন এই শিল্প সহজেই ব্যবহার করে নিজের বাসস্থানসহ আশপাশের পরিবেশকে সুন্দর ও মনোগ্রাহী করে তুলতে পারেন সেই লক্ষ্যে এই প্রতিষ্ঠানটি গড়ে তোলা হয়েছে। এ বিষয়ে প্রতিষ্ঠানটির মালিক আলহাজ্ব মো. লোকমান বলেন, আমাদের দেশের মানুষ নিজের রুচি অনুযায়ী ঘর-বাড়ি বা ব্যবসা প্রতিষ্ঠানকে সাজিয়ে তোলেন ঠিকই কিন্তু সেসব শিল্পকর্ম মোটেও টেকসই নয়। কারণ এখানে লোহা, স্টিল, কাঠ বা অন্যান্য যেসব ধাতবের ওপর কাজ করা হয় তা হচ্ছে জোড়াতালির। মূলত ওয়েল্ডিংয়ের মাধ্যমেই শিল্প গড়ে তোলায় সেগুলো ভেঙে যাওয়ার আশঙ্কা বেশি। এ ছাড়া হাতে তৈরি হওয়ায় সেগুলোর ফিনিশিংও ভালো নয়। কিন্তু এখানে কম্পিউটার সফটওয়ারের মাধ্যমে শিল্পকর্ম এঁকে মেশিনে যে ধাতব পদার্থটি রাখা হয় স্বয়ংক্রিয়ভাবে সেই শিল্প নির্মিত হয়ে যায়। তিনি আরো বলেন, যেকোনো বাসাবাড়ি, অভিজাত হোটেল অথবা স্থাপনার সোন্দর্য বৃদ্ধিতে আমাদের এই প্রযুক্তি বাংলাদেশে অদ্বিতীয়। অল্প সময়েই এ শিল্প সবশ্রেণীর মানুষের মধ্যে ব্যাপক সাড়া জাগিয়েছে। দেশে বহু শিল্পকারখানায় এমন কিছু যন্ত্র আছে, যা কোনোভাবে বিকল হলে কেবল এই প্রযুক্তিতে তৈরি করার জন্য আবার বিদেশে পাঠাতে হতো। আর এ কারণে অনেক সময় বেশ কয়েক দিন প্রতিষ্ঠান সম্পূর্ণ বন্ধ রাখতেও হয়েছে। কিন্তু এ কারখানা স্থাপন হওয়ায় সেই সমস্যাও সমাধান হয়েছে। এখন সময় ও অর্থ দুটোই সাশ্রয় হচ্ছে বলে আমি মনে করি।’
×