ঢাকা, বাংলাদেশ   মঙ্গলবার ৩০ এপ্রিল ২০২৪, ১৭ বৈশাখ ১৪৩১

হানাদারের হাতে চার মুক্তিযোদ্ধাকে তুলে দেয় রাজাকার

প্রকাশিত: ০৬:৪৭, ২৪ ডিসেম্বর ২০১৬

হানাদারের হাতে চার মুক্তিযোদ্ধাকে তুলে দেয় রাজাকার

ছাতিয়ান ইউনিয়নের কোমারপুর গ্রামের আবদুল জলিল আকন্দ, চকসোনার গ্রামের আলতাফ হোসেন ম-ল, চাঁপাপুর ইউনিয়নের কাঞ্চনপুর গ্রামের মনসুরুল হক টুলু ও আবদুস ছাত্তার আদমদীঘিতে গেরিলাযুদ্ধ করতে এসে সহযোদ্ধার বেইমানিতে রাজাকারদের হাতে আটক হয়। ছাতিয়ানগ্রাম ইউনিয়নের সে সময়ের চেয়ারম্যান আবদুল মজিদ তালুকদার আদমদীঘি সদর ইউনিয়ন পরিষদের সামনে প্রকাশ্য বিচার বসায়। চেয়ারম্যান নিজে ও তার সহযোগী আসকর সাক্ষী হিসেবে আটকদের ‘মুক্তি ফৌজ’ প্রমাণ করার পর তাদের তুলে দেয় বর্বর হানাদার বাহিনীর হাতে। বীর এই চার মুক্তিযোদ্ধাকে থানা ক্যাম্পে আটক রাখে। এক সপ্তাহ ধরে খেজুর গাছের কাঁটাওয়ালা ডাল ও রাইফেলের বেয়নেট দিয়ে মধ্যযুগীয় কায়দার হানাদার ক্যাম্পের বাইরে প্রকাশ্যে নির্যাতন করা হয়। স্বাধীনতার মাত্র এক মাস আগে ১৯৭১ সালের ১৩ নবেম্বর সকালে উপজেলা সদরের খাড়ির ব্রিজ শ্মশান ঘাটে নিয়ে দিনের বেলা জনসম্মুখে গুলি করে হত্যা করে তারা ওই চার বীর মুক্তিযোদ্ধাকে। এ সময় স্থানীয় রাজাকার শিরোমনি আবদুল মজিদ তালুকদার এবং তার ছেলে আবদুল মোমেন তালুকদার খোকাসহ তাদের অনেক সাঙ্গোপাঙ্গ উপস্থিত থেকে আনন্দ-উল্লাস করে। এই নির্মম দৃশ্য আজও তাড়া করে বেড়ায় প্রত্যক্ষদর্শীদের। এদিকে ঘটনার ৪২ বছর বছর পর ২০১২ সালে সান্তাহার শহরতলীর কায়েতপাড়া গ্রামের মুক্তিযোদ্ধা সুবেদ আলী বাদী হয়ে তার চার সহযোদ্ধা হত্যার দায়ে সে সময়ের রাজাকার কমান্ডার বর্তমানে বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতা আবদুল মোমেন তালুকদাকে আসামি করে আদালতে মামলা দায়ের করেন। এর আগে ১৯৭২ সালে চকসোনার গ্রামের শহীদ মুক্তিযোদ্ধা আলতাব হোসেন ম-লের ভাই আদুল জব্বার ম-ল বাদী হয়ে মামলা দায়ের করেছিলেন। মামলায় আসামি দালাল আব্দুল মজিদ তালুকদার (বর্তমানে মৃত) ও তার তিন ছেলে আব্দুল মতিন, আব্দুল মান্নান ও আব্দুল মমিন তালুকদার খোকার নাম উল্লেখ করেন। এই চার শহীদ মুক্তিযোদ্ধার নামে শ্মশান ঘাটের বধ্যভূমিতে স্মৃতিস্তম্ভ নির্মাণের জন্য মুক্তিযোদ্ধাদের দাবির মুখে ১৯৯৬ সালে উপজেলা পরিষদ থেকে ভিত্তি ফলক তৈরি করা হয়। তার পর কেটে গেল দেড় যুগ। কিন্তু আর কোন কাজ হয়নি। -হারেজুজ্জামান হারেজ সান্তাহার থেকে
×